নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( প্রেস বিজ্ঞপ্তি ) : দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ, দীর্ঘ ২২ বছর লালন পালন, অতি আদরে ভালবাসার চাঁদরে এবং সামাজিক সকল অবক্ষয়ের উর্ধ্বে রেখে, শিক্ষায় দীক্ষায়, আদর্শ মানবতায়, যে পুত্র সন্তানটিকে আদর্শলিপির অ আ ক খ পড়িয়ে তীল তীল করে প্রাথমিক মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ পেড়িয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বি এ অনার্স (৪র্থ বর্ষ) পর্যন্ত, জীবন যাত্রায় এগিয়ে নিয়ে এলো মা পারুল এবং লবন মিলের যৎসামান্য আয়ের হতদরিদ্র বাবা হাবিবুর রহমান। সেই আদরের ধন, উদীয়মান তরুণ, অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ফারুক ক্যান্সার জাতীয় মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে, অসহযোগীতায়, বিনা চিকৎসায় ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছে মৃত্যুর দিকে।
দীর্ঘ ৮ মাস ধরে যারপর নাই চেষ্টা করে স্থানীয় ডাক্তার, খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ্ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ঔষধ-পথ্য সব কিছুর যোগান দিতে বাবার হারভাঙা পরিশ্রমে উপার্জিত আয়, মায়ের ধার দেনা সঞ্চয়, গার্মেন্টস কর্মী বড় বোন রীতার উপার্জন এবং নারায়ণগঞ্জ কলেজে বি এ অনার্স পড়–য়া ছোটবোন রীমার টিউশনির টাকায় ও নির্ঘুম দিন-ও রাতের সেবা-সুশ্রসায় এখনো বেঁচে থাকার জন্য প্রাণপন লড়াই করে চলেছে ফারুক।
যার পুরো নাম ফারুক হোসেন বাপ্পান। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের এই নিদারুন আর্তনাত আল্লাহ্ কবে শুনবেন, কার উসিলায় আর কত কষ্টের পথ অতিক্রম করলে এই মরণ ব্যাধি থেকে বিধাতা মুক্তি দেবেন নাকি সকলের সব প্রচেষ্টাকে মিথ্যে করে দিয়ে মৃত্যুর হাত ধরে অকালে হারিয়ে যাবে ফারুক জীবন নদীর ওপারে, তাও একমাত্র জানেন ঐ সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ ।
বাবার কষ্টার্জিত আয়ে মায়ের হাতের বাসি-পান্তা খেয়ে নিজে টিউশনি করে যে ছেলেটি লেখাপড়া করে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে, আর কিছুদিন মা-অনার্স মাষ্টার্স কমপ্লিট করে বড় একটা চাকরী করে ছোটবোনকে বিয়ে দেব আর বাবাকে এই কষ্টের কাজ থেকে অবসর দেব মা, তুমি দোয়া কর মা, তুমি দোয়া কর, এভাবে সরল আর্তনাদে যে ছেলেটি মাকে সান্তনা দিত, স্বপ্ন দেখাতো সে ছেলেটি যেন অভাবের কাছে হেরে যেতে বসেছে।
ছোটবোন রীমা জানায়, গত ৭ মে ২য় বারের প্রচেষ্টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। রোগীর অবস্থা আশংকাজনক বিধায় অনেক আবেদন নিবেদনের পর হাসপাতালের এক নার্সেও সহায়তায় একজন ওয়ার্ডবয়কে ৩শত টাকা ঘুষ দিয়ে একটা বিছানায় ওঠাতে পেরেছিলাম। অন্যথায় এই মুমুর্ষ রোগীকে নিয়ে যখন ঢাকা মেডিক্যালের বারান্দায় বসেছিলাম তখন কয়েকজন ডাক্তারের কাছে আর্তনাত করেও কোন লাভ হয়নি, কেউ কথা শুনেনি। অত:পর একটা সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে যখন পড়লো তখন আমার ভাইকে নেয়া হলো হাসপাতালের নতুন ভবনের ৩য় তলায় পোষ্ট সি সি ইউতে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগে। সেখানে এসিরুমে আমার ভাইকে বিছানা দিলেও যখন আমি বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষাগুলো করাতে টাকার অভাবে বারবার ব্যার্থ হচ্ছিলাম, তখন একজন ডাক্তার আমাকে রাগ করে বললেন আমরা কি এখানে দানছত্র খুলে বসেছি নাকি, এতই যখন অভাব তবে রিলিজ করে বাড়ি নিয়ে যাওনা কেন? তার এহেন আচরনে দীর্ঘ ১০ দিন পর গত ১৭ মে ভাইকে রিলিজ করে বাড়ি নিয়ে এসেছি।
রীমা বলেন, সেই থেকে ঔষধ নেই পথ্য নেই বিনা চিকিৎসায় আমাদের চোখের সামনে একমাত্র ভাই আমার ধুকে ধুকে মরছে। আমরা এতটাই অসহায়, এতটাই বিপদগ্রস্থ বুক চাপড়াচ্ছি কিন্তু কিছুই করতে পারছিনা। এ পৃথিবীতে কী এমন কেউ নেই যারা আমার ভাইকে বাঁচাতে আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে?
মা-বাবা বোনদের এহেন আর্তনাদ যদি কারো হৃদয় স্পর্শ করতে পারে, সত্যিই যদি এমন হৃদয়বান বিক্তবান কেউ এই সমাজে থেকে থাকে তবে নিশ্চয়ই এই মুমুর্ষ ফারুককে বাঁচাতে এগিয়ে আসবে। এই প্রত্যাশায় এই প্রতিবেদক রইলো অধীর প্রতীক্ষায়। তাছাড়া ভীনদেশী রোহিঙ্গাদেও বাাঁচাতে যারা এগিয়ে এসেছিলেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। এবার ঘরের ছেলেটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা-সাবেক অলিম্পিয়া অফিস, শিউলি বেগমের বাড়ির ভাড়াটিয়া, নবীগঞ্জ, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ। বিকাশ নং- ০১৯১৩১৯৪৫৯৪।