নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের নৈতিক ভিত্তি নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার রাষ্ট্রপরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে। এখন সরকারি কর্মকর্তারাও হিংস্রতার শিকার হচ্ছেন। ৪ঠা সেপ্টেম্বর শুক্রবার দলের সহ–দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার দুষ্কৃতকারীরা দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম এবং তার পিতা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীর ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর আহত করে। এই পৈশাচিক ও কাপুরুষোচিত হামলায় ওয়াহিদা খানম এবং তাঁর পিতা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওয়াহিদা খানমের অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। বর্বরোচিত এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ওয়াহিদা খানমের মতো উপজেলা পর্যায়ের একজন সর্বোচ্চ সরকারি কর্মকর্তার ওপর সন্ত্রাসীদের নৃশংস ও পৈশাচিক হামলার ঘটনায় এটি আবারও প্রমাণিত হলো যে, এই সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট পরিচালনায় বর্তমান সরকারের কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। এরা সন্ত্রাসকে আশ্রয় করেই নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চাচ্ছে। বিরোধী দল ও মতকে দমন করে যাচ্ছে রক্তাক্ত কায়দায়। এখন সরকারি কর্মকর্তারাও এদের হিংস্ররতার শিকার হচ্ছেন। সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহাকে হত্যাসহ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা যেভাবে সংঘটিত করছে তাতে দুষ্কৃতকারীরা উৎসাহ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীরা যেই হোক ইতোপূর্বে যদি তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হতো তাহলে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্রমণের শিকার হতেন না। দেশে এখন আইন–কানুনের কোনো বালাই নেই। হত্যা, খুন, জখম, টাকা পাচার, মানব পাচার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান লোপাট, টেন্ডারবাজি ও জবরদস্তি কায়েমের মতো অনাচার আড়াল করতেই দেশব্যাপী দুষ্কৃতকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে রক্তাক্ত কর্মসূচির ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এরই সর্বশেষ শিকার হলেন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম।
ফখরুলের ভাষ্য, দেশে আইনের শাসনের বিলুপ্তি ঘটিয়ে, গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে নাৎসি কায়দায় দেশ পরিচালনার জন্যই এখন সন্ত্রাসবাদের দোর্দন্ড প্রতাপ চলছে। দুর্নীতি ও রক্তাক্ত সন্ত্রাসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত এই সরকার সারাদেশে অশান্তির বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। যে দেশে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্ত্রাসীদের দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে, সেদেশে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা কত অনিশ্চিত তা ব্যাখা করে বলার কোনো অবকাশ নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম এবং তার পিতার ওপর নির্মম হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমার জানা নেই।
ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়ে ওয়াহিদা খানমকে গুরুতর আহত করার ঘটনা নি:সন্দেহে একটি রাষ্ট্রের জন্য অশুভ সঙ্কেত বলে মনে করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। তিনি দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান এবং ওয়াহিদা খানমের পরিবারবর্গ ও নিকটজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি গুরুতর আহত ওয়াহিদা খানম ও তার পিতা ওমর আলীর আশু সুস্থতা কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।