একত্রে বসলেই উন্নয়নে বঞ্চিত থাকবেনা নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের মাত্র কয়েকজন মানুষ যদি আমরা একত্রে বসতে পারি তাহলে নারায়ণগঞ্জ আর উন্নয়ন বঞ্চিত থাকবে না। কিন্তু দেখা গেছে কোন না কোন কারনে আমরা একত্রে বেশি দিন এক সাথে থাকতে পারি না। কিছু মানুষের কাছে ব্যাপারটা এমন যেন নারায়ণগঞ্জে কিছু না কিছু একটা ঘটিয়ে পরস্পরের মাঝে একটা দুরত্ব সৃষ্টি করে রাখতে হবে। আজকে এখানে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা উপস্থিত রয়েছে। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকে এখানে হয়তো দাওয়াত করা হলে সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি উপস্থিত থাকতেন।  কিন্তু উনাকে দাওয়াত পাঠানো হয়েছে কিনা আমি জানি না। সিটি করপোরেশনের মেয়রের উপস্থিত থাকার কথাটা খোকন সাহা নিজেও উল্লেখ করেছেন। শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় শীতলক্ষ্যা কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দদের সাথে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।

খোকন সাহা হয়তো উপলদ্ধি করতে পেরেছে যে আমি আর মেয়র এক সাথে বসলে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। হয়তো অনেকেই আমার উপর রাগ করতে পারেন। কিন্তু আমি বিগত কয়েক বছর ধরে সবাইকে এক টেবিলে বসার কথা বলে আসছি। কিন্তু যখন আমি সেটা করতে পারি নাই তখন ( যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো ) গানের মত আমি একাই সিটি করপোরেশনের বাজেট অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছি। সেখানে সিটি করপোরেশনের মেয়র আমার কাছে বড় ভাইয়ের দাবী নিয়ে নিতাইগঞ্জ থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডের যানজট দূর করার সহযোগীতা চেয়ে ছিলেন। আমি অত্র এলাকার ব্যবসায়ী ও মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সাথে আলোচনা করেছি তারা নিজ উদ্যোগে নিতাইগঞ্জ থেকে যানজট দূর করেছেন। এর জন্য আমি মেয়রকে ধন্যবাদ জানাই উনি আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন। এভাবে যদি আমরা প্রতিটি উন্নয়ন কাজে একে অপরকে সহযোগীতা করি তাহলে দেখা যাবে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন আর কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। তাই হিন্দু ধর্মের এই সর্ব বৃহৎ উৎসবে সকলের প্রতি আমার আহবান থাকবে আসুন আমরা নারায়ণগঞ্জে যে কয়জন রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি রয়েছি তারা সকলে এক টেবিলে বসে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের চাকাকে সচল করি।

তিনি আরো বলেন, অনেকেই নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন। তারা বলছেন নারায়ণগঞ্জে ৫টি আসনেই নৌকার প্রার্থী চান। তাদের মত আমিও বলবো আমিও চাই নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই নৌকার প্রার্থী চাই কারণ এই নারায়ণগঞ্জের বাইতুল আমান থেকেই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্ম হয়েছে। আর আমি নিজেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকেই অনুসরণ করি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনকে জাতীয় পার্টির জন্য দিয়েছেন। তাই আমাকেও উনার নিদের্শনা অনুযায়ী লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করতে হয়েছে। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর বন্দরের শান্তিরচরে নীট পল্লীর জন্য আবেদন করে ছিলাম। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২১ দিনের মাথায় দেড় হাজার একর এলাকা নিয়ে নীটপল্লী নির্মানের অনুমোদন দিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু গত ২ বছরে মাত্র ৩৫ একর জমি বেইজাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। নবীগঞ্জ ঘাট দিয়ে আরো একটি পূর্ণাঙ্গ সেতুর জন্য ডিও দিয়েছি। লাঙ্গলবন্দ তীর্থস্থানের উন্নয়নে ১২০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে।

খানপুর হাসপাতালের জন্য ৭০ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। চাষাঢ়ায় ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে উন্নত মানের একটি শ্রমিক হাসপাতাল যা কিনা বাংলাদেশে এটিই প্রথম। কিন্তু কোন এক অজানা কারনে এই উন্নয়ন কাজ গুলো গত ২ বছর ধরে থমকে রয়েছে। আপনারা নারায়ণগঞ্জের মানুষ এবং আওয়ামীলীগ সহ অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দ যদি আমাকে সহযোগীতা করেন আমাকে সাথে নিয়ে গিয়ে সরকারের কাজ থেকে উন্নয়ন গুলো আদায় করতে আনতেন তাহলে আমার পরবর্তীতে যিনিই এই এলাকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসবেন তিনি একটি সভ্য, উন্নত এবং শান্তিপূর্ন নারায়ণগঞ্জ পেতেন এবং তাকে আমার মত পকেট থেকে টাকা খরচ করে এলাকার মানুষের সমস্যার সমাধান করতে হতো না।

সবশেষে আমি সকলের কাছে আশা রাখবো আজকের পর থেকে নারায়ণগঞ্জে আমাদের মাঝে আর কোন ভেদাভেদ থাকবে না। কোন ঝগড়া কলহ থাকবে না। আমরা সকল জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা একত্রে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের স্বার্থে একে অপরকে সহযোগীতার মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আমার কোন ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে আমি আপনাদের সকলের কাছে জোড় হাতে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি শংকর কুমার সাহার সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, এফবিসিসিআই এর পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বিকেএমইএ এর সহ সভাপতি(অর্থ) জিএম ফারুক, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি চন্দন শীল, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরজ কুমার সাহা, হিন্দু কল্যান ট্রাস্টের ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকারের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সুজন সাহা, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার সাহা, মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য বাদল রায়, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, শফিউদ্দিন প্রধান, শারমিন হাবিব বিন্নী, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

add-content

আরও খবর

পঠিত