নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঘরমুখো মানুষকে স্ব:স্তি দিতে ঈদের আগের চারদিন এবং পরের চারদিন ২৪ ঘন্টা সিএনজি স্টেশনগুলো খোলা থাকবে। ঈদের আগের তিনদিন মহাসড়কে সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। আগামী ৮ জুনের মধ্যে সড়ক মহাসড়ক মেরামতের ব্যাপারে কোন ধরনের উদাসীনতা সহ্য করা হবে না।
মঙ্গলবার ( ২২ মে) সকালে মেঘনা সেতুর পূর্বপাড়ে গজারিয়া এলাকায় ঢাকা-চট্রগ্রাম সহাসড়কের যানজট নিরসনে করনীয় নির্ধারণ শীর্ষক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় নারায়ণগঞ্জের চার সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, নজরুল ইসলাম বাবু, লিয়াকত হোসেন খোকা ও কুমিল্লার দাউদকান্দির সংসদ সদস্য সুবেদ আলী ভূঁইয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম এবং নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্রগামের পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের কোথাও ট্যাক্সের পারসেন্টেনস কমিশন খায় না। মহাসড়কে কোন অন্যায় বা চাঁদাবাজি সহ্য করা হবে না। মুখের কথা মুখে থাকবে, বাস্তবে কাজ হবেনা, এমন নির্দেশনা আমি দিতে চাইনা। ইঞ্জিনিয়ারিসহ সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। সড়ক মেরামতের ক্ষেত্রে বৃষ্টি যেন কোন অজুহাত না হয়ে দাঁড়ায়।
এ সময় সেতুমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পদ্মা সেতু ও রাস্তা নির্মাণ কাজ নিয়ে কেউ কোন দুনীর্তির অভিযোগ তুলেতে পারেনি। কিন্তু ছোট ছোট কাজের মানের যে অবস্থা এক পশলা বৃষ্টি হলেই রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে যাবে এমন কাজ করার দরকার কি।
ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়ক আট লেনে উন্নত হয়েছে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে কাচঁপুর পর্যন্ত এইট লেন । কিন্তু অর্ধেক রাস্তা দখল করে আছে। এটা দেখার কি কোন অথোরিটি নেই। যাদের দায়িত্ব তারা এটা দেখবেন। আজকের পর থেকে এটা দেখতে চাইনা। এইট লেনের রাস্তা ও ফোর লেনের রাস্তা নির্মাণ হয়েছে বেশীদিন হয়নি। কিন্তু আসার পথে দেখলাম ছেঁড়া কাথা।
তিনি আরো বলেন, আগামী ডিসেম্বরে কথা থাকলেও ছয় মাস আগেই তৃতীয় শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গোমতি সেতুর কাজ শেষ হবে। এই সেতুগুলো হয়ে গেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আর কোন যানজট থাকবে না, কোন সমস্যা হবে না। নির্ধারিত সময়ের আগেই সেতু তিনটির কাজ হয়ে গেলে সরকারের সাড়ে ৭শত কোটি টাকা সেভ হবে।
মন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, এমপি মন্ত্রীসহ কোন ভিআইপির গাড়ি রং সাইড দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। যদি আসে তাহলে মুখের দিকে না তাকিয়ে জারিমানা করবেন, সেটা আমার গাড়ি হলে আমারটাকেও করবেন।
তিনি বলেন, মহাসড়কে ছোট ছোট যানবাহনের কারনে দূর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মোটর সাইকেলে তিনজন উঠে, কারো মাথায় হেলমেট থাকেনা, ইজিবাইক ধাক্কা লাগলে সব যাত্রী মরে যায়। এজন্য বাংলাদেশে মৃত্যুর হার এতো বেশী। সড়ক মহাসড়কের পাশে যে সংস্থা ময়লা আর্বজনা ডাম্পিং করবে, ময়লা আবর্জনা ট্রাকে করে সেই অথরটির অফিসের সামনে রেখে আসার নির্দেশ দেন তিনি।
বক্তব্য শেষে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি, পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা পরিবহন মালিক শ্রমিক নের্তৃবৃন্দ নিজ এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরলে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্টদের মোঠোফোনে কল দিয়ে দ্রুত সমাধান করতে তাদের নির্দেশ দেন।
সভা শেষে ঢাকায় ফেরার পথে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরে নেমে চলমান যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে যানজট পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। কাঁচপুরের কয়েকটি পয়েন্ট ঘুরে তিনি ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনাও প্রদান করেন।