আল্লাহগো আল্লাহগো বলে কাঁদলেও থামেনি মেয়র

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রির্পোটার  ) :  সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র সাদেকুর  রহমান  অমানবিক ভাবে জনসম্মুখে নির্যাতনের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

মারধরের সময় ওই চালক বার বার ক্ষমা চেয়ে আহাজারি করে মেয়রের দুই পা ধরে বসে থেকে কয়েক বার মাফ চাইলেও মন গলেনি মেয়রের । উল্টো আরো চটে যান তিনি। পরে আরো কয়েক দফা তাকে হাতের লাঠি দিয়ে নির্মম ভাবে মারধর করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। একই সাথে বইছে নিন্দার ঝড়।  ১৫ ডিসেম্বর শনিবার বিকালে সোনারগাঁ উপজেলার সোনারগাঁও জাদুঘরের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে ।

এদিকে নসিমন চালককে মারধরের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন মেয়র সাদেকুর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমসহ সবখানে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে  পড়ায় মেয়রের শাস্তি দাবি করছেন অনেকে।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, হাউ মাউ করে কাঁদছে এক শিশু ও এক কিশোর। তবুও নাছোরবান্দা বদমেজাজী মেয়র সাদেকুর রহমান অমানবিক ভাবে জনসম্মুখে নির্যাতন করে যাচ্ছেন। যা বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান কিশোরটিকে লাঠি দিয়ে মারধর করছেন আর বলছেন, এমনে চালায় গাড়ি ?

কিশোরটি একটি অটোরিক্সা চালক। সে কোন চোর ছিনতাইকারীও ছিল না। সোনারগাঁও পৌরসভার লোক ও কারুশিল্প যাদুঘরের সামনে এই কিশোরকে মারধর করছেন মেয়র। কিশোরটির ছোট ভাই হাউ মাউ করে কাঁদলেও মেয়র সাদেকুর রহমান তার মারধর চালিয়ে যায়। আল্লাহগো আল্লাহগো বলে কাঁদলেও থামেনি মেয়র। এ এক বর্বরতাকে হার মানিয়েছে তার এই অমানবিক নির্যাতন। মেয়র কখনও লাথি মেরেছেন, কখনও হাতে থাকা লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। আর বলছেন, গাড়ি এভাবে চালায় ? কিন্তু তিনি একবারও ভাবেননি দুটি শিশু এ বয়সে কেন অটোরিক্সা চালক হলো?

মেয়র হিসেবে এই দুটি শিশুর প্রতিও মেয়রের দায়িত্ব ছিল। তারা তো এ বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা। চোর ছিনতাইকারী পকেটমার তো হয়নি। ওই সময় আশপাশের লোকজন তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করলেও তিনি থামেননি। কিশোরটি হাউ মাউ করে কেঁদে কেঁদে মেয়র সাদেকুর রহমানের পায়ে ধরছিল কিন্তু তবুও মেয়র মারধর করছেন। মেয়রের সঙ্গে শিশুটিকে মারতে দেখা গেল কন্ঠ শিল্প রিপনকেও। অথচ রিপন একজন সাংস্কৃতিকমনা ব্যক্তি। শিশুটি বাঁচানোর চেষ্টা না করে উল্টো মেয়রের নির্যাতনের দিকে ঠেলে দিতেও দেখা গেল ভিডিওতে তাকেও। এভাবেই সমাজে গরীব মার খায়। অসহায়ের অসহায়ত্বও মানুষের মনে নাড়া দেয়না। এমন সব মন্তব্য ফেসবুকে এই ভিডিওতে ওঠে আসছে।

তবে ওই দুই শিশু ও কিশোরের খোঁজ দিতে পারেননি কেউ। তবে কিশোরটি একটি অটো চালক। তার সঙ্গে বসা ছিল তারই ছোট ভাই একজন শিশু। এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এমন বর্বরতার বিচার দাবিতেও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে।

জানা গেছে, সোনারগাঁও আমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১৮ বছর তিনি চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তারপর তিনি টানা দুই মেয়াদে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হলেও তিনি বদমেজাজী একজন মেয়র হিসেবেই পরিচিত। তিনি আইন কানুন তোয়াক্কা করেন না। ওই সময় থেকেই তিনি বিচার শালিশির নামে মানুষের উপর নির্যাতন করে আসছিলেন। তবে বয়সের ভারে নুব্জ হলেও তেজ কমেনি এই মেয়রের। নিজেই এখন রাস্তা ঘাটে অসহায় শিশু কিশোরদের মারধর করতে শুরু করে দিলেন এমনটাই মন্তব্য আসছে ফেসবুকে এই ভিডিওতে

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মহাজোটের প্রার্থী লিয়াকত  হোসেন  খোকার পক্ষে গণসংযোগ করে নিজ গাড়িতে বাসায় ফিরছিলেন সাদেকুর রহমান। সোনারগাঁ জাদুঘরের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা বাঁশ বোঝাই নসিমনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মেয়রের গাড়ি সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদেকুর রহমান গাড়ি থেকে নেমে নিজের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ওই যুবককে মারতে শুরু করেন। ওই যুবক অপরাধ স্বীকার করে মেয়রের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও রক্ষা পাননি। পরবর্তীতে মেয়রের সমর্থকেরাও ওই যুবকে মারধর করে গাড়িসহ তাকে আটক করে রাখে।

সাদেকুর রহমান বলেন, আমি আমার গাড়ি খুব যত্ন করে রাখি। কিন্তু ওই ছেলে দ্রুতগতিতে এসে বাঁশ বোঝাই নসিমন লাগিয়ে আমার গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে ফেলে। তাই ক্ষোভে হাতের লাঠি দিয়ে আঘাত করি। পরে স্থানীয়রা ওই ছেলেকে গাড়িসহ আটক করে রাখে। রাগে ওই ছেলেকে মারধর করেছি। কিন্তু সেটা আমি ভুল করেছি। তাই পরে ক্ষমা চেয়ে ওই ছেলেকে ছেড়ে দেই।

add-content

আরও খবর

পঠিত