নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : শহরের মাসদাইর আদর্শ স্কুলে সদ্য বিদায়ী এসএসসি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংসাপত্র দেয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ অর্থ আদায়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা বা প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তবুও নিজেদের স্বার্থ আদায়ে হাতিয়ে নিচ্ছে সদ্য বিদায়ী প্রতিটি এসএসসি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নুন্যতম পাঁচশত টাকা। ২৫জুন সোমবার দুপুর ১২ টায় আদর্শ স্কুলের এক শিক্ষার্থী ফলাফলের মার্কশীট ও প্রশংসাপত্র নিতে গেলে আদর্শ স্কুলের অফিস ষ্টাফ এ বাড়তি অর্থ আদায় করেন। তারা হলেন আরিফ ও নূরুল ইসলাম ।
এসময় স্কুলের অফিস ষ্টাফ আরিফ শিক্ষার্থীকে বলেন, তুমি ফটোকপি করা এক কপি মার্কশীট দিবা। সেখানে তোমার বর্তমান ঠিকানা মার্কশীটের নিচে লিখে তার সাথে ৫ শত টাকা দিয়ে যাও। এরপর কাল আইসা প্রশংসাপত্র নিয়ে যাইও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আদর্শ স্কুলের সদ্য বিদায়ী এসএসসি শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানায়, ২০১৮ সালে আমাদের এসএসসি টেষ্ট পরীক্ষা ও ফরম ফিলাপের জন্য যেমন বাড়তি টাকা রাখা হয়েছিল, ঠিক তেমনিভাবে আমাদের এসএসসি ফলাফলের মার্কশিট ও প্রশংসাপত্র নিতে এসেও বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। প্রশংসাপত্রের জন্য আমাকে প্রদান করতে হয়েছে ৫ শত টাকা। আমাদের বন্ধুরাও পাশ^বর্তী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশংসাপত্রের জন্য টাকা দিয়েছে। তারা বলেছে তাদের কাছে রাখা হচ্ছে ১ শত থেকে ৩ শত টাকা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ আদর্শ স্কুলে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা।
এ ব্যপারে আদর্শ স্কুলের সদ্য বিদায়ী এসএসসি শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অসহায়। বিভিন্ন সময়ই নানা কারণে টাকা দিয়ে থাকি। যদিও বেতনের সাথে বিভিন্ন উন্নয়ন ফি রয়েছে কিন্তু এর কতটা আমাদের সন্তানরা ভোগ করতে পারে, তা সকলেরই জানা আছে। সারাবছর বেতন, ভর্তি ফি, রেজিস্টার ফি দিয়ে এমনিতেই আমাদের মত মধ্যবৃত্তদের কষ্টে জীবন যাপন করতে হয়। এরমধ্যে পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে শেষ মুহুর্তে তাদের এ বাড়তি টাকা দেয়াটা আমাদের জন্য একটা চাপ প্রয়োগ করার মতই। কিন্তু সন্তানদের দিকে তাকিয়ে নিরুপায় হয়ে আমরা দিচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহা: আজিজুর রহমান বলেন, এগুলোর জন্য টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। অন্যান্য স্কুল নেয় আমরা নেই না।
এছাড়াও নানা অভিযোগে কয়েকবারই সমালোচিত হয়েছে এ স্কুলটি। জানা গেছে, কয়েক বছর ধরেই শহরের মাসদাইর আদর্শ স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধির নির্বাচন হয় না। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ১৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি শাহজালাল প্রধান ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগপন্থী পরিবহন ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন এ দায়িত্ব পালন করছেন। স্কুলটির অধ্যক্ষ নিয়োগ না হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে কয়েক বছর ধরে আছেন সহকারী শিক্ষক মুহা: আজিজুর রহমান। এরআগে চারদলীয় জোটের আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াওয়ের সময়ে নাশকতার অভিযোগে তিনি গ্রেফতারও হয়েছিলেন।