নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : ২০০১ সালের ১৬ জুন, বিকট শব্দে কেপে উঠে নগরী। রক্তাক্ত হয় চাষাঢ়ায় অবস্থিত আওয়ামীলীগের দলীয় কার্য্যালয়। চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায় অফিসে থাকা আসবাবপত্র ও নেতকর্মীদের স্বপ্ন। মুহুর্তেই লাশের মিছিল ও স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে যায় শহরের আকাশ-বাতাস। সেই ঘটনার ২২ বছরেও থামেনি নিহত স্বজনদের আহাজারী। কোথায় আছে, কেমন আছে, অনেকেই নেন না তাদের কোন খোঁজ খবরও।
ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষে পঙ্গুত্ব বরণ করা আহত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি চন্দন শীল এবং আহত অপর আওয়ামী লীগ নেতা রতন দাস বাকিদের খোঁজ খবর নিলেও নিষ্ক্রিয় জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের নেতারা। এতে করে চাপা ক্ষোভে তুষ্ট শক্তিশালী এ বোমা হামলায় নিহতের পরিবার ও আহতরা।
এ বিষয়ে কথা হলে চন্দন শীল জানায়, বিভিন্ন সময় আন্দোলন করতে দেখা যায়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সমালোচনায় বিষাদাগার করতে দেখা যায়। তবে ১৬ জুন নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় না। আমরাও সকল হত্যার বিচার চাই। সুযোগ পেলেই বোমা হামলায় জড়িতদের বিচার দাবী করি। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে বোমা হামলা হলো। তারা কোন কথা বলে না। তিনি সিটি মেয়র আবার আওয়ামীলীগ দলের পদেই আছে। একই ভাবে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার ভাই, তিনিও এ বিচার নিয়ে কোন কথা বলেন না। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কোথায় তিনি। কখনও তো কোন বিবৃতি কিংবা বিচার চাইতে দেখলাম না। তিনি কিভাবে নিষ্ক্রিয় থাকে। আসলে মোস্তাকরা ছিল, থাকবেই। এতে আমরা হতাশ হই না। কষ্ট পাইনা। তবে ক্ষুব্দ হই।
এ প্রসঙ্গে দু পা হারানো রতন দাস জানায়, এটাই বড় দু:খের বিষয়। এতো বড় নৃশংস বোমা হামলার পরে দলীয় ভাবে কেউই কোন শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন না। ঘটনা টা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে হলো। অথচ দলের কোন নেতাই কথা বলেন না। বিচারের দাবীতে তাদের পাওয়া যায়না। শুধুমাত্র নিহত ও আহত পরিবারের স্বজনরা স্মরণ রাখে। প্রতিকৃতিতে এসে শ্রদ্ধা জানায়। সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জোলন করে। ১৬ জুন দিনটি আসলে এটুকুই করা হয়।
এ বিষয়ে কথা হলে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই জানান, আমাদের কোন কর্মসূচী নেই। স্বজনরা আসবে। তবে কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে একটা সিদ্ধান্ত নেবো। এরপর আমরা কিছু করার চেষ্টা করবো। আর সরকারের ক্ষতিগ্রস্থদের একটা কিছু করা উচিৎ। যদিও এরআগে সরকার নজর দিয়েছে। এখন বিচারকার্য্যটা শেষ হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে কথা হলে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, চন্দন শীল মহানগর কমিটির সহ সভাপতি। তিনি তো দায়িত্ব পালন করবেন। তাছাড়া তিনি তো একজন ক্ষতিগ্রস্থ। তিনি তো আর আওয়ামীলীগের বাহিরে না। আমি কাল পরশু কর্মসূচী নিবো। মহানগর আওয়ামীলীগও কর্মসূচী করবে।