নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আইভীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কা দিবেন। মার্কা যিনি নিয়ে আসতে পারেন আমরা তাকে সমর্থন দিবো আগেও দিয়েছি। খামাখা সত্য মিথ্যা কথা বলে ভেজাল লাগানোর কোন দরকার নাই। এবার মুখটা বন্ধ রাখেন। আল্লাহ যদি আপনার কপালে রাখেন আপনি অবশ্যই আবারো মেয়র হতে পারবেন। আপনি বলেছেন কখনো সেলিম ভাইয়ের কাছে কখনো শামীম ভাইয়ের কাছে যান। আপনাকে ধন্যবাদ, এটা বুঝতে পারার জন্য। বুঝতে যখন পেরেছেন তাহলে চামচাদের পাল্লায় আর পড়বেন না। আপনি যে দল করেন সেই দলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে আপনি আগামীতে নির্বাচন করেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মানুষ যে কষ্টে আছে সেটার সমাধান করেন।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় বন্দর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ এর আয়োজনে এসময় ২০০ পাউন্ডের কেক কেটে ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। এসময় এমপি সেলিম ওসমান সহ উপস্থিত অতিথিবৃন্দরা কেক কেটে স্কুলের শিক্ষার্থীদের মুখে কেক তুলে দেন। এছাড়াও এদিন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ শাহেন শাহ কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান এর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।
সেলিম ওসমান বলেন, অনেক বড় বড় নেত্রীরা এখন বক্তব্য দেন। আমার কাছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এগুলো কোন বিষয় না, আমি জনপ্রতিনিধি। আমার কথা হচ্ছে আপনি এতদিন কেন এই কথা ধরলেন না? আমি তো আগে থেকেই বলেছি আমার কথা এতোদিন পর ফলো করলেন কেন? আমার কাছে কোন দল বড় ছোট নাই। এই কথা বন্দরে সাজে, নারায়ণগঞ্জে সাজে না। এটা উপজেলায় সাজে, সিটি করপোরেশনে সাজে না। বন্দরে যেসব মানুষ আসে তাদের কেউ বাইরে থেকে আসে না। আর নারায়ণগঞ্জে যদি কোন সভা করা লাগে তাহলে নারায়ণগঞ্জের লোক লাগে না, দুই একটা গার্মেন্টসে বলে দিলেই তারা কয়েকশ লোক ম্যানেজ করে ফেলে। ওইখানে কোন দলই যায়না।
শেখ হাসিনা সম্পর্কে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, উনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেও আমার কাছে উনি আপা ছিলেন আপাই রয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় ছেলে শেখ জামালের সাথে আমি পড়ালেখা করতাম। আর আমার বড় বোন পড়তো শেখ রেহেনার সাথে। রাজনৈতিক সম্পর্কের বাইরে এই পড়লেখার সূত্র ধরেও ওই পরিবারের আমাদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। তখন থেকেই আমি উনাকে আপা বলে সম্বোধন করতাম। এখনও আপাই বলি।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা যার ইচ্ছা সেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কেউ বিশৃঙ্খলা করবেন না। কেউ অপচয় করবেন না। জনগন যাকে ভোট দিবেন তিনি নির্বাচিত হবেন। কিন্তু আপনারা যাকেই ভোট দিবেন একবার ভাববেন বিপদের সময় কে পাশে ছিল আর কে ঘরে বসে ছিল। বিপদে যে ঘরে বসে ছিল তাকে যদি নির্বাচিত করে আনেন তাহলে ভবিষ্যতেও বিপদে তাদেরকে পাশে পাবেন না। আর যারা নির্বাচন করতে চান। তারা নির্বাচনে যে পরিমান অর্থ খরচ করবেন যদি জনগনের সেবার মানসিকতা থাকে তাহলে সেই পরিমান অর্থ দিয়ে এলাকার অনেক অসহায় পরিবারকে পূর্নবাসন করে দিতে পারবেন। যদি একটি ইউনিয়নে একটি দল থেকে ৪ জন প্রার্থী থাকেন তাহলে আপনারা নিজেরা বসে আলোচনা করে ঠিক করে নিবেন কে নির্বাচন করবেন।
বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কুদরতে এ খোদা বলেন, ৭৫ বছর আগে আজকের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টঙ্গীপাড়া গ্রামে শুধুমাত্র শেখ হাসিনা জন্ম গ্রহণ করেননি। সেই দিন বাংলাদেশের ভবিষ্যত জন্ম নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছে বাংলাদেশের ১৮কোটি মানুষের অনুপ্রেরণার বাতিঘর।
উপজেলার চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান ছালিমা ইসলাম শান্তা, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা, মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আফজাল হোসেন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।