নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সুসংহত। তাদের দায়িত্ব জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া। বাংলাদেশে আর কোনো দিন আমরা তাণ্ডব করতে দেব না। পঁচিশ বছর পরে এখানে আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। নেতা না থাকলে এত জনসমাগম কীভাবে হয়। তরুণরা যেভাবে এখানে এসেছে তারা আমাকে উজ্জীবিত করেছে। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন এটা তাদের শেষ লড়াই, আমরা শেষ লড়াই করেছি ১৯৭১ সালে। এ দেশে যারা মামুনুল হকদের জায়গা করে দিয়েছে সেই মামুনুল হকদের আপনারা শিক্ষা দিয়েছেন। ছোটখাটো ভুল থাকলেও আওয়ামী লীগ কর্মীদের দল। বঙ্গবন্ধু বলতেন আওয়ামী লীগের খুঁটি তৃণমূলের কর্মীরা। পঁচিশ বছর কমিটি না থাকার পরেও আপনারা বার বার এমপি উপহার দিয়েছেন।
পাঁচ বছর দেশ চালিয়ে আমরা যখন সংগ্রাম করছি। বাস পুড়িয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল তারা। এই হলো বিএনপি। অসভ্য বর্বর, নৃশংস। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে মানুষ ছিল নিরুপায়। আমরা তখন বলেছিলাম বিএনপি নিজের কবর নিজে খুঁড়ছে। আমরা খাদের কিনারে, তোমরা খাদে হাবুডুবু খাচ্ছো। নাকটা আছে সেটাও পানির নিচে গিয়ে ডুবে মরবা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শেই রাজনীতি করতে হবে। আওয়ামী লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে নির্বাচিত সরকার। এ সরকারকে কেউ সরাতে পারবে না।
বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করুন। এছাড়া, ক্ষমতায় আসার দ্বিতীয় কোন পথ খোলা নেই।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০৮ সালে বিপুল বিজয় নিয়ে সরকার গঠন করি। সেদিন জাতির কাছে বলেছিলাম দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করব। আপনাদের নিশ্চই মনে আছে বিএনপির আমলে সার চাইতে যাওয়ায় সার না দিয়ে বুলেট দিয়েছে। সেই জবাব আপনারা দিয়েছেন ভোটের মাধ্যমে। জননেত্রী সারের দাম কমিয়েছেন। গত চৌদ্দ বছরে আমরা এক টাকা সারের দাম বাড়াইনি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষক দরদী। তার রাজনৈতিক জীবন জুড়ে ছিল বাংলার কৃষক ও কৃষির উন্নতি। পৃথিবীর কোথাও ১৬ টাকায় ডিএফই সার পাবেন না। আজ প্রতি কেজি ইউরিয়ায় ৬০ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি। প্রতিবছর সাত আট হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেই। নেত্রী কৃষকদের কথা ভেবে সারের দাম এক টাকাও বাড়াননি।
আজ টাঙ্গাইলে যে ফোরলেন রাস্তা, পদ্মা সেতু। দেখলে আত্মা জুড়িয়ে যায়। এটা বাংলাদেশ না টোকিও সিটি। পৃথিবীর তিনজন রাষ্ট্রপ্রধান সবচেয়ে সৎ। সেখানে দুই নম্বরে শেখ হাসিনা। এই দলে আমি, মৃণাল কান্তি, মির্জা আজমসহ আমরা কেউই কোনো ফ্যাক্টর না।এ দলের একমাত্র ফ্যাক্টর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি নেত্রী হাল ধরেছে। আগামী নির্বাচনে আমরা আবারও সরকার গঠন করবো।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই দলের খুঁটি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নেতৃত্ব নিয়ে কোন কোন্দল থাকলে তা ভুলে যেতে হবে। দলের আদর্শই আমাদের কাছে সবচেয়ে বড়। আমাদের শক্তি হলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, ত্যাগ ও সাহস। আর দলের নেতৃত্ব জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে।এই দুটিকে আঁকড়ে ধরে আমাদের সকল নেতাকর্মীকে কাজ করতে হবে। তাহলে কোন শক্তিই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে হারাতে পারবে না। আবার শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসবে, ইনশাল্লাহ। এ সময় আন্দোলন-সংগ্রামের জন্যও নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, যে কোন পরিস্থিতিতে আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হোন। বিএনপি-জামায়াত যদি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাহলে রাজপথে থেকে আমরা তা মোকাবেলা করব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও আমরা সহযোগিতা করব। এখন পর্যন্ত কোন লড়াইয়ে বিএনপি জিততে পারে নাই, ভবিষ্যতেও আর পারবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ লড়াইয়ে কখনও হারে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও হারে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নবিউল্লাহ হিরু, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল ক্রান্তি দাস, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার হাসনাত, সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত শহিদ মো. বাদল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু প্রমুখ।