অন্যের চরিত্রের বিবরণে নিজের চরিত্রে বেসামাল মালা !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যমে প্রচারিত বেশ কয়েকটি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অডিও, অশালীন মন্তব্য ও উক্তিতে টক অব দ্যা টাউনে সমালোচিত হলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা মালা। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের দু:সময়ের কান্ডারী ওসমান পরিবারকে ছোট করার লক্ষে নিজেকে হাইলাইটস করতে গিয়ে নিজের দেয়া বিবৃতিতে এবার ফেসে গেলেন তিনি। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুব মহিলা লীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের পরোক্ষ বিরোধ তৈরি হয়। যদিও মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের দাবী, শামীম ওসমানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন বিরোধীতা নেই। এটা মিডিয়ার সৃষ্টি। আর সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার দাবী, শামীম ওসমানের সাথে যা হচ্ছে দ্বন্দ্ব নয় তা রাজনীতি।

কিন্তু অনেকটা লাঘামহীনভাবেই পিছু নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা মালা। আর যার জন্যেই নিজের চরিত্রে বেসামাল মালা অন্যের চরিত্রের বিবরণে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, আনোয়ার হোসেন ভাই ও খোকন দাদা এখন কি করেন আমার জানা নেই। ওরা (লিন্ডা-সন্ধ্যা) দেখতে ওদের (সাদিয়া আফরিন বাবলি ও সুইটি ইয়াসমিন) মত চকচকে না হতে পারে। কিন্তু হঠাৎ করেই যাদের গেটআপ ভাল তাদের দলে রাখবো। অন্যদের পিছিয়ে রাখবো, ফেলে দেব, ওদের চরিত্র খারাপ বলবো। ওদের চরিত্র খারাপ বলা হয়। প্রমান করা হোক ওদের চরিত্র খারাপ। ওর স্বামী ছিল, মারা গেছে। সন্ধ্যার দুটি বাচ্চা রয়েছে। ওরা ডেভিডের লোক ছিল শুনতে হবে। ওরা নিজেদের পকেটের পয়সা খরচ করে রাজনীতি করছে। ওরা সবসময়েই শামীম ভাইয়ের রাজনীতি করতো। তারপরও শামীম ভাইয়ের মনের মত না হলেই, সে ছেলে হলে রাজাকার, আর মেয়ে হলে চরিত্র খারাপ হয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জে অনেক রাজাকারের ছেলে নেতা হয়ে গেছে। লিন্ডা এবং সন্ধ্যার পাশে আমি সবসময়েই থাকবো।

আর শেষ র্পযন্ত গণমাধ্যমে নিজের দেয়া বিবৃতিতে নিজের চরিত্রের প্রমান দিলেন ঘষেটি বেগম খ্যাত মাহমুদা মালা। প্রায় বেশ কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় শিরোনাম হয় যেখানে তিনি বলেন, ( শামীম ভাইয়ের মনের মত না হলেই রাজাকারের ছেলে, আর মেয়ে হলে চরিত্র খারাপ : মালা  ) । তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওনার দেয়া স্টেটাস ও কিছু অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অডিও ছড়িয়ে পড়লে এখন আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। যে, কেনই বা এতো কিছু থাকতে রাজাকারের সাথে যুক্ত করে তিনি মেয়ের চরিত্রের বিবরণে চলে আসলেন। এতে করে বুঝা যায় সাদা কে সাদা, আর কালোকে কালো বলে আখ্যায়িত করে বলেই শামীম ওসমানকে জড়িয়ে এই মন্তব্য। আর এই অব্যাহত কুকর্মের ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ তাকে ঘষেটি বেগমে আখ্যায়িত করে।

এ ব্যাপারে আক্ষেপ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামীলীগ ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলেন, নারায়ণগঞ্জকে অভিশপ্ত পতীতা পল্লী থেকে মুক্ত করেছেন এই শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড ও ফতুল্লা স্টেডিয়াম নির্মাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন তিনি। যার জন্য আজ বিশে^র কাছে এক অনন্য নামে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা খান ওসমান আলী স্টেডিয়াম। তিনিই সর্বদা রাজাকার, জামাত, শিবিরের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রেখে রাজপথে সকল আন্দোলন সংগ্রামে জিহাদ করেছেন। আর তাই রাজাকারকে রাজাকার বলাতে কেন এতো মাথা ব্যথা। নারায়ণগঞ্জ ও আওয়ামীলীগের জন্য তার পরিবার ও র্বতমান এমপি শামীম ওসমান হচ্ছে এক নিষ্ঠাবান সৈনিক। যা ক্ষমতার আগ্রাসন ও পদকে গায়েল করার লোভে ভুলে গেলে চলবেনা। ভুলে গেলে চলবেনা কাদের কারণে আজ শিরোনামে জায়গা হয়।

আর র্বতমানে একের পর এক অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অডিও ছড়িয়ে পড়লে শহর জুড়ে বইছে নিন্দার ঝড়। একজন মেয়ে হয়েও নেতৃস্থানীয় পদে থেকে মালার কথাপোকথনের অডিওতে একজন সাংসদকে জড়ানো আর তার মাকে নিয়ে গালি দেয়া এটা কখনো ভালো চরিত্রের লক্ষন হতে পারেনা। তাও এমন এক রত্নাগর্ভা মা যিনি নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের সন্তান রাজনীতিবিদ এ কে এম শামছুজ্জোহার স্ত্রী নাগিনা জোহা। তাঁর শ্বশুর তৎকালীন এমএলএ খান সাহেব ওসমান আলীর চাষাঢ়ার বাড়ি বায়তুল আমান ছিল আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু। আর তিনি সে পরিবারের গৃহবধু প্রয়াত ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা। যদিও তখন সামনে অবস্থান করছিলেন আরেকজন নেতৃস্থানীয় পদদারী মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা।

এছাড়াও এর আগে মাহমুদা মালা স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ( কাঁথা মুড়িয়ে শুইয়া রইছি, আসো ) তার এই বক্তব্যও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়েও তীব্র বির্তকের সৃষ্টি করে। আর যখন একজন মেয়ে বলেন কাঁথা মুড়িয়ে শুইয়া রইছি আসো, তখন এটা কি ইঙ্গিত করে? কোন ভদ্রঘরের মেয়ে কি এভাবে শুইয়া থেকে কাউকে আসতে বলতে পারে? এটা রাজনৈতিক অঙ্গন, পতিতালয় নয়। তাই মুখে যা আসবে তাই মিডিয়া ও যোগাযোগ মাধ্যমে বলা যাবে না। এটা সুষ্ঠু রাজনীতিবিদের কাজ নয়।

add-content

আরও খবর

পঠিত