নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ সংবাদ দাতা ) : রূপগঞ্জের কায়েতপারা ইউনিয়নের চনপাড়া পূণবার্সন কেন্দ্রের বাসিন্দা জীবন নেছা। স্বামী হারিয়েছেন ১৫ বছর আগে। এক ছেলে ও এক মেয়ের সংসার তার। অভাব অনটনে দিনকাটাতে হচ্ছে জীবন নেছার। ৭৮ বছর বয়সে বয়স্ক ভাতা পাবার কথা থাকলেও তার ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতা। এতোদিন কোনমতে জীবন পার করলেও স্বামী আব্দুল করিম মারা যাওয়ার পর একমাত্র ছেলে হাল ধরার কথা। কিন্তু মানুষিক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি একমাত্র ছেলে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে তা জানা নেই দীর্ঘ ৮ বছর ধরে। তাই মানুষের বাড়িতে কাজের বিনিময় দুমুঠো আহার খেয়ে কোনমতে জীবন পার করছেন বয়সের ভারে নুয়ে পরা জীবন নেছা। বয়স ভারে আগের মতো কাজ কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ হয়ে পড়েছে কষ্টসাধ্য।
পুরুষদের ৬৫ আর নারীদের ৬২ বছর বয়স হলে বয়স্ক ভাতা পাবার কথা। রূপগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১৫ হাজারের অধিক নারী ও পুরুষ পাচ্ছেন সেসব বয়স্কভাতা। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ইউপি সদস্যদের মদদপুষ্ট, সমর্থক ও আত্মীয় স্বজন না হলে দেয়া হয় না বয়স্কভাতার কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড। উপজেলা প্রশাসনের লোকজনও তা সঠিকভাবে তদারিক না করায় প্রকৃত গরীব ও অসহহায়রা বঞ্চিত থাকেন সরকারের এ সেবা থেকে। তাদের মধ্যে চণপাড়ার জীবন নেছার ভাগ্যেও জোটেনি বয়স্ক ভাতা নামের সোনালী কার্ড। বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য স্থানীয় মহিলালীগ নেত্রী মনোয়ারা মনুর সরনাপন্ন হন নেত্রীর দাবীকৃত ৫ হাজার টাকা দিতে না পারায় বয়স্কভাতার কার্ড জোটেনি জীবন নেছার ভাগ্যে। স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য বিউটি আক্তার কুট্টির কাছেও বয়স্কভাতা চাইতে গিয়েছিলেন একাধিকবার। সেখানেও গিয়ে কোন লাভ হয়নি। স্থানীয়দের প্রশ্ন সরকারের সুবিধাভোগী যারা হওয়ার কথা তারা কেন বঞ্চিত হচ্ছে। বিউটি আক্তার কুট্টি জানান, জীবন নেছা আমার কাছে সরাসরি আসে নাই তাই বিষয়টা জানতাম না।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোলাইমানের সঙ্গে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সভাপতি ও ইউপি সদস্যদের কমিটির সদস্য করা হয়। তাদের বাছাইকৃত তালিকার পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বয়স্কভাতার কার্ড দেয়া হয়। কিন্তু চনপাড়ার জীবন নেছাকে কোন তালিকায় রাখা হয়নি। তাই সে কার্ড পায়নি। তবে এখন ভেবে দেখবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, জীবন নেছার মতো আরো যারা প্রকৃত হতদরিদ্ররা কার্ড পাচ্ছেন না তাদের শীঘ্রই সুবিধা ভোগের আওতায় আনা হবে।