নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় গ্রাম্য টাউট মাদবরদের বিচারে অভিযুক্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় অবশেষে গ্রেফতার হয়েছে লম্পট ও তার রক্ষাকর্তা গ্রাম্য টাউটরা । ঘটনার ১ দিন পর মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বিকেলে অভিযুক্ত মুদি দোকানদার রতন মিয়া (৫০), মাদবর জাকির হোসেন ও কবিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । বাকিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে গত ৫ জুলাই রাত সাড়ে ১০ টায়। তবে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি সাজানো নাটক বলে দাবি করেন অভিযুক্ত রতনের পরিবার।
জানা গেছে, নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড নয়াআটি এলাকায় গত রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রতন মিয়ার মুদি দোকানে সদাই করতে যায় একই এলাকার ৭ বছরের এক শিশু। এসময় রতন ওই শিশু কন্যাকে ফুসলিয়ে দোকানের ভিতরে নিয়ে সাটার বন্ধ করে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। তখন শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে রতনকে ধরে গনপিটুনি দিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে স্থানীয় টাউট মাতবর ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী মিল্টন মিয়া, হিরন মিয়া, বিল্লাল হোসেন, জাকির হোসেন, আনোয়ার হোসেন আনু, শাহ-আলমসহ কয়েকজন মিলে সামাজিক ভাবে বিচার সালিশী করে মিমাংশা করার কথা বলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রতনকে পুলিশের কাছ থেকে রেখে দেয়।
অভিযোগ উঠে, উল্লেখিত বিচারকরা গত সোমবার বিকেলে টায়ার মার্কেট এলাকায় বালুর মাঠে বিচার সালিশে বসে। বিচারে রতনকে মারধর, জোতা পিটা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
এদিকে অভিযুক্ত রতন মিয়ার পরিবারের দাবি ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি সাজানো নাটক। অর্থ আদায় করার জন্য শিশুর পিতা ও টাউট মাদবররা এ নাটক সাজিয়েছে। কারণ ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় সামাজিক ভাবে বিচার করা আইন বহির্ভুত। এমন স্পর্শকাতর ঘটনার বিচার সামাজিক ভাবে করা যায়না বলে মন্তব্য করেন এলাকার সচেতন মহল।
এ ঘটনার শালিসি বিচারে অংশ গ্রহণকারী কোন মাদবরের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফোন করলেও কেউ মোবাইল রিসিভ করেননি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুকের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ধর্ষণের চেষ্টার বিচার কোন অবস্থাতেই এলাকায় সালিশী করে মিমাংশা করার কোন এখতিয়ার নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পুলিশ সুপারের এমন আশ্বাসের ঘন্টা দুয়েক পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত রতন ও দুই মাদবরকে গ্রেপ্তার করে। বাকিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।