নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে নড়ে চড়ে বসেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী হাওয়ায় দোলছেন অনেকেই। দিন যত ঘনিয়ে আসছে বাড়ছে হেভিওয়েট প্রার্থীদের সংখ্যাও। সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেনের মৃত্যুর পর আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিদেরও চলছে দৌড়ঝাঁপ। আর প্রার্থীতা নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন। স্থানীয়দের মাঝেও বেশ আগ্রহ, কে হবে এ পরিষদে নৌকার মাঝি?
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হয়ে যাওয়ার পরপরই শুরু হয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থী ও উপ-নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা। আগামী উপ-নির্বাচনে কারা কারা নির্বাচন করবেন এবং ক্ষমতাসীন দলের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হচ্ছেন কে? কে হবেন উপজেলা উপ নির্বাচনে নৌকার মাঝি? পাশাপাশি অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালাচ্ছেন প্রচারণা। বিভিন্ন সভায়ও জেলা পর্যায়ের নেতারাও দিচ্ছেন ঈঙ্গিত।
এ অবস্থায় শূন্য মাঠে গোল দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতারা। কৌশলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের বলয়ের কর্মী-সমর্থকদের দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন আগাম প্রচারণাও। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকায় স্থানীয়দের নজরে রয়েছেন বাবুল ওমর বাবু।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদে বিধিমালা ২০১০ এর ১৫ ধারা অনুযায়ী ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্যানেল -১ হিসেবে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন বাবুল ওমর বাবু। তিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩৫,৬৪০ ভোট পেয়ে ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আবু নাঈম ইকবাল পেয়েছিলেন ২২,৯০৯ ভোট। বাবুল ওমর বাবু ১২,৭৩১ ভোট বেশী পেয়ে বিজয়ী হন। সোনারগাঁ উপজেলা ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হলেও মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৮ হাজার ৭১। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সর্বমোট ভোট পড়েছিল ১,১৭,৬৯৭ ভোট।
এদিকে করোনাকালে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে ব্যপক সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেয়া সহ করেছেন অসহায়দের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম। তাছাড়া ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে সব মহলে রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা। ছাত্রলীগের তৃনমূল থেকে উঠে আসা সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বাবুল ওমর।
অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু ছাড়াও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা হলেন- কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এ এইচ এম মাসুদ দুলাল, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম, সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার। কেউ কেউ ঈঙ্গিতে বোঝালেও পদবীধারী অনেকেই আবার দলীয় পদ হারানোর ভয়ে প্রার্থীতার ঘোষণা না দিলেও উপর মহলে দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছে। অনেকে বলছে, দলীয় প্রতীক পেলে নির্বাচন করবো। কেউ কেউ অনঢ় রয়েছেন নির্বাচনের জন্য।
সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া মুঠোফোনে জানতে চাইলে বলেন, আমি নির্বাচনে প্রার্থী হবো। ৫০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি কিছুই পেলাম না। এবার উপজেলা নির্বাচনে আমি ছাড়াও অন্য কোনো প্রার্থীর আছে কিনা জানি না।
প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক বলেন, আমি সবদিক বিবেচনায় নৌকার মাঝি হিসেবে বাবুল ওমর বাবুকে সর্মথন করি। শুধু দলের নেতাকর্মী-ই নয় সাধারণ মানুষের কাছেও বাবুল ওমর বাবু ভালো আস্থা কুড়িয়েছে। কারণ বাবুর দেহে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধার রক্ত। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে দলীয় মনোনয়ন বাবুই পাবে বলে আমি আশা করি।
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু বলেন, আমি ইতমধ্যে জনগনের সেবা দিয়ে তাদের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কতটুকু পেরেছি তা সাধারণ মানুষই বলবে। তবে আমার পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের নিবেদিত প্রাণ। আমার বাবাও চেয়ারম্যান ছিলো। আমি সর্বোপরি নেত্রীকে মানি। আমার নেত্রী শেখ হাসিনা যদি মনে করে আমাকে নৌকা দিবে অবশ্যই আমি আমার দায়িত্ব নিয়ে সাফল্য অর্জন করার শতভাগ চেষ্টা করবো। তবে আমি চেষ্টা করেছি স্থানীয় সাংসদ, রাজনৈতিক মুরুব্বি, সহযোদ্ধা সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করতে। আগামীতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবো। আমি আশা করি দল আমাকে নৌকা দিবে। বর্তমানে যেহেতু ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি ভার মুক্ত হলে আরো বেশী কাজ করতে পারবো এজন্য সকলেরই সহযোগীতা কামনা করি।
সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ নিরব বলেন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বাবু ভাই তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি পার্থীকে ১২,৭৩১ ভোটে পরাজিত করেছেন। ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে ছোট বড় সকলের কাছে এখন দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। তারপরেও যাকেই দিবে দলের পক্ষে আমরা কাজ করবো।