নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁও প্রতিনিধি ) : সোনারগাঁয়ে দাবীকৃত যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় স্ত্রী রাবিয়া আক্তার (২৩)কে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে পাষন্ড স্বামী তপু রায়হান (৩০) । ২২ই জুলাই শনিবার সকাল ১০টার দিকে সোনারগাঁ পৌরসভার চিলারবাগ গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত রাবেয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্বজনদের দাবি যৌতুকের দাবিতে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তার স্বামী তপু ও তার শশুর বাড়ির লোকজন। এ ঘটনার পর থেকে ঘাতক স্বামী তপু রায়হান পলাতক রয়েছে। নিহত রাবেয়া মুন্সিগঞ্জ গজারিয়া উপজেলার পোড়াচক বাউশিয়া পশ্চিম নয়াকান্দি গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে। ঘাতক স্বামী তপু রায়হান সোনারগাঁ পৌরসভার চিলারবাগ গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে নিহত রাবেয়ার মা বাদী হয়ে সোনরগাঁ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, রাবিয়া আক্তারের সাথে তপু রায়হানের প্রায় ৮বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তপুকে নগদ চার লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। দুই বছর যেতে না যেতে আবারো স্বামী তপু তার স্ত্রীকে আরো টাকা এনে দিতে বলে এবং এনে না দিলে তার সাথে ঘর-সংসার না করার হুমকি দেয়। বিয়ের পর থেকে এভাবে প্রতি বছরই বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের টাকা এনে সংসার টিকিয়ে রেখেছিল রাবিয়া আক্তার। এর ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিন পূর্বে পিকআপ ভ্যান কিনার জন্য ফের দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে তপু রায়হান। গৃহবধু রাবিয়া আক্তার যৌতুকের টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করায় তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে স্বামী তপু রাহান, রাজু মিয়া, হক মিয়া, শাহিন মিয়া, হাসিব মিয়া, জাহিদ হোসেন, লিজা বেগম ও রুবি আক্তার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাবেয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। নিহতের ছয় বছর বয়সী তামিম হোসেন ও তিন মাস বয়সী তানভীর হোসেন নামের দুটি নাবালক সন্তান রয়েছে।
এদিকে নিহত রাবেয়ার ছেলে তামিম হোসেন গতকাল থানায় গনমাধ্যম কর্মীদের সামনে বলে, আমার মাকে আমার বাবা গলায় চেপে ধরে মেরে ফেলেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তপু রায়হান বখাটে প্রকৃতির লোক। সে নিজের বাড়িতে না থেকে ভাড়া বাড়িতে থাকতো। তার খারাপ আচরনের জন্য তিনি কোন বাড়িতে বেশি দিন ভাড়া থাকতে পারেনি। কয়েকমাস পূর্বে উপজেলার সোনারগাঁ পৌরসভার চিলারবাগ গ্রামের পনির হোসেনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন তিনি। সেই ভাড়াটিয়া বাসায় তার স্ত্রীর উপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালাতেন তিনি।
সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তানভীর আহমেদ জানান, নিহত গৃহবধুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।