সোনারগাঁয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ১ নারী নিহত

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁও প্রতিনিধি, রুবেল মিয়া ) : সোনারগাঁয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় টেঁটাবিদ্ধ হয়ে শাহিদা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়। গত ৪ঠা আগস্ট বুধবার বারদী ইউনিয়নের আলগীর চর গ্রামের এ ঘটনা ঘটে|

আহতদের সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে টেঁটাবিদ্ধ শাহিদা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ই আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। আহতদের মধ্যে আরো কয়েক জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় গত ৪ঠা আগস্ট বুধবার রাতে ব্যবসায়ী মো. সাদেকুর রহমান বাদি হয়ে সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। নিহত শাহিদা বেগমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা মামলার এজহার থেকে জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের আলগীর চর গ্রামের মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমানের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে হাবিবুর রহমানের সঙ্গে একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বিচার সালিস ডাকা হয়। বিচার সালিশ অমান্য করে হাবিবুর রহমান সালিশে উপস্থিত হননি। গত বুধবারও এ জমির বিরোধ মিমাংসায় বিচার সালিশের আয়োজন করা হয়। এ সালিশেও হাবিবুর রহমান উপস্থিত না হয়ে দেশীয় অস্ত্র, টেঁটা, বল্লম, লোহার রড, হকিস্টিক, রামদা, ছেন ও লাঠিসোটায় সজ্জিত হয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দেওয়ায় হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে জিয়া, জামিল হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন, মনির হোসেন, রাব্বী, ফারুকসহ ১০-১৫ জনের একটি দল সাদেকুর রহমানের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এ সময় টেঁটাবিদ্ধ, রামদা ও হকিস্টিকের আঘাতে হয়ে মো. মনির হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, শাহিদা বেগম, হামিদা,শারমিন, রেজাউল ও শাকিল আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে শাহিদা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়াও দেলোয়ার হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক।

ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমান বলেন, স্থানীয় ইলিয়াসের কাছ থেকে আমার বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি ৩৭ শতাংশ জমি এক বছর আগে ক্রয় করি। এ জমি ইলিয়াস দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করেছেন। সম্প্রতি আমি ক্রয় করার পর এ জমির মালিকানা দাবি করেন হাবিবুর রহমান। তার এ জমিতে মালিকানা থাকলে সালিসে মাতবর প্রধানদের মাধ্যমে টাকা পয়সা দিয়ে মিমাংসা চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি শালিসে উপস্থিত না হয়ে জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়েছেন। বাধা দেওয়ায় আমার দশ আত্মীয় স্বজনকে টেঁটাবিদ্ধ ও পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে।

অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ জমি আমাদের। জমিতে যেতে বাঁধা দেওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে।

সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, টেঁটাবিদ্ধ ও পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় মামলা গ্রহন করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে শাহিদা বেগম মারা যান। আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত