নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের পূর্ব বেহাকৈর মোল্লাপাড়া গ্রামে গত ৩ নভেম্বর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজনের সন্ত্রাসী হামলায় আহত গৃহবধূ খাদিজার (২২) মৃত্যু হয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মোঃ সুরুজ্জামান বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে আলমগীর, ছায়েদ, মোসাঃ রানু বেগম ও জসীমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলা বাদী সুরুজ্জামান জানান, উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের পূর্ব বেহাকৈর মোল্লাপাড়া গ্রামের আলমগীর ওরফে হিরোঞ্চি আলমগীর, ছায়েদ ও জসীম এলাকার শ্রমজীবি নারী ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের নানা ভাবে উত্তক্ত করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় একই গ্রামের সুরুজ্জামানের স্ত্রী দুই সন্তানের মা খাদিজা বেগমকে রূপগঞ্জের একটি গার্মেন্ট থেকে আসা যাওয়ার পথে গতিরোধ করে ঐ সন্ত্রাসীরা নানা ভাবে উত্তক্ত করে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এনিয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার বিচার শালিস ডেকে তাদেরকে ভবিষ্যতে এধরনের কাজ না করার জন্য বলে। এদিকে গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় গৃহবধু খাদিজা বেগম প্রতিদিনের ন্যায় রূপগঞ্জের জোবেদা গ্রুপের একটি কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এসময় বাড়ির পার্শ্ববর্তী স্থানে আগে থেকে উৎপেতে থাকা সন্ত্রাসী ছায়েদ ঐ গার্মেন্টকর্মীর গতিরোধ করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে গৃহবধু খাদিজার ডাক চিৎকারে স্বামী সুরুজ্জামান ঘটনাস্থলে ছুটে এসে সন্ত্রাসী ছায়েদকে মারধর করে খাদিজাকে ছাড়িয়ে নেয়। এ ঘটনায় ছায়েদের গ্রুপের আলমগীর, মোসাঃ রানু বেগম ও জসীমের নেতৃত্বে ৮-৯ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সুরুজ্জামানের বাড়িতে প্রবেশ করে তার উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে তাকে স্থানীয় একটি বাজারে তুলে নিয়ে যায়। এসময় স্ত্রী মোসাঃ খাদিজা বেগম তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকেও এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করলে দীর্ঘ ৬ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে। খাদিজা বেগম আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে শুক্রবার রাতে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। নিহত খাদিজার ৮ মাস বয়সের সাজ্জাদ নামের একটি ছেলে ও ৬ বছর বয়সের সুর্বনা নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহতের স্বামী সুরুজ্জামান আরো জানান, তার প্রথম স্ত্রী দুই সন্তান রেখে মারা যাওয়ার পর তিনি খাদিজাকে বিয়ে করেন। এবার সন্ত্রাসীদের হামলায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী খাদিজা বেগম মারা যাওয়ায় তিনি কোলের শিশুসহ ৪ সন্তানকে লালন পালন নিয়ে উৎকন্ঠায় রয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি তার স্ত্রী হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন।
সোনারগাঁও থানার ওসি শাহ মোঃ মঞ্জুর কাদের বলেন, এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।