সোনারগাঁয়ে আ.লীগ নেতার বংশ উচ্ছেদের হুমকী, চেয়ারম্যান প্রার্থীকে শোকজ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী ওরফে বিরুর বংশ সোনারগাঁ থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়েছেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল হোসেন ওরফে বাবুল ওমর বাবু। বিজয়ী হয়ে দুই মাসের মধ্যে চৌধুরী বংশ উচ্ছেদ করতে না পারলে চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেবেন বলেও জানান তিনি।

গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নে নিজের একটি নির্বাচনি উঠান বৈঠকে এমন বক্তব্য দেন বাবুল। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও চিত্র বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তারপরই জেলাজুড়ে চেয়ারম্যান প্রার্থীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমন ঘটনার পর সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল হোসেনকে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাকিব-আল-রাব্বি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে ২য় ধাপে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী বাবুল হোসেন গত ১৬ মে নির্বাচনী সভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, উচ্ছেদের হুমকি ও উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রদান করেছে। এছাড়াও ভোটের দিন চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল হোসেনের প্রতীক আনারস মার্কায় ভোট প্রদান না করলে ভোটারদেরকে কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি প্রদান করেছেন। এই মর্মে এক ভিডিও ভাইরাল হয় এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে । যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ১৮ এর পরিপন্থী এবং সুস্পষ্ট লঙ্ঘণ। তাছাড়াও, ইতোপূর্বে গত ০২ মে ২০২৪খ্রি. তারিখ প্রতীক বরাদ্দের সময় বিধি বর্হিভূত শো-ডাউন করায় আপনাকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল।

এমতাবস্থায়, উক্ত বিধিমালার বিধি ১৮ এর (ক), খে), (গ) ও (ঘ) ভঙ্গের দায়ে কেন বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এবং প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়ে কেন নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ০১ (এক) কার্যদিবসের মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৮ এর ভঙ্গের দায়ে আইন ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী না থাকলেও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার ও জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার সমর্থন পাচ্ছেন বাবুল হোসেন ওরফে বাবুল ওমর। অপরদিকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরু, সাবেক সংসদ সদস্য মোবারক হোসেনের ছেলে এরফান হোসেন দ্বীপসহ আওয়ামী লীগের একাংশের সমর্থন পাচ্ছেন মাহফুজুর রহমান কালাম।

আর তাই আবু জাফরকে উদ্দেশ্য করে বাবুল ওমর তার বক্তব্যে বলেন, খেলা হবে বিরুর সাথে আমার সাথে। আমি খেলবো একা। আমার নাম বাবু। বইলা দিবা নারায়ণগঞ্জের সিপ্রোসিন ট্যাবলেট বাবু। তর যদি কোন মায়ের লা…. থাকে মাদা….., ভোট কেন্দ্রে থাকবি। আমিও থাকবো। ২১ তারিখ খেলা হবে তোর সাথে।

এসময় ভোটারদের উদ্দেশ্যে ভোট চান বাবুল। বলেন, আমি জিতলে আমার পাঁচ বছর লাগবো না। আমি হেরে ঠিক কইরা ফেলমু এক মাসে। এমনিতেই তো ঠিক কইরা ফেলছিলাম, আল্লাহ জানে বাঁচাইছে। লুঙ্গি রাইখা দিছিলাম। আমি তো তার বাড়ির সামনেই হুমকি দিলাম। তার যদি বুকের পাটা থাকে আমার বাড়ির সামনে মিছিল করতে বইলেন। আমি তো তোমার বাড়ির সামনেই উল্টাপাল্টা কথা বলছি। তুমি যদি তোমার মায়ের দুধ পান করে থাকো তাইলে আমার বাড়ির সামনে মিটিং করে দেখাও, ওপেন চ্যালেঞ্জ করে গেলাম।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে বাবুল বলেন, আমি যদি পাশ করি, আর আবদুল্লাহ আল কায়সারের (সংসদ সদস্য) সাথে কাজ করার সুযোগ পাই। তাহলে দুই মাস পরে যদি এই চৌধুরী বংশ আমি উচ্ছেদ না করতে পারি আমি রিজাইন দিব ক্ষমতা থেকে।

add-content

আরও খবর

পঠিত