নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সোনারগাঁও প্রতিনিধি ) : মাদক মরণনেশা হলেও জেনে শুনে যুবসমাজ আজ এই ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে। ইয়াবা, গাঁজা ও ফেন্সিডিল সহ অন্যান্য মাদক পাওয়া এখন কোন কষ্টের বিষয় নয়। শহরে এক সময় এর ভয়ানক ব্যবহার থাকলেও এখন গ্রামের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে গেছে যুব সমাজ ধ্বংসকারী এই মাদক। সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়ন আজ মাদকের জোয়ারে ভাঁসছে এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে অপরাধমূলক কর্মকান্ড বেড়েই চলেছে দিনের পর দিন এমন অভিযোগ এনেছেন ইউনিয়নবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানান ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বেলপাড়া গ্রামে বাবুল দীর্ঘদিন মাদকের ব্যবসা করলেও এখন নামে-বেনামে অনেকে উক্ত গ্রামে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। একই ওয়ার্ডের টালটিকী গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে মনির (৩৫) ও নোয়াকান্দী কুন্দারপাড়ার মৃত নেহাল উদ্দিনের স্ত্রী ফুলবাহার (৫০) দীর্ঘদিন মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কয়েকবার তারা পুলিশ ও গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়লেও মুচলেকা দিয়ে মুক্ত হয়ে আবারও একই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। তাছাড়া অত্র এলাকার পঞ্চমীঘাট, নানাখী ও নয়াপুর সহ আশপাশ এলাকায় মাদকের অভয়ারন্য গড়ে তোলা হয়েছে।
আরও জানা যায়, অত্র ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের নন্দীপুর (ইজলাবাড়ী) গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে জজ মিয়া মাদকের ডিলার হিসেবে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে ইয়াবা সরবরাহ করে থাকে এবং তার ছত্রছায়ায় ২নং ওয়ার্ডের গঙ্গাপুর (হাইরবাগ) গ্রামের আনোয়ার আলীর ছেলে আল আমিন, নন্দীপুর গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে আলমগীর, তার একান্ত সহযোগী একই গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে মোখলেছ, ৩নং ওয়ার্ডের ভারগাঁও গ্রামের আবু দায়েনের ছেলে আরমান, একই গ্রামের শামছুলের ছেলে এমদাদুল, নাড়াভীটা গ্রামের টেগরা শুক্কুর, একই গ্রামের সাহেব আলী’র ছেলে বাবুল, নামা বড়গাঁও গ্রামের জয়নালের ছেলে ঈসমাইল, ভারগাঁও (বাটপাড়া) গ্রামের মৃত সাইজউদ্দিনের ছেলে সিরাজ এর নেতৃত্বে ও প্রত্যক্ষ মদদে উক্ত গ্রামগুলো সহ খিদিরপুর মৈকলী এলাকায়ও ব্যপকভাবে মাদকের ব্যবহার ও বিক্রি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিনের পর দিন এবং তারা এ অঞ্চলে দাপটের সাথেই মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাদের কাছ থেকে মাদক ক্রয় করে মাদক সেবনের মাধ্যমে এলাকার যুব সমাজ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে বলে চিন্তিত সচেতন মহল। সন্ধ্যা হলেই উক্ত এলাকায় অপরিচিত যুবকদের আনাগোনা বেড়ে যায় এবং মাদকের টাকা যোগাড় করতে অনেকে ছিনতাইয়ের মত গর্হিত কাজেও জড়িত হচ্ছে বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে বহুবার সোনারগাঁও থানা পুলিশকে অবহিত করলেও তেমন কোন প্রতিকার পায়নি বলে জানান স্থানীয়রা। পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশের জের ধরে লোক দেখানোর জন্য প্রশাসন কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও পরক্ষণে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয় এবং তারা পুনরায় মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সাথেও মাদক ব্যবসায়ীদের সখ্যতা রয়েছে এবং তাদের মদদে মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মাদকের আগ্রাসন থেকে এলাকার যুব সমাজকে বাঁচানোর জন্য ও মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধে সাদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ মোল্লা ও ইউনিয়নের সচেতন মহল প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও নিয়মিত নজরদারী কামনা করেছেন।