নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কার ইশারায় চলছে? এ যাবৎকালে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানতেন যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের ইশারায় চলছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন। কিন্তু সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের বক্তব্যে ফুটে আসে সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিনের নাম। এতে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে বিএনপির সাবেক সাংসদ কি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের কলকাঠি নাড়াচ্ছেন?
এদিকে একাধিক মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ধারণা আওয়ামী লীগের কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে তিনি তার ছেলে সাদরিলকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৫নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর বানিয়েছেন। ছেলেকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়ী করতে তিনি বিএনপির প্রার্থীর জন্য কোন কাজ না করে আওয়ামী লীগের মধ্যে বলয় তৈরী করেন।
এ নিয়ে মাঠপর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মীদের ব্যাপক ক্ষোভ কাজ করলেও তা নিয়ে মুলধারার নেতারা ভাবে নি। ফলে দলের ভিতরে ভিতরে আগুনের শিখা বেড়েই গেছে। যা বর্তমানে বিষ্ফোরিত হচ্ছে। অপরদিকে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সাবেক জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মতিন মাষ্টার তার নিজের একটি বলয় তৈরী করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগে। যার ফলে নেতাকর্মীরা অনেকেই মনে করছেন তিনি পর্দার আড়ালে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের পদপদবী থেকে শুরু করে বহু বিষয়কে নিয়ন্ত্রন করে থাকেন।
অন্যদিকে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মাওলাকে বিনা কোন কারন দেখিয়ে দল থেকে বহিস্কার করাকে কেন্দ্র করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগে গোলাম মাওলা প্রবীন নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি দলের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন করেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কমিটির অনেকের কাছে বিষয়টি গোপন রেখে কার ইশারায় গোলাম মাওলাকে অপসারন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে?
নেতাকর্মীরা জানতে চায় কাকে খুশি করার জন্য গোলাম মাওলাকে অপসারণ করা হয়েছে? এমনকি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কমিটির কতজন নেতার মতামত নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের কর্তা ধর্তারা। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের থানা আওয়ামী লীগের কোন্দল স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের কমিটির নেতাদের ঘিরে কোন্দল স্পষ্ট হয়েছে। যা মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনেকটা অস্থির করে তুলছে।
মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মনে প্রশ্ন উঠছে আসলে কে কার লোক? এতে করে আওয়ামী লীগের ভিতরে একটা গোমট অস্থিরা কাজ করে চলেছে। সিদ্ধিরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতারা ব্যক্তি কেন্দ্রিক নিজেদের বলয় তৈরীর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ফলে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ বেড়েই চলেছে। সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগে কোন্দল কোন নতুন ঘটনা নয়। বিভিন্ন সময়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল চলমান রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের পৃষ্ঠপোষকতা থাকলেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগে কোন্দল মেটেনি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের নেতারা আঙ্গুল তুলে একে ওপরকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কিছু বুঝিয়ে চলেছেন। এ কোন্দল মেটানোর চেষ্টা করা একান্ত প্রয়োজন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীদের সহযোগীতা না থাকায় কোন্দল মিটছে না।
মুলত, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বালু মহাল, ইপিজেড, শিমরাইল মোড়ে ফুটপাত স্থাপন, মহাসড়কে পরিবহনে চাঁদা উত্তোলন, সরকারি বেসরকারি ভূমি দখল, ১৫ই আগষ্টের নামে চাঁদা আদায়, ঈদে গরুর হাট বসানোকে কেন্দ্র করে এবং টাকা পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল ঘনীভুত হচ্ছে। এহেন নানা কর্মকান্ডে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। আর এতে করে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিয়ে লাভবান হচ্ছে বলে প্রবীন রাজনৈতিক বোদ্ধা মহল মনে করেন।
নেতাকর্মীদের দাবি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগে পদ পেতে বহু নেতা বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে বছরের পর বছর। বহু ত্যাগী নেতা আওয়ামী লীগের থানা কমিটিতে পদপদবি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে দলের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে দুরত্ব তৈরী হয়ে চলেছে। সম্পর্কের টানা পোড়েনে রয়েছেন দলের অনেকেই। দলে কোন্দল স্পষ্ট হলেও মুখে মুখে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের মুখ্য নেতারা ঐক্যের কথা বলছেন। ঐক্য কোন দেখানোর বিষয় নয় দলের শৃঙ্খলাই বলে দেয় দলে কতটুকু ঐক্য রয়েছে।