ভুয়া এএসপি পরিচয়ে ৯ বিয়ে, অতঃপর গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জে আসল র‌্যাবের কাছে ধরা পড়েলো ভুয়া র‌্যাবের এএসপি সজিব (২৯) নামের এক প্রতারক। সে হাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছেলে। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার এখলাসপুরে। নিজ এলাকায় সে প্রতারক লিটন হিসেবে পরিচিত হলেও বিভিন্নস্থানে ছিলো ছদ্ম নামদারী। পুরো নাম মো. শাহীন আলম তারেক ওরফে লিটন ওরফে এএসপি সজিব। সে র‌্যাব-১১ এর এএসপি পরিচয়ে এ পর্যন্ত ৯টি বিয়ে করেছে বলে জানা যায়। আর র্সবশেষ বিয়েটি সম্পন্ন করে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপার এলাকায়।

মঙ্গলবার রাতে র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মো. আলেপ উদ্দিন ও মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে শিমরাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড, বিপুল পরিমান পুলিশের ভিজিটিং কার্ড, পুলিশ ও র‌্যাবের ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি, এএসপি সজিব নাম সম্বলিত পরিচয়দানকারী দাওয়াত কার্ড এবং ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

বুধবার র‌্যাব গণমাধ্যমকে এক বিবৃতিতে জানান, সজিব মূলত একজন পেশাদার প্রতারক চক্রের সদস্য। নিজ এলাকায় সে প্রতারক লিটন হিসাবে পরিচিত। সে র‌্যাব-১১ এর এএসপি পরিচয়ে এ পর্যন্ত ৯টি বিয়ে করেছে। প্রতারক সজিব দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় র‌্যাবের এএসপি হিসাবে পরিচয় দিয়ে সাধারণ লোকের কাছ থেকে মামলার তদবির। আসামী ছাড়ানোর জন্য উৎকোচ গ্রহণ করা সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংগঠিত করে আসছিল।

চিটাগাং রোড এলাকায় তাকে এএসপি হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে সকলে কাছে পরিচিত বলে জানা যায়, আর জনগনের কাছে বিশ¡াস যোগ্যতা অর্জন করার জন্য সে বিশেষ কৌশলের আশ্র্রয় নিতো। সে তার মোবাইলে ফটোশপের মাধ্যমে পুলিশ ও র‌্যাবের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার র‌্যাংক ব্যাজ পরিহিত ছবির সাথে তার নিজের ছবি এডিটিং করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংগঠিত করত। এমন কি প্রধানমন্ত্রী তাকে রাষ্ট্রীয় পদক পরিয়ে দিচ্ছেন সম্বলিত একটি ভুয়া ছবিও তার মোবাইলে পাওয়া যায়।

র‌্যাব জানায়, সজিব শুধু এএসপি পরিচয়ই দিতনা। প্রতারনা করার জন্য মানুষের শ্রেণি বুঝে সে কখনো পুলিশের এসআই, কখনো র‌্যাবের ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয় প্রদান করে আসছিল। র‌্যাব-১১ এর আভিযানিক দল তার কাছে বিপুল পরিমান বিয়ের দাওয়াত কার্ড জব্দ করে এগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় কার্ড গুলো তার নিজের বিয়ের, সেখানেও বর হিসাবে এএসপি সজিবের নাম লিখা। দাওয়াত কার্ডগুলোর উপরে র‌্যাব ও পুলিশের বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম ঠিকানা লেখা ছিল।

এ ব্যাপারে আটক সজিব জানায়, সে মাত্র ৭ দিন আগে প্রতারনা করার উদ্দেশ্যে সানারপার এলাকায় তার নবম বিয়ে সম্পন্ন করেছে। এছাড়াও ভুয়া এএসপি নারারায়ণগঞ্জ ও তার আশে পাশের এলাকা থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

জানা যায়, গত ১ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এলাকায় প্রতারনার উদ্দেশ্যে ৩,০০,০০০০০/- (তিন কোটি) টাকা মূল্যের একটি বাড়ী ক্রয়ের জন্য এএসপি পরিচয় প্রদান করে ভয়ভীতির প্রদর্শের অভিযোগও পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী সজিবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।

add-content

আরও খবর

পঠিত