নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : বিনা নোটিশে ছাঁটাই ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সিদ্ধিরগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের একটি কারখানার শ্রমিকরা। নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাইল সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, বিনা নোটিশে ১৫০ পোশাক শ্রমিক ছাঁটাই ও ২৪০০ শ্রমিক নির্যাতনের প্রতিবাদে তাদের এই কর্মসূচির আয়োজন।
এ সময় শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশে বিপুল সংখ্যক উপস্থিতির কারণে কোনো অপ্রীতিকার ঘটনা ঘটেনি।
তবে ইপিজেড সূত্র ও সাধারণ শ্রমিকরা জানান, কারখানাটির একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ শ্রমিকদের কাজে বাধা দিয়ে আসছিল। এছাড়া ওই চক্র কারখানার সিওসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে শারীরিক নির্যাতন করেছিল। কৌশলে এ চক্রটি বিভিন্ন গার্মেন্টে শ্রমিক হিসাবে যোগদান করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করে।
পোশাক শ্রমিক জানান, বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিনা নোটিশে হঠাৎ করেই বেপজার মাধ্যমে ৫৩ জন শ্রমিকে সাসপেন্ড লেটার ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ওই ৫৩ জনসহ মোট ১৫০ জন শ্রমিককে ছাটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে শ্রমিকদের উপর নির্যাতন করে ইপিজেড এলাকা থেকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ ও আদমজী ইপিজেডের নিরাপত্তা কর্মীরা।
নারী শ্রমিক অপারেটর সালমা জানান, হঠাৎ করে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে কারখানার কর্মচারী ও বেপজার সদস্যরা আমাদের সাথে ঝগড়া করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা আমাদের চাকরি ফেরত চাই।
আন্দোলনকারীরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ সালাউদ্দিন নামে এক পিএমকে বহিষ্কার করায় শ্রমিকরা তার পক্ষে সাফাই গাইতে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ছাঁটাই করে দেয়।
কারখানার জিএম এডমিন এটিএম মোস্তফা (অব. মেজর) জানান, কিছু শ্রমিক অযৌক্তিক ইনক্রিমেন্টসহ অন্যান্য দাবি দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করে আসছিলেন। তাছাড়া পিএম সালাহউদ্দিন মাদকসেবী। আমরা ব্যাপারটি বুঝতে পারায় তিনি নিজ থেকে ইস্তফা দেন। তিনি চলে যাওয়ায় তার কয়েকজন সহযোগী অসন্তুষ্ট হয়ে ফ্যাক্টরিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে। আমরা শ্রমিকদের ছাটাই করিনি। তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিয়ে আন্দোলন শুরু করে।
এদিকে একাধিক সাধারণ শ্রমিক জানান, আমরা কারখানায় কাজের জন্য আসার সময় আন্দোলনকারী ৪০-৫০ জন শ্রমিক আমাদেরকে জোরপূর্বক তাদের সঙ্গে যোগ দিতে বাধ্য করে। পরে আমরা ব্যাপারটি বুঝতে পেরে কাজে যোগদান করি।
তারা আরো জানান, কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক কারখানায় চাকরিতে ঢুকে কৌশলে নিরীহ শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতে কারখানায় অসন্তোষ সৃষ্টি করে আসছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, কারখানাটির ৫০-৬০ জন শ্রমিককে ছাঁইায়ের প্রতিবাদে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন পালন করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।