নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : সিদ্ধিরগঞ্জে আম ছাড়াই তৈরি হচ্ছে আমের জুস। প্রচন্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে যে সুস্বাদু জুস বাজারে পাওয়া যায় তার বেশির ভাগই হচ্ছে ভেজাল। যেখানে নেই কোন আমের অস্তিত্ব। শুধুমাত্র বিভিন্ন রকম ক্যামিকেল ও রং দিয়ে এই জুস তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। রবিবার (১২ মে) বিকেলে ঠিক তেমনই একটি জুস কারখানায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১১ ও জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের একটি আভিযানিক দল। অভিযানে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ভেজাল জুস ধ্বংস করা হয়।
রবিবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল উত্তর পাড়া এলাকায় সাদিয়া ফুড এন্ড বেভারেজ কেমিক্যাল ইন্ড্রাষ্ট্রিজ নামক একটি নকল জুস তৈরির কারখানায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১১ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের একটি আভিযানিক দল। এ সময় প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদিত প্রায় ২০ লক্ষ টাকার নকল জুস জব্দ করা হয়। নকল জুস তৈরির দায়ে এ সময় প্রতিষ্ঠানটির ৪ জন কর্মচারিকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো, প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার নাজমুল আলম (৩৫), ক্যামিস্ট রাজন হোসেন শিকদার (২২), মো. বিল্লাল হোসেন (২৭) এবং এনায়েত হোসেন (৩৪)।
এ সময় ভ্রাম্যমান আদালতের নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম তাদেরকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এবং প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়। তবে এসময় প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন, না এর মালিক মো. আলমগির হোসেন। তবে তার বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা করা হবে এবং তাকে আটকের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১র অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব। এছাড়াও আটক কৃতদের বরাত দিয়ে তিনি জানান কিভাবে তৈরি করা হচ্ছে এই নকল জুস।
আটককৃতের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে ১ লিটার জুস তৈরি করতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যায় হচ্ছে ২৫ টাকার মতো। এই জুস ডিলার কিনে নিচ্ছে ৪০ টাকা দিয়ে। ডিলার আবার খুচরা ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রি করছে ৬০টাকা। এবং খুচরা ব্যবসায়িরা এই জুস বিক্রি করছে ৮০ টাকা দিয়ে। মূলত বেশি লাভের জন্যই এই নকল জুস উৎপাদন করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
এসময় তিনি আরো বলেন, নকল এই জুসে নেই কোন আমের অস্তিত্ব। ১৫ প্রকার ক্যামিকেলের সমন্বয়ে এই নকল জুস তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবথেকে ক্ষতিকারক ক্যামিকেল হচ্ছে সোডিয়াম বেনজয়েড। যা কিনা মানব দেহের জকৃতকে একটা সময় বিকল করে দেয়। পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানটি এসব নকল জুস প্রতিনিয়ত বাজারে সরবরাহ করে আসছিলো। এমন যেকোন ভেজাল খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেলে সেগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন মেজন তালুকদার নাজমুছ সাকিব।