সরকারী ডাক্তারের প্রাইভেট সেবা নিয়ে ভোগান্তির শিকার শিশু !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : আবারো ত্রুটিপূর্ণ চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. ফয়সালের ত্রুটিপূর্ণ চিকিৎসার কারণে এবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে এক ৯ বছরের শিশু কন্যার ভবিষ্যৎ। বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ নোয়াদ্দা এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী শিশু আকিলা। তার পিতা আনোয়ার হোসেন পেশায় একজন গার্মেন্ট শ্রমিক।

র্দীঘ এক বছরের চিকিৎসার পর এখনও আকিলা ঠিকভাবে হাঁটতে পারছেনা বলেও দাবী রোগীর পিতার। বর্তমানে শিশু আকিলার বাম পা টি দিন দিন বাকা হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ওই পা ফুলে গিয়ে মারাত্মক ব্যথার যন্ত্রনা ভোগ কর‌ায় শিশু‌টি‌কে।

তার অভিযোগ, গত বছর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় পড়ে গিয়ে ব্যথা পায় তার একমাত্র কন্যা আকিলা। এরপর খানপুর হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. ফয়সালের তত্বাবধায়নে চিকিৎসা করালে তিনি বেশ কিছু টেস্ট করার পরার্মশ দেন। এরমধ্যে বুকের এক্স-রে, পায়ের এক্স-রে সহ ব্যয়বহুল এমআরআই পরীক্ষাও ছিল। একপর্যায়ে ডা. ফয়সাল শিশুটির পিতা আনোয়ার হোসেনকে জানায় অপারেশন করানো ছাড়া ঠিক হবে না শিশু আকিলার পা।

এরপর শহরের মিশনপাড়া সংলগ্ন মেডিহোপ নামে একটি প্রাাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করানোর পরার্মশ দেন ডা. ফয়সাল। ওইসময় সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার সুবিধা চাইলেও সম্মতি দেন নি তিনি। তারপরেও ঋণগ্রস্থ হয়ে প্রায় দুই মাস পড়ে তার কন্যার বাম পায়ের অপারেশন করেন সেই ডা. ফয়সাল। এ অপারেশন বাবদ ১৪ হাজার টাকা ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা সহ এ চিকিৎসায় খরচ গুনতে হয়েছে তাকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। এতে করে প্রায় নিশ্ব হয়ে গেছে শ্রমিক আনোয়ার হোসেন।

তার অভিযোগ, কারণে-অকারণে আমাকে দিয়ে বিভিন্ন টেস্ট করানো হয়েছে। এ ক্লিনিকে ভর্তি করে আমার কন্যার চিকিৎসার নামে তারা টাকা কামিয়ে বানিজ্য করেছে। এছাড়াও চিকিৎসার জন্য কিছু সময় ফি ছাড় দিলেও একাধিকবার মোটা অংকের টাকা নিয়েছে। র্দীঘ একবছরের চিকিৎসার পর এখনও আকিলা ঠিকভাবে হাঁটতে পারছেনা বলেও দাবী রোগীর পিতার। বর্তমানে শিশু আকিলার বাম পা টি দিন দিন বাকা হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ফুলে গিয়ে মারাত্মক ব্যথার যন্ত্রনা ভোগ করছে। একপর্যায়ে সন্দেহ হলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে জানতে পারে এ অপারেশনটিতে ত্রুটি ছিল। যার জন্য আরো সময় নিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আর তাছাড়া পায়ের অপারেশনে ঠিকমত পর্যবেক্ষণ না করায় ফিনিশিং হয়নি বলেও ওই হাসপাতালের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানায় রোগীর পিতা আনোয়ার হোসেন।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ডা. ফয়সালের মিশনপাড়াস্থ মেডিহোপ প্রাইভেট ক্লিনিকে তার চেম্বারে গেলে সাংবাদিক দেখেই ক্ষেপে যান তিনি। এছাড়াও এ প্রসঙ্গে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি নারাজ। অত্যন্ত দাম্ভিকতার সাথে এও বলেন আমিও নারায়ণগঞ্জের ছেলে। এসব বিষয়ে কথা বলে কোন লাভ হবে না। আমি ডাক দিলে এখানে সাংবাদিক বসার জায়গা দিতে পারবোনা।

ডা. ফয়সাল দাবী করেন, এ চিকিৎসায় তার কোন ক্রুটি ছিল না। শতভাগ সাকসেসফুল অপারেশন হয়েছে। কিছু দিন আগেও তাকে (আকিলা) এখানে হাটিয়েছি, ব্যায়াম করানো হয়েছে। তিনিই আবার পরিবর্তে আশ্বস্ত করেন প্রয়োজনে বোর্ড মিটিং করে শিশুটির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে আবার একটি চিকিৎসা ব্যবস্থার উদ্যোগ নিবো।

এ প্রসঙ্গে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল জাহের জানায়, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। তবে এ বিষযে যদি ভুক্তভোগীর কোন অভিযোগ থাকে, তা লিখিত আকারে দিলে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

প্রসঙ্গত, এরআগেও ডা. ফয়সালের বিরুদ্ধে নগরীর দেওভোগ পাক্কা রোড বাসিন্দা ব্যবসায়ী আতাউর রহমান পল্টুর খাদ্য নালী ছিদ্র সহ পাকস্থলির একটি অংশ কেটে ফেলে দিয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন রোগীর স্বজনরা। পরে তাকে মূমূর্ষ অবস্থায় ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখানকার ডাক্তাররা তাকে আইসিইউতে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অপারেশনের ফলে আতাউর রহমানের খাদ্য নালী ছিদ্র হয়ে গেছে এবং লাঞ্চে পানি জমে গেছে এছাড়াও তার পাকতন্ত্রের যে অংশটি অপারেশন করে ফেলে দেয়া হয়েছে সেটির কারণে রোগীর অবস্থা খুব আশংকা জনক।

add-content

আরও খবর

পঠিত