নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : জাতীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যান বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব কাউছার আহম্মেদ পলাশ বলেছেন, ট্রেড ইউনিয়ন আছে বলেই নিহত শ্রমিকের পরিবারকে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করতে হয় না। লাশ দাফনের জন্য কারো কাছে হাত পাততে হয় না। ট্রেড ইউনিয়নভূক্ত সংগঠনের শ্রমিকদের দেয়া চাঁদা থেকেই তারা তাদের নিহত, আহত বা অসুস্থ ভাইয়ের পাশে দাঁড়ায়। শ্রমিকরা যেমন অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে পারে, তেমনি তারা তাদের স্বজাতি ভাইয়ের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলাতে পারে। এটাই আজকে প্রমান করেছে ইমারত নির্মাণ ও বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। ৯ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ চটলার মাঠে ইমারত নির্মাণ ও বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য নিহত, দুই শ্রমিকের পরিবারকে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের ধর্মগঞ্জ শাখার সভাপতি শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের ফতুল্লা আঞ্চলিক শাখার সভাপতি এসএম হুমায়ুন কবির, ফতুল্লা থানা লোড আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সেন্টু,ইমারত নির্মান শ্রমিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাত্তার, বাংলাদেশ ট্রলার বাল্ক হেড শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনিস মাষ্টার, শ্রমিক নেতা রুহুল আমিন মেম্বার,শ্রমিক নেতা শাহাদাৎ হোসেন মোল্লা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ আন্ত:জেলা ট্রাক চালক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলাশ বলেন, নারায়ণগঞ্জ তথা ফতুল্লায় এমনি এমনি ২৬টি ট্রেড ইউনিয়ন হয়নি। অনেক ঘাম,ত্যাগ আর কষ্টের ফসল এই অঞ্চলের ট্রেড ইউনিয়নগুলো। যে ইউনিয়ন শ্রমিকদের দাবী আদায়ের কথা বলে,শ্রমিকের পক্ষে কথা বলে। আর এই ট্রেড ইউনিয়নগুলোর শ্রমিক নেতৃবন্দকে বিভিন্ন সময় একটি কুচক্রী মহল বিভিন্নভাবে হয়রানীর চেষ্টা করে। কিছুদিন আগে পরিবহন শ্রমিকরা যখন কর্ম বিরতী করেছে, তখন একটি পক্ষ শ্রমিকদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পোড়া মবিল ব্যবহার করেছে। প্রকৃত শ্রমিক কখনোই এমন কাজ করতে পারে না। যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবী করছি। তাদের ষড়যন্ত্র কখনোই আলোর মুখ দেখেনি আর দেখবেও না। এমন এক সময় ছিল,যখন ফতুল্লা অঞ্চলে কোন শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে নিহত বা আহত হলে ঐ সমস্ত পরিবারকে রাস্তায় দাড়িয়ে মানুষের কাছে হাত পাততে হতো। কিন্তু এখন ট্রেড ইউনিয়ন ভূক্ত শ্রমিক সংগঠনের কেউ কোন সমস্যায় পড়লে, শ্রমিকের পরিবারকে আর্থিক সহযোগীতা এখন শ্রমিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা করে থাকে। আর এই সহযোগীতা শ্রমিকদের কল্যান ফান্ড থেকেই করা হয়। কারো কাছে হাত পাততে হয়না এখন অসহায় শ্রমিকের পরিবারকে।
শ্রমিকদের অধিকারে বিষয়ে পলাশ আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষতায় আসার পর শ্রমিকদের অধিকারে বিষয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন। দুই বারের ক্ষমতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ৩ দফায় শ্রমিকদের নূন্যতম মজরী ঘোষণা করেছেন। যা অন্য কোন সরকার কখনোই শ্রমিকদের জন্য করেনি। অপরদিকে আওয়ামীলীগ সরকার ছাড়া,অন্য যে কোন সরকারে সময় শ্রমিকরা অধিকার আদায়ের ব্যাপারে রাজপথে নামলে তাদের উপর গুলি চালিয়েছে,হত্যা পর্যন্ত করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার কখনোই শ্রমিকদের উপর জুলম নির্যাতন করেনি। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে আইএলও কনভেনশনের মাধ্যমে বাংলার শ্রমিকদের যুক্ত করেন। তাঁর মাধ্যমেই আজকে বাংলার শ্রমিকরা মাথা উঁচু করে নিজেদের দাবী দাওয়ার কথা রাজপথে বলতে পারছে। তাই শ্রমিক বান্ধব বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আমাদের আবারও প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।
বেশ কয়েক মাস আগে ইমারত নির্মাণ শ্রমিক জজ মিয়া ও বাল্কহেড শ্রমিক শাকিল আহম্মেদ শুভ নিহত হন। নিহতে জজ মিয়ার বাবার হাতে নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার ও শুভর মায়ের হাতে ২ লাখ টাকার অনুদান তুলে দেন শ্রমিক নেতা কাউছার আহম্মেদ পলাশ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। এসময় বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন বেলু, লতিফ বেপারী,রফিকুল ইসলাম,আলাল খান, আজাদ,আবু সিদ্দিক, মো.আনিস প্রমুখ।