নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও নাসিক (১৩, ১৪ ও ১৫) নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নি বলেন, আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক। দেশ এগিয়ে যেতে যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নয়ন প্রয়োজন, ঠিক তেমনি শিক্ষার উন্নয়নও প্রয়োজন। কেননা একটা মানুষ যখন শিক্ষিত হয়, তখন সে অন্যায় করতে অনেকবার চিন্তা করে। এই চিন্তাটার মধ্যেই সে অন্যায় থেকে বিরত থাকে। যারা আজকে রাস্তায় ভিক্ষা করছে, তারা হয়তো মনে করছে এটাই সবচেয়ে সহজ পথ। হাত পাতলেই টাকা পাওয়া যায়। আসলে সব কিছুর মূলে ক্ষুধা। ক্ষুধার জন্য মানুষ কতো কিছুই না করে। কিন্তু তারাই যখন দেখবে তাদের আশপাশের সব শিশুরা লেখাপড়া শিখছে, তখন তারাও স্কুল মুখী হবে। বাংলাদেশ যখন অনেক কষ্ট করে স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছে, অনেক কষ্ট করেই একদিন আমরা শতভাগ শিক্ষিত জাতিতে পরিণত হবো।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) সাব-কম্পোনেন্ট ২.৫ আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১০ই ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল ১০টায় জামতলা হিরা ড্রাগন প্লেস রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টারে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সহযোগিতায় এবং ডোক্যাপ আয়োজনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো সহকারী পরিচালক এম এম সাইদুর রহমান।
বিন্নি আরো বলেন, নাসিকের ১৩ ও ১৪নং ওয়ার্ডে ২টি স্কুলে প্রায়শই মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। বিষয়টি আমাদের জন্য লজ্জাজনক। সমাজের সবাই এগিয়ে আসে না বলেই তারা সাহস পায়। মাদক সেবীদের সংখ্যা কম। আমরা যদি সবাই এগিয়ে আসি তাহলে তাদের রুখতে পারবো। শিক্ষা যতো এগিয়ে যাবে, মাদক ততো পিছিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী ও নাসিক মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, যিনি এমন একটি মহতি উদ্যোগ নিয়েছেন। বাংলাদেশে কেউ নিরক্ষর থাকবে না। সকলেই শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে, এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাই আমাদের মেয়র মহোদয়কে, যিনি আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। নাসিকের ২৭ টি ওয়ার্ডে ৪০ টি স্কুল পরিচালনায় সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি সবাইকে সাথে নিয়ে এই দায়িত্ব পালনে কাজ করে যাবো। ছোট বড়দের নিয়ে এই কর্মসূচী সুন্দরভাবে করার চেষ্টা করবো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এম সাইদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি শিশুর শিক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। আউট অব স্কুল চিলড্রেন শিক্ষা কর্মসূচী বিষয়ক অবহিতকরণ সভা মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষাদানে বিভিন্ন কৌশল নেয়া হল। সিটি এলাকায় ৪০টি স্কুল করা হবে। সকাল ও বিকালে দুই বেলায় বিভিন্ন শ্রেণীর ৬০ জন শিশু শিক্ষা নিবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার গুলশান আরা, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের জেলার ম্যানেজার অশোক কুমার ঘোষ, নাসিক ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, নাসিক ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, নাসিক ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, ডোক্যাপের নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ আলম।
উল্লেখ্য যে, কর্ম এলাকা নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের ৬৪টি জেলার ৩৪৫টি উপজেলা, সকল সিটি কর্পোরেশনসহ ১৫টি শহর এলাকা (রস্ক-২ প্রকল্পের আওতাধীন উপজেলাসমূহ ব্যতিত)। সময়কাল নির্ধারণ করা হয় ১ জুলাই ২০১৮ হতে ৩০ জুন ২০২৩। অভিষ্ট জনগোষ্ঠী ৮-১৪ বছর বয়সী ১০ লাখ শিশু যারা ঝরে পড়া এবং বিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়া। বাস্তবায়ন কৌশলে থাকবে, শিশু জরিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন, প্রতিটি উপজেলায় গড়ে ৭০টি শিখন কেন্দ্র স্থাপন, প্রায় ২৭০০০ জন শিক্ষক নিয়োগ, এনসিটিবি শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক অনুসরণ, এক্সিলারেটেড মডেল সিলেবাস অনুসরণ, এনসিটিবি নির্ধারিত ২৯টি প্রন্তিক যোগ্যতা অর্জন, পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষা উপকরণ, স্কুল ড্রেস ও ব্যাগ সরবরাহ।