নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অন্য এক নারীর সাথে শিক্ষক বড় ভাইয়ের নগ্ন ভিডিও করে ৫ লাখ টাকা দাবী করায় ব্ল্যাক মেইলিং গ্রুপের মূল হোতা মো. সালাউদ্দিন শেখ ওরফে জনি (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর সদস্যরা। গ্রেফতারকৃত জনি ফতুল্লা থানার শিয়াচর পিলকুনি এলাকার মৃত সামছুদ্দোহার পুত্র।
জানা যায়, মায়ের অসুস্থতার কথা বলে শিক্ষক বড় ভাইকে বাসায় ডেকে এনে নারীর ফাদেঁ ফেলে দৈহিক মেলামেশার ভিডিও ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার হুমকি প্রদান করে পাচঁ লাখ টাকা দাবী করে জনি।
এ ঘটনায় ব্ল্যাক মেইলিংয়ের শিকার শিক্ষক আবু নাঈম মো. রাফি বাদী হয়ে ২রা জুলাই শুক্রবার ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে বাদী গত মাসের ২৪ তারিখে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে র্যাব-১১ এর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
পরে র্যাব-১১এর সদস্যরা ঘটনার সত্যতা পেয়ে ১লা জুলাই হস্পতিবার রাতে ফতুল্লা থানার পিলকুনিস্থ ফাতেমা আবাসন নামক দোতালা ভবনের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে জনি কে আটক করে। এ সময় তার নিকট থেকে ধারন করা ভিডিও সহ ভিডিও ধারন করার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, পিলকুনির সামসউদ্দিনের পুত্র বাদী আবু নাঈম মো. রাফি একজন শিক্ষক। গ্রেফতারকৃত জনি তার ছাত্র আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই। সে সুবাদে জনি পূর্ব পরিচিত। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে গত মাসের ২৩ তারিখে জনি তার মায়ের অসুস্থতার কথা বলে বাদীকে মোবাইল ফোনে বিকাল ৫ টার দিকে বাসায় ডেকে নিয়ে আসে। বাসায় আসলে এক অজ্ঞাত তরুনীকে নিয়ে এসে জনি জানায় যে মেয়েটিকে চাকুরী দিতে হবে। এ সময় জনি তার অজ্ঞাতসারে তাকে কোকের সাথে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট তাকে খেতে বলে। সে তা সেবন করে। ওই সময় তরুনীটি তাকে চাকুরীর জন্য বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গিমায় তাকে আকৃস্ট করে দৈহিক মিলনে প্রলুব্দ করে। তখন সে নিজেকে সামলাতে না পেরে তরুনীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে লিপ্ত হয়। বিষয়টি জনি গোপনে ভিডিও ধারন করে। পরে রাত ১০ টার দিকে জনি তাকে মোবাইল ফোন করে জানায় যে, তরুনীর সম্পর্কের বিষয়টি ভিডিও ধারন করা হয়েছে এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হুমকি দিয়ে তার নিকট পাঁচ লাখ টাকা দাবী করা হয়।এতে করে বাদী ঘটনার পরদিন ২৪ তারিখ র্যাব-১১এর আদমজী কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
ফতুল্লা মডেল থানার ইনচার্জ রকিবুজ্জামান জানান, ব্ল্যাক মেইলিং করার অভিযোগে জনির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত জনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তার সাথে কে কে জড়িত রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, এর আগে গ্রেফতারকৃত জনির বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় ধর্ষণ, হত্যা মামলা রয়েছে। মাদক ব্যবসা সহ নারী দিয়ে ফাঁদ তৈরি করে ব্ল্যাক মেইলিংয়েরও বহু সংখ্যক অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ তিনি ২০১৮ সালে খাবারের সাথে ট্যাবলেট মিশিয়ে অচেতন করে এক শিশুকে ধর্ষণ করে। সে মামলায় ২ বছরেরও বেশী কারাগারে আটক থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে তার পুরোনো দুই সহযোগি তোফাজ্জল হোসেন ওরফে মেজর ওরফ তুজু ডাকাত ও আলম ওরফে মাইচ্ছা আলম কে সাথে নিয়ে নিজ বাড়ীতে বসেই ব্ল্যাক মেইলিং সহ সক্রিয় হয়ে উঠে সমাজ বিরোধী নান অপরাধমূলক কর্মকান্ড।