রূপগঞ্জে রাস্তায় অবৈধ যানবাহনে বাড়ছে দুর্ঘটনা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রুপগঞ্জ সংবাদদাতা ) : রূপগঞ্জে গোলাকান্দইল ও ভূলতা এলাকার মহাসড়কে চলছে প্রায় পাঁচ হাজার অবৈধ গাড়ি বাড়ছে দুর্ঘটনা। এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল করলেও সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথা ব্যথাই নেই।

এসব অবৈধ যানবাহনকে দালালদের মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে কাড়ি কাড়ি টাকার ফায়দা লুটছেন সংশ্লিষ্টরা। ট্রফিক পুলিশের যোগসাজশ রয়েছে এই অবৈধ আয়ে। অবৈধ যানবাহনের পুরো হিসাব না থাকলেও প্রায় মোট পাঁচ হাজারের মতো সিএনজি, অটোরিক্সা, অটো, বেবী, নসিমন, ট্রাকটর, বাস, প্রাইভেটকার, লেগুনাসহ আরও অনেক গাড়ি অনুমোদন ছাড়া চলছে বলে জানা যায়। অনেকের লাইসেন্স আছে কিন্তু প্রশিক্ষণ নেই। এতে করে প্রতিদিন বড়ছে দুর্ঘটনা।

তবে সংশ্লিষ্ট অপর এক সূত্রে জানায়, অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি। রূপগঞ্জ অঞ্চলের ৫০ শতাংশ গাড়িই কোনো ধরনের অনুমোদন না নিয়ে চলাচল করছে। এসব গাড়ির বেশির ভাগেরই ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। অনেক গাড়ির নেই রুট পারমিট-রেজিস্ট্রেশন। তাছাড়া লাইসেন্সবিহীন চালকের সংখ্যা হাজার হাজার। এমনকি হারানো দিনের পুরাতন গাড়িগুলো এখন এশিয়ান হাইওয়ের গোলাকান্দাইল টু মিরের বাজার সড়কে চলাচলকারী ৩০০ টি গাড়ির মধ্যে অর্ধকেরই কোনো রুট পারমিট নেই।

অসাধু পুলিশ র্কমর্কতাকে ম্যানেজ করে এই গাড়িগুলো বছরের পর বছর ধরে চলাচল করছে মহাসড়কের গোলাকান্দাইল এলাকায়। এমন অবৈধ সুযোগ দিয়ে কাঁড়ি কাঁড়ি অবৈধ টাকার ফায়দা লুটছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীন কতিপয় র্কমর্কতা।

অভিযোগ রয়েছে, এই অসৎ চক্র রুট পারমিট-লাইসেন্সের ব্যবস্থায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পরোক্ষভাবে অসৎ পন্থায় পা বাড়াতে উৎসাহিত  করছে গাড়ি মালিক ও চালকদের। এছাড়া কোনো কাগজপত্র ছাড়াই এলাকাতে চলছে দেড় হাজার অবৈধ সিএনজি । ১ হাজার ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা। থানার অন্যান্য এলাকায় আরও দুই হাজার অধৈ অটোরিক্সা চলছে। এসব অবৈধ অটোরিক্সা দাপিয়ে বেড়ালেও এগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। উল্টো মাসোয়ারার বিনিময়ে অবৈধ অটোরিক্সা চলাচলের সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ভূলতা ও গোলাকান্দাইল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নামে অবৈধ অটোরিক্সা চালানো হচ্ছে এলাকায়। বিভিন্ন স্টিকার চাঁদায় চলছে এসব গাড়ি। এ সুযোগে এলাকার সংগঠনগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।পুলিশের বড় র্কমর্কতাদের কাছেও তারা পৌঁছে দেয় টাকার ভাগ। রাজনৈতিক নেতারা এই ভাগবাটোয়ারায় শামিল হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

থ্রি-হুইলার মালিক কল্যাণ সমিতির একটি চক্র ভূলতা-গোলাকান্দাইল সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৭ টি অবৈধ থ্রি-হুইলার ষ্ট্যান্ড। এই সংগঠনের নেতারা অবৈধ অটো চালক বা মালিকের কাছ থেকে মাসিক ও দৈনিক চাঁদা সংগ্রহ করেন। নির্র্দিষ্ট অংকের চাঁদা নিয়ে অবৈধ গাড়ির চালকের হাতে ধরিয়ে দেন একটি টুকেন্ট আরেকটি স্টিকার। এই স্টিকার ও টুকেন্ট প্রর্দশন করলে সড়কে চলাচলের কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয় না অবৈধ চালকদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যানবাহন মালিক সমিতির নেতারা অবৈধভাবে গাড়ি চালানোর কথা স্বীকার করে জানান, গাড়ির কাগজপত্র নবায়ন বা নতুন করে গ্রহণের চেয়ে ট্রাফিক পুলিশের একটি টোকেন নিয়ে গাড়ি চালানোই আরও সহজ ও ঝামেলামুক্ত।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে অবাধে চলছে নিষিদ্ধ এ যানবাহনগুলো। স্থানীয় নেতাদের মাসোহারা দিয়ে এসব যানবাহন চলাচল করছে।

মহাসড়কে অটোরিক্সার চলাচল প্রসঙ্গে এক স্কুল ছাত্র বলেন, পুলিশের চোখের সামনেই থ্রি-হুইলার কিভাবে চলাচল করে। আবার পুলিশ ইচ্ছা করলেই সব আটক করতে পারে। গত চার মাসে সারাদেশে সংগঠিত সড়ক র্দুঘটনার বেশিরভাগই ঘটেছে মহাসড়কে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ মহাসড়কের নিষিদ্ধ ইজিবাইক ও মোটরচালিত রিক্সা চলাচলে। এছাড়া এলাকার গাড়ির বেশির ভাগেরই ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। অনেক গাড়ির নেই রুট পারমিট-রেজিস্ট্রেশন। অনেক ড্রাইভারদের লাইসেন্স আছে কিন্তু প্রশিক্ষণ নেই।  এতে করে প্রতিদিন বড়ছে দুর্ঘটনা।

add-content

আরও খবর

পঠিত