নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : রূপগঞ্জের বেকারীগুলোতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরী হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। সরকারের খাদ্যনীতির কোন তোয়াক্কা না করে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে এসকল বেকারীতে অবাধে তৈরী করা হচ্ছে। কারখানাগুলোর নেই কোন অনুমোদন। তার পরও তাদের রমরমা ব্যবসা।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য। গোলাকান্দাইল এলাকার এলাচি হোটেল রেষ্টুরেন্টের পিছনে টেইন স্টার নামের বেকারীতে তৈরী হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে, বিস্কুট, চানাচুর, কেক, পাউরুটি, মিষ্টি, সন্দেশ। পাড়ার মহল্লার দোকান থেকে শুরু করে নামী-দামি দোকানেও বিক্রি হচ্ছে নানা বাহারী মুখরোচক খাবার। স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরী করা হচ্ছে বেকারী সামগ্রী। কারখানার ভেতরে যেখানে তৈরী খাবার রাখা আছে সেখানেই নোংরা পরিবেশ, রয়েছে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ, কেমিক্যাল এবং একাধিক পাম ওয়েলের ড্রাম। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ধরনের তৈরী পণ্য।
উৎপাদন ও মেয়াদোর্ত্তীন তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারী সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিএসটিআই এর কোনো অনুমোদন নেই। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেখা মেলেনি । কখনো এসব কারখানায় অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করা হয় নাই। প্রতিদিন বেপোরোয়া গতিতে চালাচ্ছে তাদের পণ্য উৎপাদন। বিকল্প বেকারীর উৎপাদিত বেকারি সামগ্রী পাউরুটিসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর মোড়কে বিএসটিআই, বিডিএস নম্বর লেখা নেই। মোড়কের গায়ে উৎপাদন ওমেয়াদোর্ত্তীণ লেখা নেই কত তারিখে উৎপাদন হয়েছে বা মেয়াদ কবে শেষ হবে তার কোন উল্লেখ নেই।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরী করা এসব খাবার সামগ্রী খেলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে। পেটব্যথা, শরীর দূর্বলসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রয়েছে।
কারখানার এক কর্মচারী বলেন, দিনের বেলায় তারা কোন পণ্য উৎপাদন করেন না। ফজরের আগেই পণ্য উৎপাদন শেষ হয়ে যায়। রাতে ভ্রাম্যমান আদালত ও পুলিশের ঝামেলা কম বলেই পণ্য উৎপাদন রাতেই শেষ করে থাকে।
বেকারীর ম্যানেজারের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমাদের কারখানায় মালিকের হুকুম ছাড়া এ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে পারবো না। আপনারা পারলে যা কিছু লিখেন গিয়ে। পরে একাধিক কারখানায় গিয়ে মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায় নি। মোবাইল ফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বলেন, যেসব কারখানায় অস্বাস্থ্য ও নোংরা পরিবেশে ভেজাল খাদ্য তৈরী করেছে ওই সব প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তাদেরকে খাদ্য আইনে সংশোধন হওয়ার পরামর্শ দিব। খাদ্যনীতিমালা অমান্য করিলে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।