নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় করোনার টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে আগ্রহ বেড়েই চলছে। গণটিকাদান কর্মসূচির শুরুর দিকে টিকা কেন্দ্রে ভিড় কম ছিল। টিকাদানে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হওয়ায় দিন বাড়ার সাথে সাথে টিকা গ্রহণের মানুষের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুরুষের পাশাপাশি মহিলা টিকা গ্রহীতার সংখ্যাও কম নয়।
৪০ বছর কিংবা তার উর্ধ্বে বয়স নির্ধারণ করে দেওয়ায় অনেকেই টিকা গ্রহণ করতে পারছে না। তাতে হতাশাও বাড়ছে। নিবন্ধনের তালিকা বাড়ায় টিকা গ্রহণের তারিখ পেতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। টিকা গ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৪টি বুথে টিকা প্রদান করছে। রূপগঞ্জে ১১ হাজার মানুষের জন্য টিকার ডোজ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২২শে ফেব্রুয়ারি সোমবার পর্যন্ত ৬ হাজার মানুষের মধ্যে টিকা পুশ করা হয়েছে। নিবন্ধন করেছেন ৯ হাজার মানুষ। প্রতিদিন ৭-৮ শত মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন। এ হারে টিকা প্রদান করা হলে আগামী ৫-৬ দিন পর তা শেষ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা ডোজ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে মৃদু জ্বর ও ব্যাথা ছাড়া কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। তাতে লোকজনের ভয় কাটছে। নিবন্ধন বাড়ছে। টিকা কেন্দ্রে লোক সমাগমের কমতি নেই। চাপও বাড়ছে। হাসপাতাল ভবনের কক্ষগুলোতে টিকা গ্রহীতাদের ভিড়। হাসপাতাল চত্ত্বরে-মাঠেও ভিড়। সিরিয়ালে টিকা দেয়া হচ্ছে। নিবন্ধনের কাগজ, মোবাইলের ক্ষুদে বার্তা নিশ্চিত করে টিকা নেওয়ার জন্য বুথে পাঠানো হচ্ছে। ভীতি কেটে গেছে। উৎসাহ উদ্দীপনা বাড়ছেই। আগে দিনে ৪০-৫০ জন টিকা গ্রহণ করতেন। মানুষ এলাকা ও সংগঠন ভিত্তিক দল বেঁধে এসে টিকা গ্রহণ করছেন। এখন প্রতিদিন ৭-৮ শত মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন। এক বুথে ১৫০-২০০ জন টিকা প্রদানের কথা থাকলেও তা মানা যাচ্ছে না। বুথ আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। হাসপাতালের অনেকের মতো প্রভারাণী, সুব্রত ও আব্দুল মাতিন করোনার টিকা গ্রহণকারীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।
টিকা গ্রহণের পর কেউ হাসপাতালেই বিশ্রামে থাকছেন। কেউ বা বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। টিকা গ্রহণকারীদের সঙ্গে উৎসুক জনতা সাক্ষাত করছেন। তাদের অনুভুতি জানছেন। পরে নিজেও নিবন্ধন করছেন।
এদিকে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, রূগগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শাহজাহান ভুঁইয়া, তারাবো পৌরসভা মেয়র হাসিনা গাজী, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুসরাত জাহান, বিসিবি, যমুনা ব্যাংক ও গাজী গ্রæপের পরিচালক গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.এ মোমেন সহ ইউপি চেয়ারম্যান,চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ রূগঞ্জের ৬ হাজার মানুষ টিকা গ্রহণ করেছেন। সে কারণে ভীতি কেটে গেছে। উৎসাহ উদ্দীপনায় নিবন্ধন করে সাধারণ মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরজাহান আরা খাতুন বলেন, টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের ৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করলে শরীর এন্ট্রি বডি তৈরী করে। তাতে ৯৫ ভাগ সফলতা আসে। টিকা গ্রহণের পাশাপাশি সকলকেই মাস্ক পরতে হবে। ঘন ঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। জনসমাবেশ থেকে বিরত থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। তবেই করোনার বিরুদ্ধে আমাদের জয় হবে।