নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সদর ষংবাদদাতা ) : ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবীতে রিতীকা নীট ওয়্যার লি: এর শ্রমিকবৃন্দরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছেন ।
১২ জুন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন শ্রমিকরা।
অবস্থান কর্মসূচীতে শ্রমিকরা জানান, গত ২ মাস যাবৎ মালিকদের কাছে ধর্না দিচ্ছি। প্রশাসনের কাছে সাহায্য চেয়েছি। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছেও গিয়েছি স্মারক লিপি জমা দিয়েছি। সবাই শুধু আশ্বাস আর ভরসাই দিয়ে গেছে। কিন্তু আশ্বাসে তো আর পেট ভরে না। ক্ষুধার জ্বালায় আমাদের পেট পোড়ায়। ছেলে-মেয়ের মুখে খাবার তুলে দিতে পারি না ঈদের জামা তো দুরের কথা।
আজকে আমরা এখানে সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছি। যে পর্যন্ত আমাদের এ দাবী মেনে নেয়া না হবে আমরা সেই পর্যন্ত আমাদের এ অবস্থান থেকে নড়বো না।
এ কর্মসূচীতে শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত রয়েছেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সহ সভাপতি আব্দুল হাই শরীফ,গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা কমিটির সভাপতি সেলিম মাহমুদ, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি এম এ শাহিন, সাধারণ সম্পাদ ইকবাল হোসেন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের জেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম রবিউল চৌধুরী, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির জেলা কমিটির আহ্বায়ক অঞ্জন দাস, রি-রোলিং মিল শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদিরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানিয়ে নেতৃবৃন্দরা বলেন, সামনেই ঈদ এ শ্রমিকরা কোথায় যাবে। এ বাংলাদেশে প্রচলিত শ্রমিক আইন অনুযায়ী বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং সাত কার্য দিবসের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা। কিন্তু শ্রম আইন লঙ্ঘন করে মালিকরা নিজের ইচ্ছেমত কারখানা পরিচালনা করছে।
মাসের পর মাস শ্রমিকের বেতন-ভাতা বকেয়া রাখা কতিপয় মালিকের বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আজকে এ রিতীকা ফ্যাশনওয়্যার লি: এর শ্রমিকরাও এ বদাভ্যাসের শিকার। এ পর্যন্ত বকেয়া বেতন প্রদানের মালিক অসংখ্য তারিখ দিয়েও পরিশোধ করেনি। এমনকি জেলাপ্রশাসকের কাছেও বকেয়া পরিশোধের দাবী জানিয়ে শ্রমিকরা স্মারকলিপি প্রদান করেছে। কিন্তু তাঁতেও কোনো কাজ হয়নি।
আর ৪দিন পরই ঈদ। ওদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আর তাই হতাশাগ্রস্থ এ শ্রমিকরা বকেয়া পাওনা আদায়ে রাজপথে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে।
রিতীকার মালিক শ্রমিকদের পাওনা টাকা আত্মসাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সামনে রোজার মাস ও ঈদ এই সময়ে শ্রমিকদের আন্দোলনের পথে ঠেলে দিয়ে রিতীকার মালিক গার্মেন্ট শিল্পে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
বর্তমান সময়ে পণ্যদ্রব্যের মূল্যে অনুযায়ী শ্রমিকদের ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা বেতন কিছুই না। কিন্তু তার ওপর যদি বেতন-ভাতা পরিশোধ করা না হয় তাহলে এতগুলো শ্রমিকের কী হবে একবার ভাবতে পারছেন। কিন্তু এ শ্রমিকদেরই কষ্টের টাকা দিয়ে মালিক শ্রেণী বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে।
এ সময় তারা কতিপয় মালিকের এরকম শ্রমিক হয়রানির বিরুদ্ধে শিল্প কারখানা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে রিতীকা ফ্যাশনওয়্যার লি: শ্রমিকদের ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবী জানিয়ে শিল্পের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।
