রাজনীতি মন থেকে করি, মাথা দিয়ে নয় : শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, রাজনীতি মন থেকে করি, মাথা দিয়ে নয়। যারা মন থেকে রাজনীতিটা করে তাদেরকে নানা সময় ধাক্কা খেতে হয়। সামনেও ধাক্কা আসবে এটা সত্যি। বোমা হামলার পর আহত অবস্থায় একটা কথাই বলেছিলাম, শেখ হাসিনাকে বাঁচান। তখন বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনার পরিবারের জন্য আইন পাস করতে নারায়ণগঞ্জে আমরা এই বোমা হামলা করেছিলাম। আমরা মরে গেলে কিছুই হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কারণ তিনি এখন আর আওয়ামী লীগের সম্পদ না। তিনি দেশের সম্পদ। ২৩ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা শিল্পকলা সম্মাননা পদক২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজে একটা ভবন হওয়ার কথা ছিল, জাহানারা ইমাম ভবন নয় আমার আব্বার নামে ভবন হওয়ার কথা ছিল। বিএনপির প্রিয়ডে নারায়ণগঞ্জে এক সভায় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এসেছিলেন। জাহানারা ইমাম সেদিন মুক্তিযুদ্ধের ঘাতকদের বিচার চেয়ে ছিলেন। জাহানারা ইমাম ফেরার সময় আমাকে ধরে গাড়ি পর্যন্ত দিয়ে আসতে বলেছিলেন। সেসময় একটা বিল্ডিং থেকে গুলি বর্ষণ হচ্ছিল আমাদের উপরে। গুলি প্রতিরোধ করেই মিটিং করেছিলাম। জাহানারা ইমাম সেদিন আমায় বলেছিল, আমার যেমন ক্যান্সার এই দেশটারো ক্যান্সার হয়েছে। এই দেশটাকো জড়িয়ে ধরো। দেশটাকে বাঁচাও। এরপর আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘোষণা দিলাম, নারায়ণগঞ্জে পবিত্র মাটিতে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার আলবদর শ্রেণির মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। সাইনবোর্ড এলাকায় রাজাকার এবং কুকুরের প্রবেশ নিষেধ ঘোষণা দিয়ে একটা সাইনবোর্ড টানানো হলো। পার্লামেন্টে একজন বলল, তোকে আমি দেখে নিবো। জানলাম, আমাকে মেরে ফেলা হবে। অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় ভেবেছিলাম, সামনে থেকে গুলি করে মারবে। ২১ বছর আগে জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে জাহানারা ইমাম ভবন করার কারণে কয়েকজনের কথায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে ঘোষণা দিয়েছিলাম। অবাঞ্ছিত ঘোষণার পরিনতি ছিল বোমা বিস্ফোণ।

তিনি প্রতিকী ফাঁসির মঞ্চের কথা উল্লেখ করে বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটা প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ করেছিলাম। যেদিন প্রতীকী অনশন করি, সেদিনই বোমা বিস্ফোণ হওয়ার কথা ছিল। আমার মঞ্চের পাশেই বিশাল বোম নিয়ে একজন ধরা পরেছিল। তা কি হয়েছে জানি না আমরা।

শামীম ওসমান বলেন, আমরা খুব সুখের ঢেকুর দিচ্ছি। সামনে সুখের ঢেকুর দেওয়ার সময় আসবে না। পলিটিক্স হলো ম্যাথমেটিক্স। যে ম্যাথামেটিক্স জানে না তার জন্য পলিটিক্স করাটা খুবই কঠিন। বঙ্গবন্ধু ম্যাথমেটিক্স জানতেন বলেই দেশ স্বাধীন করেছেন। শেখ হাসিনা জানেন বলেই এতো বড় অপশক্তির সাথে লড়াই করছেন। দেশের সব আন্দোলনেই বড় অবদান রেখেছে আমাদের নারায়ণগঞ্জ।

এমপি বলেন, অনেকে মানবাধিকার গণতন্ত্রের ডেফিনেশন দেন। সুশীল, অশীল, কুশীল কত মানুষ কথা বলেন। দেশটাকে ভালোবাসো। দেশ ভালো থাকলে সবাই ভালো থাকবে। বঙ্গবন্ধু শুধু আওয়ামী লীগের নয় পুরো জাতির। আর শেখ হাসিনা পুরো বাংলাদেশের সম্পদ।

সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো.মঞ্জুরুল হাফিজ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শামীম ওসমান বলেন, ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬, ৬৯ সালের আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলনসহ সব আন্দোলনের প্রভাব ছিল নারায়ণগঞ্জে। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়লেই আপনারা এটা জানতে পারবেন। এই নারায়ণগঞ্জের বায়তুল আমানে আওয়ামী লীগের প্রথম মিটিংয়ের কথা চিন্তা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যখন সেক্রেটারি করা হয় তখন তিনি জেলে ছিলেন। খন্দকার মোশতাকরা তখন থেকেই ষড়যন্ত্র করছিল। আমার দাদা তখন ধমক দিয়ে বলেছিলেন, ওই (বঙ্গবন্ধু) সেক্রেটারি হবে। সেটার বিরুদ্ধে তখন আর কেউ কথা বলার সাহস পায়নি। পরে তিনিই সেক্রেটারি হন।

add-content

আরও খবর

পঠিত