নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে তিন নারীকে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম(বার) পিপিএম (বার) নির্দেশে মূল আসামী ইউসুফ মেম্বার কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন দক্ষিন কলাবাগ এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সুপারের প্রেরিত এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম(বার) পিপিএম (বার) নির্দেশে রফিকুল ইসলাম তার টিম নিয়ে মূল আসামী ইউসুফ মেম্বার কে গ্রেফতার করেন। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, কেউ অপরাধ করে পার পাবে না। অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে। কোন সুপারিশ বা তদবির চলবে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ পেশাদারীত্বের সাথে কাজ করবে।
এদিকে তিন নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) ইউপি সদস্য ইউসুফসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী নারী ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী নারী ফাতেমা বাদী হয়ে ইউপি মেম্বার ইউসুফসহ নামীয় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনার বিস্তারিত জানতে বেলা ১২টায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফায়জুল কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম জেলা আদালতে আসেন। টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন, উপ পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) গাজী সালাম ও সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা।
এ সময় ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার ওরফে ফতেহকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয়। পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি কক্ষে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। ভুক্তভোগী ফাতেমা মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের কাছে তার উপর নির্যাতনের ঘটনা বিস্তারিত খুলে বলেন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নগুলোও দেখান তিনি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফায়জুল কবির সাংবাদিকদের জানান, ভুক্তভোগীর সাথে আলাপ হয়েছে। তার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনেছি। পরে বন্দরের ওসি সাহেবের সাথে আলাপ হয়েছে। যে ঘটনা ঘটেছে তা জামিন অযোগ্য অপরাধ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় মামলা করবেন। থানায় মামলা নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এই মামলা পরিচালনায় ভুক্তভোগীর সর্বাত্মক সহযোগিতায় পাশে থাকবে মানবাধিকার কমিশন।