নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : বয়স মাত্র ১৭ বছর। গাড়ির স্ট্যায়ারীং হ্যান্ডেল ধরে রেখেছে এমনই এক কিশোর। পায়ের নিচে থাকা ব্রেকটি র্স্পশ করা যার জন্য অনেকটাই কষ্টসাধ্যের। তারপরেও সে পেশাদার চালক। প্রতিদিনই হাজারো যাত্রী সাধারণকে সে গাড়িতে বহন করে আসা যাওয়া করছে মহাসড়কের পথে। এটাই নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়াস্থ রাইফেল ক্লাব হইতে লিংক রোড তথা সাইনবোর্ড পর্যন্ত চলমান লেগুনা পরিবহন চালকদের দৈনন্দিন অবস্থা।
শুধু তাই নয়, বিআরটিএ অনুমোদন বিহীন অসংখ্য লেগুনা অবাধে চলছে এই রুটে। যা চাষাড়াস্থ পুলিশ বক্সের কর্তব্যরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) সোহরাব অকপটে এ প্রতিবেদকের কাছে স্বীকারও করলেন। তিনি বললেন, এই রুটে এমন অসংখ্য লেগুনা গাড়ি আছে যার কোন নাম্বার প্লেট নাই। কিন্তু কেন নাই? এই প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি মূহর্তেই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। বললেন, ভিআইপি আসছে ভাই রাস্তা ক্লিয়ার রাখতে হবে।
এটা ছিল ২৭ অক্টোবর রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় রাইফেল ক্লাবের বিপরীতে লেগুনা স্ট্যান্ডের হালচিত্র। যেখানে গিয়ে চোখে পড়ল যাত্রী বোঝাই লেগুনার ড্রাইভিং সীটে বসে গাড়ি চালাচ্ছে ১৭ বছরের এক কিশোর। ওই গাড়িটির নাম্বার প্লেটও নেই। আর অপ্রাপ্ত বয়সের সেই কিশোর চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া তো বহুদূর। এতে যেকোন সময়ই ঘটে যেতে পারে মর্মান্তিক কোন সড়ক দূর্ঘটনা। অথচ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হলেও যাত্রীদের জীবন মৃত্যুর হ্যান্ডেল ধরেছে কিশোর চালক !
লাইন ম্যান জাকিরকে এ ব্যপারে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এত পুরনো গাড়িটিও নাকি অনটেষ্টের গাড়ি। তিনি দাবী করলেন এর নাম্বার প্লেট করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করা হয়েছে। তাও প্রায় ৬/৭ মাস পেরিয়ে গেছে। আর এই ৬/৭ মাস যাবত কোন প্রকার নাম্বার প্লেট ও কাগজপত্র ছাড়াই জনৈক জামিলের মালিকানাধীন এরুপ দুইটি লেগুনা গাড়ি সড়কে চলমান। যার একটি চলছে জামিল ওয়ান এবং অপরটি চলছে জামিল টু। যা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জানে বলেও দাবী করলেন ওই কিশোর চালকটি।
প্রতিবেদকের সামনে কিশোর চালক কর্তৃক চালিত এই জামিল ওয়ান লেগুনা গাড়িটি সম্পর্কে তাৎক্ষনিক কর্তব্যরত টিআই সোহরাবকে জানালে তিনি সাথে সাথে গাড়িটিকে জব্দ করে পুলিশ বক্সের সামনে এনে রাখেন। এই প্রতিবেদক যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে একই মালিকের জামিল টু গাড়িটিও জব্দ করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। টিআই এতে মাথা নেড়ে সম্মতি জানান কিন্তু শেষ পর্যন্ত খবর নিয়ে জানা যায়, অপর গাড়িটি তিনি জব্দ করেননি।
এ ব্যাপারে জানতে টিআই সোহরাবের মুঠো ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও পরে তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালেহ্ উদ্দিন আহামেদ বললেন, কাগজ ছাড়া কোন গাড়ি চলবে না। কিশোর চালক এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কে তিনি কোন মন্তব্য না করে শুধু বললেন, আপনি জানিয়েছেন আমি এ ব্যাপারে এ্যাকশন নিচ্ছি। এক্ষুনি টিআইকে বলে দিচ্ছি।