নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে দলীয় প্রতীক প্রত্যাশী সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ইতমধ্যে প্রচারণার দিকে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামীলীগের দুই চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী। প্রতিনিয়তই বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কাজের মাধ্যমে তাদরকে বেশ সরব দেখা যাচ্ছে। এদের মধ্যে একজন হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আরিফ মাসুদ বাবু। অপরজন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শাহ মো. সোহাগ রনি।
সম্প্রতি দু জনই নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গত ৫ মে দুপুরে মোগরাপাড়া কালা দরগা মাজার শরীফ জামে মসজিদে জোহর নামাজ আদায় শেষে আওলিয়াগনের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে শাহ মো. সোহাগ রনি তার নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছেন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। আর গত ৮ মে দুপুরে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আরিফ মাসুদ বাবু।
এদিকে একই দলের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুইজন হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে দলের নেতাকর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে। কেউ কেউ বলছেন দুজনই সরকারী দলের প্রার্থী হওয়ায় অন্যকোন প্রার্থী সুযোগ নিলে উভয়রই ভরাডুবি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূলের অনেকেই বলছে, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের চেইন অব কমান্ড নেই বলেই ১ দলের মধ্যে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কর্মীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে।
দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহকালে আরিফ মাসুদ বাবু’র সাথে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ শিপন সরকার, উপজেলা যুবলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী, সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি রফিকুল মাখা বাবু ও সাইফুল ইসলাম বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামাল নিলু সহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে, সোহাগ রনির সাথে তার বাবা সোনারগাঁ থানা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি শাহ কামাল তোতা, সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র প্রার্থী ছগির আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সাবেক সভাপতি, ধানমন্ডির মহিলা কাউন্সিলর শিরিন শারমিন, সোনারগাঁ সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও কৃষকলীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আরিফ মাসুদ বাবু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বস্ত সহচর সাবেক এমসি মরহুম সাজেদ আলী মিয়ার ছেলে, সাবেক সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোবারক হোসেনের ভাই ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ্ আল কায়সারের চাচা। তিনি মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের টানা দুইবারের চেয়ারম্যান।
আর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহ মো. সোহাগ রনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তার বাবা থানা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি শাহ কামাল তোতা। যিনি দুইবার মেম্বার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইতমধ্যে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদটির প্রতিটি গ্রামে সাধারণ মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা এবং ঈদ উপহার দিযে সোহাগ রনিও ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন মসজিদ এবং মাদ্রাসায় উন্নয়নের জন্য তিনি ব্যাপক অনুদান দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবারের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আরিফ মাসুদ বাবু বলেন, আমি ইউনিয়নবাসীকে এতো বছর সেবা দিয়ে আসছি। তাদের উপর আমার আস্থা আছে তারা আমাকে বিজয়ী করবে। তাছাড়া নেত্রীও আমাকে নিরাশ করবেনা। কারণ আমি এবং আমার পরিবারের সকলেই দলের জন্য করে যাচ্ছি। এরআগেও দলীয় প্রতীক পেয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছি। তাই এবারো দলীয় প্রতীক পাবো আমি শতভাগ আশাবাদি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শাহ মো. সোহাগ রনি বলেন, আমার নেত্রী আমাদের সকলের অভিভাবক। যিনি এরআগে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য কেউ কাজ না করে। কিন্তু বর্তমান যিনি আমার প্রতিদ্বন্দ্বি হচ্ছেন তিনি সেই নির্দেশ অমান্য করেছেন। তাই আমার ইউনিয়নবাসী এবং দলের সকলেই তাকে প্রত্যাখান করেছেন। সকলের চাহিদায় আমি ইউনিয়নবাসীর সেবক হতেই এবারে প্রার্থী হয়েছি। আর আমার বিশ্বাস নেত্রী আমাকে দলীয় প্রতীক দিবেন।
উল্লেখ্য যে, ৮ম ধাপে আগামী ১৫ জুন সারাদেশের ৩১ জেলার ৬১টি উপজেলার ১৩৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইবিএমের মাধ্যমে ভোট হবে। এসব নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে, বাছাই ১৯ মে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন ২৬ মে। আর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৭ মে।