নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : রাজধানীর গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাটে উদ্ধার কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার (২১) মরদেহ কুমিল্লায় তার মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে। ২৭ই এপ্রিল মঙ্গলবার বাদ আসর জানাজা শেষে কুমিল্লা শহরের টমছমব্রিজ কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মুনিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন চিকিৎসকরা। পরে স্বজনরা তার মরদেহ নিয়ে কুমিল্লার পথে রওনা হন। বিকালে শহরের উত্তর বাগিচাগাঁও এলাকায় নিজেদের বাড়িতে পৌঁছায় মুনিয়ার মরদেহবাহী গাড়ি। সেখানে স্বজনরা তাকে শেষ বিদায় জানান।
এদিকে গত ২৬ এপ্রিল সোমবার রাতে গুলশান-২ এর ১২০ নম্বর সড়কের ওই ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি রাজধানীর একটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। একাই থাকতেন ওই ফ্ল্যাটে। এক লাখ টাকা ভাড়ায় মাস দুয়েক আগে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন তিনি। তবে তার পরিবার থাকে কুমিল্লা শহরে।
মরদেহ উদ্ধারের পর রাতেই মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর-২৭। মামলার আসামি করা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে (৪২)। পরে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০ মে দিন ধার্য করেন।
অন্যদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলামের আদালত সায়েম সোবহান আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন সে বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল বোন নুসরাতকে ফোন করে কান্নাকাটি করেন মুনিয়া। তিনি প্রতারিত হয়েছেন বলে জানান বোনকে। এমনকি তাদের দ্রুত ঢাকায়ও আসতে বলেন মুনিয়া। সোমবার নুসরাত স্বজনদের নিয়ে বেলা ২টার দিকে কুমিল্লা থেকে ঢাকার পথে রওয়ানা দেন। আসার পথে বারবার মুনিয়ার ফোনে ফোন করলেও সাড়া মেলেনি।
সোমবার সন্ধ্যায় ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে মুনিয়ার পরিবার দরজা বন্ধ পায়। ধাক্কাধাক্কি করলেও দরজা খুলছিল না। এরপর পুলিশে খবর দেয়া হয়। ফ্ল্যাট মালিকের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দিয়ে পুলিশ দরজার তালা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
মরদেহ উদ্ধারের পর গুলশান থানার পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মুনিয়ার ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইসগুলো জব্দ করে।