নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : ৮টি মাদ্রাসার ৬৭৯ জন এতিম শিশুদের ২৫শ টাকা করে শবে বরাত থেকে আরম্ভ করে ৩০ রমজান পর্যন্ত (৪৫ দিন) খরচ বাবদ অনুদানের প্রায় ১৭ লাখ টাকার চেক তুলে দেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান । ১৯ই মার্চ শুক্রবার সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব প্রাঙ্গণে অবিভক্ত বাংলার এম এল এ এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য একুশে পদকপ্রাপ্ত খান সাহেব ওসমান আলীর ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এই অনুদান প্রদান করেন।
এ সময় সাংসদ সেলিম ওসমান তার বক্তব্যে বলেন, আমরা মৃত্যুবার্ষিকী নানা ভাবে করে থাকি। এবার থেকে পরিবর্তন। আমাদের পরিবারের অনেক সদস্য ছিলেন, আমার বাবা সহ মোট ১২জন সন্তান ছিলেন খান সাহেব ওসমান আলী সাহেবের। তার মধ্যে ২ জন বেচেঁ আছেন, তারা খুব অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। আমরা ৬ ফুফু, সবাই প্রয়াত হয়ে গেছেন। আমাদের চুতর্থ প্রজন্ম বেচে আছি। তার জন্য পরিবারের সকল সদস্য জন্য দোয়া প্রার্থনা জন্য এসেছি। আমরা চেষ্টা করবো, মাদ্রাসা এতিম খানায় যে সব ছেলে মেয়ের আছেন, সে সব সুনাগরিক বাংলাদেশ টা হাতে তুলে নিতে পারে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তারা যেন সোনার বাংলা গড়তে পারে। সবাই সব কিছু তুলতে পারে তা না। আমরা ভুলে হবে না, আমাদের ১২ আওলিয়া দেশ। অনেক বিপদ আপদ থেকে কিন্তু আমরা মুক্তি পাই। আজ যারা শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন, যে কোন বিপদ আপদে সাবধানতা অবলম্বন করবেন। এই ছোট বাচ্চা এরা যেন মানুষের মত মানুষ হতে পারে এই দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা যারা সমাজে আছি আমাদের জানাবেন, আমরা চেস্টা করবো সে সমাধান করার। আমি যতক্ষণ বেচেঁ আছি আমার এলাকার মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো সহযোগিতা করার চেস্টা করবো, তার জন্য এই আয়োজন। সে জন্য আমি চিন্তা করেছি, বড় বড় আয়োজন না করে ভবিষ্যত প্রজন্মদের জন্য এভাবে আয়োজন করা। এবং আমাদের পরিবারের যারা মৃত্যু হয়েছে তাদের মৃত্যুবার্ষিকী জন্য দোয়া প্রার্থনা চাইবো এভাবে। আমি আজকেই আমার সকল পরিবার সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করবো। হয় তো বা বছরের একদিন ওসমান পরিবারের জন্য দোয়া চাইবো। আমি চেস্টা চালাবো, এক একের জন্য মতামতে সিদ্ধান্ত নিবো। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এমন অনুষ্ঠান আমাদের ভালো লেগেছে।
তিনি আরো বলেন, ধর্মের পাশাপাশি অন্যান্য পড়াশুনা করলে আরো ভালো হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশে মাদ্রাসা ও এতিম খানা শিশুদের জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়া ব্যবস্থা করবেন। প্রয়োজনে আমরা মাদ্রাসা এতিম খানায় কম্পিউটার দিয়ে কম্পিউটার ল্যাব দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবো। সামনে পবিত্র মাহে রমজান। শবে বরাত থেকে আরম্ভ করে ৩০ রমজান পর্যন্ত আমাদের বাচ্চাদের যেন কোন রকমের খাবারের অসুবিধা না হন। আর বিত্তবান যারা আছেন যারা যেভাবে দিবেন, তারা সেভাবেই দিবেন। তাহলে দেখা যাবে বাচ্চারা পেটভরে খেতে পারবে। ওদের যেন খাবার দাবারে কোন অসুবিধা না হয়। ওরা যেন ঠিকমত ইবাদত করতে পারে এ কাজটা করবেন। অনেক সময় দেখা যায়, বাচ্চাদের দিয়ে চাঁদা উঠানো হয়। এই বাচ্চাদের যেন কোন রকম কষ্ট না দেয়া হয়। কারণ, দেশে শিশু আইন রয়েছে, সে দিকে আপনাদের নজর দিতে হবে। একজন এতিমের দোয়া সবার আগে কবুল হয়। আজ আমি এতিম, আমাদের এখানে অনেকে এতিম। আমরা নারায়ণঞ্জ জন্য দোয়া করি, আমার যেন বাংলাদেশের জন্য দোয়া করি, আমরা উন্নত দেশ হিসেবে দোয়া করি। আমরা প্রধানমন্ত্রী জন্য দোয়া করি। বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে, আমরা তার জন্য মন খুলে দোয়া করি। দেশের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তাদের জন্য দোয়া করি। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসে বাচ্চাদের জন্য সঠিক পরিচালনা করতে হবে। আমরা ভুলে গেছি করোনা ভয় আছে। পৃথিবী অনেক স্থানে না খেয়ে মরতে হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত কারণে আমাদের দেশে কেউ না খেয়ে মারা যায়নি। করোনা ভাইরাস আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। ভাইরাসে সচেনতামূলক পালন করতে হবে। আল্লাহ অশেষ রহমতে এই বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস মুক্ত হবে, ইনশা আল্লাহ।
মাদ্রাসা ও এতিম খানা শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে আহবান জানিয়ে সেলিম ওসমান বলেন, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হোক। সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও প্রয়োজনীয় সকল কিছু সেলিম ওসমান বহন করবেন জানিয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি ও রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খালেদ হায়দান খান কাজল, চেম্বারের পরিচালক ও সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি এহসানুল হক নিপু, নাসিক ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু ও নাসিক সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না সহ প্রমুখ।