নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : দেশের সরকার প্রধান যেখানে মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতিতে অবস্থান করছেন এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান যেখানে মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনা করেছেন সেখানে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার অন্তর্গত নাসিক ১৫নং ওয়ার্ড ভাসছে মাদকের জোয়ারে। বিশেষ করে ৬৬নং নয়ামাটি রোড এলাকাটি পরিনত হয়েছে মাদকের স্বর্গরাজ্যে। এমন কোন মাদক নেই যা এখানে পাওয়া যায়না। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে থানা থেকে মাত্র ১৫০ গজ দুরে এলাকাটির অবস্থান হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্যকে সচরাচর মাদক বিরোধী কোন অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায় না এলাকাটিতে। ভয়ংকর এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে।
জানা গেছে, সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে মাদককে না বলি, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি স্লোগানে ৬৬নং নয়ামাটি রোড এলাকার স্থানীয় যুবক ও মুরুব্বীরা মাদক নির্মূলে স্বোচ্চার ভূমিকা পালন করলেও বিগত কয়েকমাস যাবৎ বহিরাগত কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবকের সহযোগীতায় মাদক বিক্রেতাদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এলাকাটিতে মাদকের স্বর্গরাজ্য কায়েম করেছে। তাদের এহেন কর্মকান্ডে স্তব্ধ পুরো এলাকাবাসী।
এর অবশ্য কারনও আছে। মাদক ব্যাবসায় জড়িত এই সিন্ডিকেটকে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক শেল্টার দিয়ে রাখায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। তার ওপর মাদক ব্যাবসায়ীদের সাথে সদর মডেল থানার কতিপয় অসাধূ পুলিশ কর্মকর্তা সহ পুলিশ সোর্সদের সাথে রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। যে কারনে ইতিপূর্বে এলাকার যারাই মাদক ব্যাবসায়ী এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে উল্টো তারাই মাদক ব্যাবসায়ী হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে সেই গুটিকয়েক অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের রোষানলে পরে হয়রাণীর শিকার হয়েছে। যার জন্য এলাকাবাসী নীরব দর্শক হয়ে মুখ বুজে সব সহ্য করছে। এছাড়া আর করারই বা কি আছে। অবস্থাদৃষ্টে এলাকাবাসী মনে করেন, এই মাদক ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেটটি রুখবার যেন কেউ নেই।
কারা এই মাদক ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট? এরা হলো- ইয়াবা ব্যাবসায়ী ডিলার মোশারফ, পিতা: মৃত সেকান্দার আলী। ইয়াবা ও ফেনসিডিল ব্যাবসায়ী মো: ঝিনকা, পিতা: মৃত মোহাম্মদ আলী। ইয়াবা ব্যাবসায়ী ইসলাম, পিতা: মোঃ মাসুম মিয়া। ইয়াবা ব্যাবসায়ী হারুন, পিতা: নান্নু মিয়া। ইয়াবা ব্যাবসায়ী রাজা, পিতা: খসরু মিয়া। ইয়াবা ও ফেনসিডিল ব্যাবসায়ী সেলিম, মাতা: আমেনা বেগম। ইয়াবা ও ফেনসিডিল ব্যাবসায়ী বাবুল, পিতা: বাবুল মিয়া। ইয়াবা ও ফেনসিডিল ব্যাবসায়ী আশরাফ, পিতা: জব্বার মিয়া। ইয়াবা ব্যাবসায়ী কার্তিক, পিতা: মৃত অর্জুন। ইয়াবা ব্যাবসায়ী রনি কসাই, পিতা: জামাল কসাই। ইয়াবা ব্যাবসায়ী আনিছ, পিতা: সরল খাঁ। সহযোগী আকাশ- পিতা: মালুয়া, আশিক- পিতা: মুন্না, পারভেজ- পিতা: বুছসা, নয়ন- পিতা: নান্নু।
মাদক ব্যাবসায়ীদের উক্ত নামের তালিকার মধ্যে কয়েকজন ইতিপূর্বে র্যাব ও পুলিশের কাছে একাধিকবার মাদক বিক্রি করা অবস্থায় গ্রেফতার হলেও সম্প্রতি এরা আবারো প্রকাশ্যে শুরু করেছে মাদক ব্যাবসা। এমন পরিস্থিতে অত্র এলাকার জনগন তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই উদ্বেগজনক অবস্থায় দিন যাপন করছেন। তারা মনে করেন, আগামী দিনে সুন্দর ভবিষ্যত ও নতুন প্রজন্ম এবং উদীয়মান যুবকদের কথা চিন্তা করে এসব মাদক ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কোন বিকল্প নেই। তাই তারা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দেশের এলিট ফোর্স র্যাব সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেছেন। এখন দেখার বিষয় ১৫নং ওয়ার্ডের ৬৬নং নয়ামাটি রোডের ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এই মরননেশা মাদকের বিষাক্ত ছোবল থেকে তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচাতে পারেন কিনা।