নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে একের পর এক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রথমে নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশের বিরোধীতা আর এখন ভোটগ্রহণের ভেন্যু নিয়ে বিতর্ক। আর এমন পরিস্থিতিতে সংস্লীষ্টরা মনে করছেন ভোট বর্জন করবে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
সূত্র জানায়, ২৯ জানুয়ারি আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে নতুন বার ভবনে। কিন্তু ২৬ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশান আখতার হোসেনসহ অন্য সদস্যরা স্থান পরিবর্তন করে নতুন স্থান নির্ধারণ করেন জজ কোর্ট ভবনে। এ খবর এদিন ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বিএনপি পন্থী আইনজীবী প্যানেলের প্রার্থীরা। পরে বিকেলে তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার আখতার হোসেনের সাথে দেখা করতে যান এবং এর কৈফিয়ত চান।
সূত্র আরও জানায়, ভোটগ্রহণের স্থান পরিবর্তন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন কোনো প্যানেলের সাথেই আলোচনা না করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিজেদের খেয়াল খুশি মত। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বিএনপি প্যানেল। তারা নির্বাচন বয়কট করারও ঘোষণা দেন।
নির্বাচনে ভোটগ্রহণের ভেন্যু পরিবর্তন করায় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে বিএনপির আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এড. আখতার হোসেন। বিএনপির আইনজীবীরা বলছেন, নির্বাচন হবে নির্মাণাধীন বার ভবনের নিচতলায়। গত এজিএমে এটাই বলা হয়েছিল। এজিএমেই এটা পাশও হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার কথা বলে সেই ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়েছে। ভেন্যু পরিবর্তনের বিষয়টি মানছেন না তারা। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির আইনজীবীরা।
বিএনপি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এড. সরকার হুমায়ূন কবির বলেন, এভাবে নির্বাচন পরিচালনা হয় না। একের পর এক বিতর্ক তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কোনোমতেই সুষ্ঠু হবে না।
বিএনপি পন্থী আইনজীবী প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ জাকারিয়া বলেন, ভোটগ্রহণের স্থান পরিবর্তন করতে হলে আমাদেরকে নিয়ে বসতে হবে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে নতুন স্থান ঠিক করবে। কিন্তু সেটা না করেই একক সিদ্ধান্ত অনুযায়ি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটা করতে পারেন না। সংবিধানেও এমনটি নেই। তারপরও তারা আওয়ামী লীগ পন্থী আইনজীবী প্যানেলকে সুবিধা দিতে এমনটি করেছেন।
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. আখতার হোসেন বলেছেন, আমি সকালের দিকে জজ সাহেবের রুমে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে বলেছি, এখানে (জজ ভবন) যদি নির্বাচন হয় তাহলে আমি এর নিরাপত্তার দায় দায়িত্ব নিতে পারবো না। পরে ইসি কমিটির অন্য চারজনকে নিয়ে বসা হয়েছে। তখন তারা বলেছেন, নতুন বার ভবনে নিরাপত্তার অভাব, সেখানে আমরা নির্বাচন করতে পারবো না। সেখানে নির্বাচন হলে আমরা পদত্যাগ করবো।
তিনি বলেন, আমি চেয়েছি বারের নিচের তলায় নির্বাচন হোক। কিন্তু তারা কেউ মানেনি। তখন বলেছিলাম, তাহলে আগে শিডিউলে স্বাক্ষর কেন করেছো? কেন এখন তোমরা ভেন্যু পরিবর্তন করছো। তখন তারা বলছে, এটা না হলে আমরা নির্বাচন করতে পারবো না।
সংবিধান প্রসঙ্গে এভাবে ভেন্যু পরিবর্তন করার নিয়ম নেই স্বীকার করলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার আখতার হোসেন বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ভোটের স্থান পরিবর্তন করা যাবে। আমি কোনো পক্ষের নই, নিরপেক্ষ।