নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে টিকাদানে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও টাকা দিলেই টিকা মিলে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন। ১২ই আগস্ট বৃহস্পতিবার উল্লেখ্যিত হাসপাতালে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
তবে এর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই টিকা নিতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বৃহস্পতিবার মর্ডানা টিকা ১ম ডোজ এর শেষ দিন ছিলো বলে টিকা কেন্দ্রে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজারো নারী-পুরুষ ও বৃদ্ব বয়সী মানুষের র্দীঘ লম্বা লাইন ছিল যা সড়ক বা রাস্তা পর্যন্ত গড়ায়। তাছাড়া গুটি কয়েক পুলিশ সদস্যকে হিমশিম খেতে হয় এই পরিস্থিতি সামাল দিতে। এতে সকালে হাসপাতালে টিকা নিতে আসা সাধারন মানুষদের মধ্যে চরম ভুগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে পুরুষ দালালের পাশাপাশি নারী দালাল চক্রের প্রভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই দালালদের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে গেছে। আর এমন অনিয়মের কারণে দফায় দফায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সদর জেনারেল হাসপাতালে। এ সময় পুলিশের সাথে দালালদের কয়েক দফা ধাক্কাধাক্কিও হয়। তাছাড়া মোবাইল দিয়ে চিত্র তুলতে গিয়ে ধরা পড়লে দালাল অভিযুক্ত দুই নারী পুলিশ ও জনতার ধাওয়ায় দ্রæত সেখান থেকে পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি তারা।
এদিকে শুধু মাত্র যারা অনলাইনে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন তাদের টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অনেকে আবার এসেছেন এই ভেবে আজকে গণটিকা দেওয়া হবে। এই নিয়ে বিপাকে পড়েন অনেক। অনেকে বলছেন তাদের মুঠোফোনে এসএমএস এ বার্তা এসেছে আজকে টিকা দেওয়ার জন্য কিন্তু ডাক্তাররা বলছেন তাদের রেকর্ডের সাথে মিল নেই।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মর্ডানা টিকা ১ম ডোজ নিতে আসে নারী-পুরুষ ও বৃদ্ব বয়সী সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে লাইন গুলো দীর্ঘ হতে দেখা যায়।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে হাসপাতাল থেকে ঘোষণা আসে যে টিকা শেষ হয়ে গেছে যার ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরনের চাপা আতংক ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দুপুরের পর জানা যায় ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ২য় তলার লেবার ওর্য়াড ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২০০ টাকা দিলেই মর্ডানার টিকা পাওয়া যায়। তাছাড়া সরেজমিনে হাসপাতালে ২য় তলায় পরিদর্শনে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স ও ভোলেন্টিয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত দরজা বন্ধ করে দেয় কিন্তু সেখানে মানুষে আনাগোনা লক্ষ্য করার মতো ছিলো।
ভুক্তভোগীদের বরাতে জানা যায়, সরকারি ভাবে করোনার টিকা বিনামূল্যে প্রদানের নির্দেশনা থাকলেও হাসপাতালের ডাক্তার, ভোলেন্টিয়ার ও নার্সদের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে টিকাদান করা হচ্ছে।
গাড়ীর চালক মোস্তাক আহমেদ বলেন, আমি পেশা একজন সিএনজি চালক। আমার বয়স ৫৩ বছর। আজ সকাল ১১ টার দিকে এখানে আসছি কিন্ত এখন সময় দুপুর আড়াইটা। এখন পর্যন্ত আমি টিকা নিতে পারি নাই।
গাড়ীর চালক মোস্তাক অভিযোগ করে বলেন, তিন তলা সিজার রুমে যারা নার্স, স্বেচ্ছাসেবক আছে তারা তাদের পরিচিত ব্যাক্তি ও আত্মীয়-স্বজনদের আগে টিকা দিচ্ছে। আমরা সেখানে ১০-১২ জন গিয়েছিলাম। পরে আমাদের বলে টিকা নাই, আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি সেটা তারা দেখছে না। তাদের বললেই বলে টিকা নাই, কিন্তু তারা বাইরে কেচি গেইট আটকে রেখে তারা টিকা দিচ্ছে বলে জানান ওই গাড়ীর চালক।
সোহাগ (২৮) নামে আরেক ব্যাক্তি জানান, এসে দেখি অনেক লম্বা লাইন তারপর কিছুক্ষণ এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে জানতে পারলাম যে ডায়রিয়া ওর্য়াডে টাকা দিলেই করোনা টিকা দেয়, এক পর্যায়ে সেখানে হৈই চৈই শুরু হলে আমি সেখান থেকে চলে আসি।