ভাঙা স্যুটকেস থেকে এখন বের হচ্ছে শপিং মল, হাজার কোটি টাকা : শেখ হাসিনা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাঙা স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি থেকে আগে কোকো-১, ২ নামে জাহাজ বেরিয়েছে। এখন বের হচ্ছে শপিং মল, ফ্ল্যাট, হাজার হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের ব্যাংকের থেকে ৯৫০ কোটি টাকা যারা লুটে নিয়ে গেছে, তারা আবার স্বপ্ন দেখে ক্ষমতায় যাওয়ার, রাজনীতি করার। সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত সৌদি আরবের ধনকুবেরদের কাছে ব্যবসায়ে লগ্নির জন্য জিয়া পরিবারের টাকা প্রদান-সংক্রান্ত দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ৪৭তম বিজয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী দুর্নীতিবাজ, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যাকারী এবং যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দানকারী বিএনপিকে কখনো বাংলার মানুষ ভোট দেবে না, এরা আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। জনগণই ক্ষমতায় আসতে দেবে না তাদের। স্বাধীনতার সুফল নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। আমরা দেব না। দৃপ্তকণ্ঠে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বাসস।

শেখ হাসিনা বলেন, সিঙ্গাপুরের কোর্ট এবং আমেরিকার ফেডারেল কোর্টই বলেছে খালেদা জিয়ার ছেলেরা মানি লন্ডারিং করেছেন। এটা তাদের কাছেই ধরা পড়েছে, যে টাকা আমরা উদ্ধার করেছি। কাজেই এরা কোন মুখে জনগণের কাছে গিয়ে দাঁড়াবে। কোন মুখে জনগণের কাছে ভোট চাইবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতি এখন বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলছে, আগামী দিনেও মাথা উঁচু করে চলবে, সেটাই হবে আমাদের আজকের দিনের প্রতিজ্ঞা। স্বাধীনতার সুফল আজকে বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। এই সুফল নিয়ে বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কখনো কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। ছিনিমিনি খেলতে আমরা দেব না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান একাই নয়, খালেদা জিয়া, এরশাদ—সবাই খুনি ও পাকিস্তানি বাহিনীর দোসরদের খোশামোদি-তোষামোদি করেছেন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে তো আরও একধাপ ওপরে উঠলেন—এদের হাতে তুলে দিলেন লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত পতাকা, এদেরকে বানালেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা জনগণের কাছে ওয়াদা করেছিলাম, ক্ষমতায় গিয়ে এই অপরাধীদের বিচার করব। আমরা সেই বিচার করেছি।

পত্রিকায় প্রকাশিত সৌদি ধনকুবেরদের কাছে ব্যবসায়ে লগ্নির জন্য জিয়া পরিবারের টাকা প্রদান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাঙা স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি থেকে আগে কোকো-১, ২ নামে জাহাজ বেরিয়েছে। এখন আবার শপিং মল, ফ্ল্যাট ও হাজার হাজার কোটি টাকা বের হচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যাংকের থেকে ৯৫০ কোটি টাকা যারা লুটে নিয়ে গেছে, তারা আবার স্বপ্ন দেখে ক্ষমতায় যাওয়ার, রাজনীতি করার। তিনি বলেন, এই দেশের যারা আর্থসামাজিক উন্নয়ন চান, এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চান, এই দেশের মানুষ যেন ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত হয়, বিজ্ঞানশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উন্নত প্রজন্ম হয়ে গড়ে ওঠে যাঁরা চান, তাঁরা কখনো ওই যুদ্ধাপরাধীদের দোসর মানুষ হন্তারকদের ভোট দিতে পারেন না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন। আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে শাহীন রেজা নূর প্রমুখ বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভায় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, মহানগর, ওয়ার্ড এবং ইউনিট পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত