নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত স্কুল গুলোর মধ্যে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বাকী ৩টি স্কুলের উদ্বোধন এবং এলাকার ভবিষ্যত উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে সংসদ সদস্যের সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার ১৪ জানুয়ারী দুপুরে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় অবস্থিত সংসদ সদস্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উইজডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেড এর সম্মেলন মঞ্চে মত বিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মত বিনিময় সভাটিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের সবর উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিনত হয়।
সভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সেলিম ওসমান বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদ আর মাত্র ৮মাস রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে এলাকার উন্নয়নে আমার স্বপ্ন গুলো বাস্তবায়ন করতে চাই। সম্পূর্ন বাস্তবায়ন না করতে পারলেও শুরু করে যেতে চাই। তার জন্য আমার আপনাদের সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন। বিশেষ করে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের সহযোগীতা সব থেকে বেশি প্রয়োজন। আমি আগেই ঘোষণা দিয়েছি আগামী নির্বাচন করবো এমন কোন চিন্তা আমার নেই। জনগনকে সন্তোষ্ট করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। জনগনকে সন্তোষ্ট করতে পারলেই আগামী জুন মাসে নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আমার সিদ্ধান্তের কথা জানাবো। সে সময়টুকু পর্যন্ত আপনাদের সকলের প্রতি অনুরোধ এবং আহবান থাকবে আপনারা সকলের সম্মিলিত ভাবে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাবেন। নিজেদের মাঝে কোন প্রকার ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করবেন না। অতীতে আমাদের নিজেদের ভুলের কারনে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চার্য আদমজী জুট মিল নারায়ণগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে। লক্ষ্মী নারায়ণ জুট মিল, বাওয়া জুট মিল, র্যালী বাদ্রাসের মত বড় বড় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন পাটের ব্যবসার উপর খুলনা রংপুরের ব্যবসায়ীরা সিআইপি পায়। নারায়ণগঞ্জ বর্তমানে নীটওয়্যারের উপর দাড়িয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছেন। উনার দিক নির্দেশনায় বর্তমানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির কারনে উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাঘাত হচ্ছে। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে সকলে সম্মিলিত ভাবে এলাকার উন্নয়নে পারস্পারিক সহযোগীতা নিয়ে কাজ করবেন।
আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া ও পুলিশ সুপার মঈনুল হক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। পরে এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তি অর্থায়নে নির্মিত নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয় ও শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয় যেখানে শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে পড়ালেখা করানো হচ্ছে। উক্ত দুটি স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের আগামী ৩ মাসের বেতনের টাকা স্কুল পরিচালনা কমিটির হাতে অগ্রিম প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া ও পুলিশ সুপার মঈনুল হক স্কুল দুটির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দদের হাতে চেক তুলে দেন।
বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন।
এ সময় তিনি বিগত সাড়ে ৩ বছরে এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়ন এবং সরকারী ভাবে সদর ও বন্দর এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন। যার মধ্যে, এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ৭টি ইউনিয়নে ৭টি স্কুল নির্মাণ সহ শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন, নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয় ও শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ন বিনা খরচে লেখাপড়া, বন্দরে কদম রসুল কলেজকে সরকারীকরণ করার লক্ষ্যে দলিল সম্পাদন, নারায়ণগঞ্জ কলেজে নির্মনাধীন নতুন ১০তলা ভবনের ৬তলার ছাদ ঢালাই সম্পন,œ নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলে কম্পিউটার ল্যাব নির্মাণ, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বন্দর খেয়াঘাট টোল ফ্রি, কইভাবে ২০১৭ সালে নবীগঞ্জ খেয়াঘাটটিও টোল ফ্রি করে দেওয়া সহ বন্দর খেয়াঘাট দিয়ে উন্নত যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা , বন্দরে নিজস্ব অর্থায়নে সমরক্ষেত্র মাঠের উন্নয়ন, ৪০২জন মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে সম্মাননা প্রদান, ও ১০০৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান, ৫০০জন নারীকে ১টি সেলাই মেশিন ও ৫ হাজার টাকা চলমান মূলধন ও ৪৮৪জন তরুণ তরুণীকে সাবলম্বী করতে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে মূলধন প্রদান, কল্যান্দিতে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ৫০ লাখ টাকা প্রদান, গত ৪টি ঈদে ১লাখ ১৬ হাজার পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রীর প্যাকেট বিতরন, গত ২ বছরের শীত মৌসুমে ৭২ হাজার পিছ শীতবস্ত্র শীতার্তদের মাঝে বিতরণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ৭৫টি ল্যাপটপ প্রদান, ১ লাখ গাছের চারা বিতরন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফরে যাওয়ার জন্য ২টি বাস প্রদান, বন্দর থানা পুলিশকে ২টি পিকাপ ভ্যান প্রদান, ব্যক্তিগত উদ্যোগে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ২টি অ্যাম্বুলেন্স, ডিপ টিউবওয়েল নির্মাণ, ডিজিটাল সম্মেলন কক্ষ, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, সরকারী ভাবে হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করতে ১৫তলা কমপ্লেক্স ভবন, শারদীয় দূর্গা পূজায় গত ৪ বছরে পূজা মন্ডবে আর্থিকভাবে সহযোগীতা, মসজিদ মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহযোগীতা, সরকারী ভাবে বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, শহরের পুরাতন কোর্ট এলাকায় শিল্পকলা একাডেমী ভবন, নারায়ণগঞ্জ-কমলাপুর রুটে ডাবল রেললাইন, মদনগঞ্জ-সৈয়দপুর দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে চলমান সেতুর নির্মাণ কাজ, নবীগঞ্জ দিয়ে আরো একটি সেতুর প্রস্তাবনা, নবীগঞ্জে সেতু নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ এবং ৫নং ঘাট- সেন্ট্রাল খেয়াঘাট দিয়ে ফেরী চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মান, মদনগঞ্জে শান্তিরচলে দেড় হাজার একর জমির মধ্যে নীটপল্লী নির্মাণ মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দের উন্নয়নের মেগা প্রকল্প বন্দর উপজেলায় নির্মানাধীন নতুন কমপ্লেক্স ভবন সহ সরকারী ভাবে টিআর কাবিখা ও বিভিন্ন প্রকল্পে উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরেন।
আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া, জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়নগঞ্জ জেলা ইউনিটের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, সহ সভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল, পরিচালক ফারুক বিন ইউসুফ পাপ্পু, বিকেএমইএ সহ সভাপতি প্রথম সহ সভাপতি মনসুর আহম্মেদ, দ্বিতীয় সহ সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, সহ সভাপতি(অর্থ) হুমায়ন কবির খান শিল্পী, সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল হক, পরিচালক জিএম ফারুক, মজিবুর রহমান, শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, সাইফুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাসমিন বিনতে শেখ, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারী, দৈনিক শীতলক্ষ্যা পত্রিকার সম্পাদক আরিফ আলম দিপু, দৈনিক ডান্ডিবার্তা পত্রিকার সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাদল, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল সাগর, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ হান্নান, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাপ হোসেন সহ ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ সহ অন্যান্যরা।