নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক এবং তা ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিতে একাধীক বার ধর্ষণ, অতঃপর সইতে না পেরে নিজ শরীরে অগ্নি সংযোগ করে ঢামেকের বার্ণ ইউনিটে মৃত্যু শয্যায় শায়িত ১৬ বছরের এক কিশোরী। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা পারভীন বেগম বাদী হয়ে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) ফতুল্লা মডেল থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান থানার কংসপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খোকা মিয়ার ছেলে লম্পট মৃদুল (২২), তার মা মোসাঃ পারুল বেগম (৪২) এবং মৃদুলের বন্ধু মোঃ মাহফুজ (২৪)। তারা বর্তমানে ফতুল্লার কাশীপুর হাটখোলা সিকদার বাড়ী এলাকায় বসবাস করে আসছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোসাঃ পারভীন বেগম ফতুল্লা থানাধীন কাশিপুর খিলমার্কেট এলাকার মোঃ ইউসুফ মিয়ার স্ত্রী। গত দু’বছর পূর্বে তার মেয়ে জেএসসি পরীক্ষা শেষে স্কুলে পূনরায় ভর্তি না হয়ে বাড়িতেই অবস্থান করছিল। এরই মাঝে লম্পট মৃদুল (২২) পারভীন বেগমের মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন সহ বিভিন্ন ভাবে ফুসলিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে লম্পট মৃদুল এবং তা গোপনে ভিডিও ধারণ করে মৃদুলের বন্ধু অভিযুক্ত মাহফুজ। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিতে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় ওই কিশোরীকে।
একপর্যায়ে সে তার মায়ের কাছে ঘটনা প্রকাশ করলে তার মা পারভীন বেগম লম্পট মৃদুলে মা পারুল বেগম’কে জানান। কিন্তু অভিযুক্ত পারুল বেগম তার ছেলের কোন প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো পারভীন বেগমকে শাসিয়ে দেন। একই ভাবে গত শুক্রবার বিকেলে অভিযুক্ত পারুল বেগম ওই কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে। সেই সাথে এবিষয়ে সমাজে মুখ-খুলতে নিষেধ করে তাকে আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করে। এর কিছুক্ষন পর অভিমানে রান্না ঘরে গিয়ে শরীরে কেরাসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ওই কিশোরী।
এদিকে, অগ্নিদগ্ধ ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আগুনের কারণে তার শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে সে।
কিশোরীর মা পারভীন বেগম জানান, মৃদুলের সকল কু-কর্ম আমার মেয়ে আমাকে জানিয়েছে। আমি মৃদুলের মাকে বিষয়টি জানালে তার মা উল্টো আমাকে শাসিয়ে দেয়। এতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে আমার বাসায় এসে আমার মেয়েকে গালাগাল করে আত্মহত্যা করতে প্রলুব্ধ করেছে। আর তাই আমার মেয়ে অভিমানে এবং আত্মমর্যাদাহীনতায় ভূগে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আমি এর দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। যাতে করে আর কোন মেয়ের এমন পরিনতি না ঘটে।
অভিযোগ তদন্তকারী অফিসার আতাউর রহমান জানান, থানায় অভিযোগ নেয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের তৎপরতা চলছে।