নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী শনিবার (১০ মে)। এবারের নির্বাচনে প্রার্থী আছেন ৩৮ জন। বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বে ৩৫ প্রার্থীর প্যানেলের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন মাত্র ৩ জন। ফলে এটি একপ্রকার নিয়ম-রক্ষার নির্বাচন বলছেন ব্যবসয়ীরা।
বিকেএমইএ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয় ১৯ এপ্রিল।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঢাকার শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার ও নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ’র ভবনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৫৭২ জন।
বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: মোহাম্মদ হাতেম, মনসুর আহমেদ, ফজলে শামীম এহসান, মো. সামসুজ্জামান, অমল পোদ্দার, মো. মোরশেদ সারোয়ার, মোহাম্মদ রাশেদ, আশিকুর রহমান, মো. জামাল উদ্দিন মিয়া, খন্দকার সাইফুল ইসলাম, রতন কুমার সাহা, নন্দ দুলার সাহা, মো. আব্দুল হান্নান, ইঞ্জিনিয়ার ইমরান কাদের তুর্য, ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ, মোহাম্মদ জাকারিয়া ওয়াহিদ, মিনহাজুল হক, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন রিপন, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, গাওহার সিরাজ জামিল, আহমেদ নূর ফয়সাল, মোহাম্মদ শামসুল আজম, ফওজুল ইমরান খান, মোহাম্মদ সেলিম, আহসান খান চৌধুরী, মো. শাহরিয়ার সাইদ, রাজীব চৌধুরী, মো. মহসিন রাব্বানি, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, মো. মনিরুজ্জামান, এম. ইসফাক আহসান, মো. মামুনুর রশিদ, রাকিব সোবহান মিয়া, আব্দুল বারেক ও মো. ইয়াসিন। এই প্যানেলের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- জিএম হায়দার আলী, মো. মনির হোসেন শেখ ও মো. শাহজাহান আলম।
নিয়ন্ত্রণ রয়ে গেছে ওসমান পরিবারের হাতেই
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১৪ বছর ধরে বিকেএমইএ’র নেতৃত্বে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। বিগত সময়গুলোতে তার প্যানেলের বাইরে কেউ মনোনয়ন জমা দেয়ার সুযোগ পেতেন না।
গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি বিকেএমইএ’র সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং মোহাম্মদ হাতেমকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেন। এরপর থেকে হাতেম সংগঠনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অন্যদিকে, এবারও হাতেমের ঘোষিত প্যানেলের অধিকাংশ প্রার্থীই সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ওসমান পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠতার’ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হাতেম।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে বিকেএমইএ’র সর্বশেষ নির্বাচনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন সেলিম ওসমান। এরপর মোহাম্মদ হাতেম তার প্যানেল থেকেই নেতৃত্বে আসেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনীতির বাস্তবতা পাল্টালেও বিকেএমইএ’র নির্বাচনে সেই প্রতিযোগিতার আমেজ আসেনি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী তিন জন থাকলেও সংখ্যায় তারা অনেকটাই নগণ্য। এমন পরিস্থিতিতে হাতেমের প্যানেলের জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
তারা বলছেন, হাতেমের ৩৫ জনের প্যানেলের বিপরীতে থাকা ৩ প্রার্থী যদি এবার জিতেও যায় তাও হাতেম প্যানেলের ৩২ জন নির্বাচিত হবেন। এক্ষেত্রে বোর্ড গঠনের জন্য সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত করতে কোনো বাধাপ্রাপ্ত হবেন না হাতেম প্যানেল। অর্থ্যাৎ আবারও সভাপতি যে হাতেম হচ্ছেন তা একপ্রকার নিশ্চিত।
ফলে এবারের নির্বাচনকেও ‘নিয়ম রক্ষার নির্বাচন’ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।