নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলায় বাবার বকুনির ভয়ে মায়া আক্তার (১২) নামের এক কিশোরী গলায় ফাসঁ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ২রা আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার পাগলা পূর্ব পারা বৈরাগী বাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোরী মায়া আক্তার ফতুল্লা থানাধীন পাগলা পূর্ব পাড়া বৈরাগী বাড়ীর জামাল হাজারীর মেয়ে।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসাপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় ৩ আগস্ট বুধবার নিহত কিশোরীর বাবা জামাল হাজারী বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে নিহত কিশোরীর বাবা জানায়, তিনি একজন কভার ভ্যান চালক। নিহত মায়া আক্তার স্থানীয় একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী। মঙ্গলবার বিকালে নিহত মায়া আক্তার তাকে ফোন করে বলে তার জন্য তারা দুপুরের খাবার না খেয়ে বসে আছে। তাই তাড়াতাড়ি বাসায় ফেরার জন্য তাকে তাগিদ দেয়। সেও দ্রুত বাসায় ফিরে এসে মেয়েদের কে নিয়ে এক সাথে দুপুরের খাবার খায়। খাবার শেষ করে বড় মেয়েকে একটি পান তৈরি করে দেওয়ার জন্য বলে। পান তৈরি করতে গিয়ে বড় মেয়ে দেখতে পায় ছোট বোন নিহত মায়া আক্তার মাটির ব্যাংক থেকে কাঠি দিয়ে টাকা বের করার চেস্টা করছে। এতে করে বড় মেয়ে নিহত মায়া আক্তার কে বলে তোকে না বাবা নিষেধ করেছে। তুই আবারো তা করছিস। আমি বাবাকে বলে দিবো। বড় মেয়ে পান তৈরি করে নিয়ে এলে তিনি বড় মেয়েকে বলে এ বিষয়ে যেনো ছোট মেয়ে মায়া আক্তার কে কিছু না বলা হয়। বেশ কিছুক্ষন পর তিনি বাসা থেকে বের হওয়ার পূর্বে ছোট মেয়ে মায়া আক্তার কে ডাক দেয় আরো একটি পান তৈরি করে দেওয়ার জন্য। মেয়েটি তখন ভয়ে তার সামনে দিয়েই বাথরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘক্ষন বাথরুম থেকে বের না হওয়ায় সে বাথরুমের দরজার নিচ দিয়ে তাকিয়ে দেখতে পায় যে দাঁড়ানো রয়েছে তার মেয়ে। ডাকাডাকি করলেও কোন সারা শব্দ না পেয়ে পেছনের গিয়ে ভ্যানটিলেটার দিয়ে দেখতে পায় তার মেয়ের হাত-পা কাপছে। তৎক্ষনাত পাশের রুম থেকে হাতুড়ি নিয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙে মেয়ে কে উদ্ধার করে মাতুয়াইল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের কিশোরীর পরিবারের বরাত দিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম জানান, মূলত বাবার ভয়েই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে বলে আপাতত মনে হচ্ছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে।