নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : ভুক্তভোগীর অনুসন্ধানে বন্দর এসএ হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াকশপ থেকে একটি চোরাই ট্রলার উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বন্দর থানার নবীগঞ্জ বুধবারিয়া হাট সংলগ্ন এলাকাস্থ ওর্য়াকশপটিতে নোঁঙ্গর করে বেধে রাখা অবস্থায় মায়ের দোয়া পরিবহন নামে চুরি হয়ে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়। তারা হল, এসএ হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াকশপ এর ওর্য়াকার বন্দর থানার নবীগঞ্জ এলাকার মৃত আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে জুম্মান (২৮) ভোলা জেলার একই থানার চেদুর চর এলাকার আব্দুল জলিল মিয়ার ছেলে সাগর (৩০) ও মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার বাংলা বাজার এলাকার আলম খানের ছেলে ইয়াছিন (৩৫)।
তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ চোরাই ট্রলার বেঁচাকেনার সাথে জড়িত মূলহোতার এখনো অধরা রয়েছে। এসএ হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াকশপের লাগানো সিসি ক্যমেরায় শনাক্ত হলেও এখানকার অনেকেই এখন পুলিশকে ম্যনেজ করে কেটে পড়ছে। যাদের মধ্যে একজনের নাম হৃদয় বলে জানা যায়। সে ঘটনাস্থলেও পুলিশের সাথে আতাত করে হাঁটাচলা করছিল বলে প্রতক্ষদর্শী কয়েকজন জানায়। এছাড়াও উপস্থিত সাংবাদ কর্মীরাও এ বিষয়টি জানালে এ বিষয়ে অদৃশ্য কারণে কর্ণপাত করেনি ঘটনাস্থলে আসা বন্দর ফাঁড়ি ইনর্চাজ মোস্তাফিজুর। এছাড়াও তিনি হৃদয়ের আরেক সহযোগী জুম্মনকে এ চুরির সাথে না জড়াতে বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি দেখোচ্ছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বন্দরে নবীগঞ্জ এলাকায় এসএ হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াকশপে মালিক হাফিজুর ও ম্যানেজার শামীমের ছত্র ছায়ায় আটকৃত চোরের দল জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রলার চুরি করে উক্ত ওর্য়াকশপে এনে কেটে ভাঙ্গারী করে অন্যত্র স্থানে বিক্রি করে আসছে। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে নবীগঞ্জ ইসলামবাগ এলাকার আসলাম মিয়ার ছেলে হৃদয়।
এদিকে স্থানীয়দের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশের অভিযানের সংবাদ পেয়ে ওর্য়াকশপ মালিক হাফিজুর ও ম্যানেজার শামীম মিয়া কৌশলে পালিয়ে যায়। হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াকশপে এ ধরণের চোরাই মাল বেঁচাকেনা করে অবৈধ ব্যবসা চালাবে তা আমরা মেনে নিবনা। আর কিভাবেই বা পুলিশ ওর্য়াকশপের সামনে থেকে ট্রলারটি উদ্ধার করলেও এ প্রতিষ্ঠানের মালিক বা ম্যানেজার কাউকে আটক তো দূরে থাকুক, জিজ্ঞাসাবাদও করলো না। যার জিনিসি সে না খুঁজে বের করে পুলিশকে না জানালে হয়তো এটা আর উদ্ধার হত কিনা সন্দেহ হয়। এরআগেও এখান থেকে একজনকে ডিবি-পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এসব ঘটনার সাথে মালিকের সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানা দরকার।
এ ব্যাপারে ওর্য়াকশপ মালিক হাফিজুর মুঠোফোনে জানায়, আমার কাজ ছিল তাই চলে গেছি। অনেক ট্রলারই আসে। কিভাবে কিছু জানিনা। বিষয়টি আমি দেখব।
ঘটনার বিবরণে ভুক্তভোগীদের কাছে জানা যায়, সুদূর চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলব থানার চর ওয়েষ্টার এলাকার হালেম ওরফে মহিম কাজী ছেলে দিনমজুর কাজল কাজী মায়ের দোয়া পরিবহন নামে ৬১ ফুট লম্বা একটি লোহার বডি ট্রলার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। যার মূল্য প্রায় তিন লক্ষ্য টাকা। প্রতিদিনের ন্যায় ট্রলার মাঝি কাজল কাজী গত ৬ অক্টোবর রবিবার ট্রলার চালিয়ে বিকালে ট্রলার বন্ধ করে বাড়িতে চলে যায়। ওই সুযোগে ওই রাতে চোরের দল কৌশলে ট্রলারটি চুরি করে ভাঙ্গারী হিসেবে বিক্রির উদ্দেশ্যে বন্দরে নবীগঞ্জস্থ এসএ হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াকশপে নিয়ে আসে। ট্রলার চুরি পর ট্রলার চালক কাজল কাজী ছেলে স্বাধীন ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে চুরিকৃত ট্রলার খোঁজার জন্য বন্দরে নবীগঞ্জে আসে। ওই সময় চোরের দল ট্রলারটি উল্লেখিত ওর্য়াকশপে নিয়ে গ্যাস ওয়েলডিং দিয়ে কাটার সময় ট্রলার মাঝির ছেলে স্বাধীনের নজরে পড়ে। এরপর স্বাধীন তার পরিবারসহ বন্দর থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে বন্দর ফাঁড়ি ইনর্চাজ মোস্তাফিজুর রহমানসহ সঙ্গীয় র্ফোস ঘটনাস্থলে এসে চোরাই ট্রলারটি উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে বন্দর ফাঁড়ি ইনর্চাজ মোস্তাফিজুর জানান, চোরাই ট্রলার রয়েছে এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে আমরা একটি ওর্য়াকশপে অভিযান চালিয়ে চোরাই ট্রলার উদ্ধার করি। সে সাথে ওর্য়াকশপের সিসি ক্যামারা দেখে ৩ চোরকে সনাক্ত করে তাদেরকে আটক করতে সক্ষম হই। অভিযানের সংবাদ পেয়ে ওয়ার্কশপ মালিক ও ম্যানেজার উভয় পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে ট্রলার মালিক বাদী হয়ে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানা ওসি জানায়, চাঁদুপরে হয়তো মামলা হচ্ছে। তিন জন আটক আছে। আমি এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করিনি, এখনই জানবো।