নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১ তম জন্মদিন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমানের কেক কাটা অনুষ্ঠানে হৈ-চৈ ও হট্টগোল হয়েছে। ৫০০ পাউন্ডের কেক নিয়ে রীতিমত কাড়াকাড়ি হয়। এ সময় কয়েক মুহুর্ত নির্বাক তাকিয়ে থাকেন সেই দৃশ্যের দিকে। পরে তিনি নিজেই রাগান্বিতভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। ১৭ই মার্চ বুধবার সন্ধ্যায় বন্দর উপজেলার চিতাশাল এলাকার সমরক্ষেত্রে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এমন ঘটনায় উপস্থিত লোকজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে ।
দেখা গেছে, হঠাৎ করেই একপাশ থেকে কেক খাদকের দল মঞ্চে উঠে পড়ে। একপর্যা্য়ে একের পর এক বিচ্ছিন্নভাবে কেক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় হট্টগোল করলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তবে কিছুক্ষণ পর পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যায় এমপি সেলিম ওসমান সহ অতিথি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ। উপস্থিত অনেকেই আবার হাস্যরস করে মন্তব্যে বলেন, কেক খাদকরা আজ হামলা চালিয়েছে।
এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ৫০০ পাউন্ডের বিশালাকার কেক আনা হয়। সাংসদ একেএম সেলিম ওসমানের উদ্যোগে উপজেলার সমরক্ষেত্রে বিশাল এই কেক কেটে জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় ছিল বন্দর উপজেলা প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল দুপুর ৩টার দিকে। তবে সাংসদ সেলিম ওসমানের উপস্থিত হতে দেরি হওয়ায় অনুষ্ঠানে বিলম্ব হয়। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান সাংসদ। তিনি অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। মঞ্চের উপর টেবিলে সাজানো হয়েছিল ৫০০ পাউন্ডের কেক। সেলিম ওসমানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশীদ দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন। এরপর শুরু হয় কেক কাটা পর্ব।
এ সময় মঞ্চে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা সুলতানা নাসরিন, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাত জাহান স্মৃতিসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাথে শিশুরাও উপস্থিত ছিল মঞ্চে। কেক কাটার এক পর্যায়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। শিশুরা কেক খাবলে নিতে থাকে। এ সময় শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও কেটের উপর হামলে পড়ে। কেক নিয়ে শুরু হয় খাবলা খাবলি। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে নির্বাক কয়েক মুহুর্ত তাকিয়ে থাকেন সেলিম ওসমান নিজেও। কেক নিয়ে হুড়োহুড়িতে উপস্থিত অতিথিদের পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। থানার ওসি দীপক সাহাকে তাঁর পোশাক পরিষ্কার করতেও দেখা যায়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক হলে উত্তেজিত হয়ে উঠেন সাংসদ সেলিম ওসমান। রাগান্বিত হয়ে তাকে এমন অব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়।
হঠাৎ এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় দ্রুত মাইক আনতে বলেন সাংসদ সেলিম ওসমান। পরে মাইক হাতে তিনি বলেন, আমাদের ভলেন্টিয়ার, দু:খের সাথে জানাচ্ছি, আমি বারবার বলার পরও কিছু বহিরাগত ছেলে-পেলে মঞ্চে উঠে এসেছে। এখন মঞ্চে কেউ থাকবে না। বার বার বলতেছি। জনপ্রতিনিধি ছাড়া মঞ্চে কেউ থাকতে পারবে না। ইতিমধ্যে কেক নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হইছে। যারা এই কাজ করছে তারা আমাদের লোক না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ছোট বাচ্চারা কেক হাতে নিয়ে খেয়েছে। তেমন কিছু না। বাচ্চারা তো কেক খাবেই। কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাক ছিল।