নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : প্রথমার্ধে গড়পড়তা খেলার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দারুণ এক গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু গোল উদযাপনের রেশ না কাটতেই মারাত্মক ফাউল করে লাল কার্ড দেখে দলকে বিপদে ফেলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ম্যাচের অর্ধেকটা সময় ১০ জন নিয়ে খেলেও ওই গোল ধরে রাখতে পেরেছে তিতের শিষ্যরা।
কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে চিলিকে ১-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে স্বাগতিক ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে লুকাস পাকুয়েতার গোলে জয় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের। এদিকে ৪৮ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল হেসুস লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকে বের হয়ে গেলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিল। তবুও, আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি চিলি।
গ্রুপ পর্বে যেমনই খেলুক, কোয়ার্টার ফাইনালে সত্যিই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে চিলি। স্বাগতিক ব্রাজিলের মুহূর্মুহু আক্রমণ ঠেকিয়ে দিয়ে প্রথমার্ধ গোলশূন্য রেখেছে ম্যাচ। নিজেরাও দুই-একবার চেষ্টায় কোনো গোল করতে পারেনি। যার ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ড্র দিয়ে।
ব্রাজিল গ্রুপের চার ম্যাচের ৩টিতে জয় ও ১টিতে ড্র করে কোয়ার্টারে উঠেছে। অন্যদিকে চিলি ৪ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ১টিতে, ২টি ড্র করেছে ও ১টি হেরেছে।
আবার সব ধরণের টুর্নামেন্ট মিলিয়ে শেষ ১৬ বারের সম্মুখ সমরে চিলি মাত্র ১ বার ব্রাজিলকে হারাতে পেরেছে। ব্রাজিল জিতেছে ১৩টি ম্যাচ। ২টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। শেষবার ২০০৭ কোপার কোয়ার্টার ফাইনালে চিলিকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ব্রাজিল।
খেলায় ব্রাজিলের পায়েই বল ছিল বেশি। তবে, চিলির ছিল অসাধারণ ম্যান মার্কিং। যে কারণে দেখা গেছে, ব্রাজিল বল নিয়ে এগুতে গেলেই বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছে। এমনকি চিলির ডি বক্সে আধিপত্য বিস্তার করার সুযোগই মেলেনি নেইমারদের। বক্সের সামনে বল নিয়ে গেলেও শট করার সুযোগ মেলেনি স্বাগতিকদের।
ম্যাচের ১০ম মিনিটেই গোলের চেষ্টা চিলির। ম্যাচে প্রথমবার যথাযথ আক্রমণে ওঠে চিলি। যদিও ভার্গাসের শট প্রতিহত করে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসন।
১৫ মিনিটের মাথায় সিয়েরালতা বল বাড়িয়ে দেন ইসলার দিকে। রিচার্লিসন বল ধরে প্রতিআক্রমণে উঠে আসেন। লেফট উইং থেকে দূরপাল্লার শট নেন তিনি। যদিও বল সরাসরি চলে যায় চিলির গোলরক্ষক ব্র্যাভোর দস্তানায়।
২২ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত সুযোগ মিস করেন ফিরমিনো। নেইমারের দারুণ একটি ক্রস করেন। কিন্তু সেখান থেকে বল ধরার চেষ্টা করেও নাগাল পাননি ফিরমিনো।
২৭ মিনিটের মাথায় ভার্গাসের শট প্রতিহত করেন ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসন। ৩২ মিনিটের মাথায় চিলির রক্ষণের ভুলে আক্রমণের সুযোগ পেয়ে যান দানিলো। বক্সের সামনে থেকে গোলে শট নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। বল ক্রসবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।
৩৪ মিনিটে দূর পাল্লার শটে গোল করার চেষ্টা করেন পালহার। যদিও তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৪০ মিনিটের মাথায় ইসলার সঙ্গে সামান্য ধাক্কাতেই চিলির বক্সের মধ্যে লুটিয়ে পড়েন রিচার্লিসন। তিনি রেফারির কাছে পেনাল্টির আবেদন জানান। যদিও রেফারি তার এই আবেদনে বিশেষ প্রভাবিত হননি। ৪৩ মিনিটে হেসুসের দুর্দান্ত শট পাঞ্চ করে প্রতিহত করেন ব্র্যাভো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফিরমিনোকে তুলে নেন ব্রাজিল কোচ তিতে। ফিরমিনোর পরিবর্তে মাঠে নামান লুকাস পাকুয়েতাকে। চিলির তারকা স্যাঞ্চেজকে তুলে নিয়ে মাঠে নামানো হয় বেন ব্রেরেটনকে।
পাকুয়েতাকে নামিয়েই সাফল্য পেলো ব্রাজিল। মাঠে নামার পরই গোল উপহার দেন তিনি। খুললেন চিলির গোলমুখের তালা। ৪৬ মিনিটের সময় নেইমারের ব্যাকহিল পাস থেকে বল পেয়েই দারুণ এক শটে চিলির জালে বল জড়িয়ে দেন পাকুয়েতা।
গোলের দুই মিনিট পরই সরাসরি লাল কার্ড দেখেন গ্যাব্রিয়েল হেসুস। ইউজেনিও মেনার মুখে লাথি দেয়ার অপরাধে হেসুসকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন রেফারি। ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিল।
৬২ মিনিটে গোল দিয়ে বসেছিল চিলি। সমতায় ফেরার কথা তাদের এই গোলে। কিন্তু নেটে বল প্রবেশ করার আগেই ফ্র্যাগ তুলে ধরেন লাইন্সম্যন। ফ্রি কিক থেকে আসা বল বক্সের মধ্যে পেয়ে ব্রাজিলের জালে বল জড়িয়ে দিয়েছিলেন এডুয়ার্ডো ভার্গাস, কিন্তু অফসাইডের কারণে আর গোল হলো না।
৬৭ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক ছুটে বল নিয়ে আসেন নেইমার। কিন্তু তার শট ঠেকিয়ে দেন চিলি গোলরক্ষক ক্লদিও ব্র্যাভো। ৬৯ মিনিটে আরেকটি দারুণ গোলের সুযোগ মিস হয় চিলির। ইউজেনি মেনা দারুণ একটি বল তুলে দেন ব্রাজিলের বক্সের মধ্যে। কিন্তু ব্রেরেটন হেড নিলে গোলরক্ষক এডারসনকে ফাঁকি দিয়ে সেটি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ৭৮ মিনিটে এডুয়ার্ডো ভার্গাসের দুর্দান্ত একটি শট ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসন।