নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় গৃহবধু জোসনা বেগম মৃত্যুর ঘটনায় হত্যার অভিযোগ এনে নিহতের বড় ভাই আব্দুল মতিন (৫৮) বাদী হয়ে নিহতের স্বামী ও তার প্রেমিকা কে অভিযুক্ত করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। ১৯ই জুন শনিবার রাতে নিহতের ভাই বাদী হয়ে বোন জামাই ইলিয়াস (৫০) ও তার প্রেমিকা রানি বেগম (৩৫) কে আসমাী করে এ হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে পুলিশ শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ফতুল্লা থানার ধর্মগঞ্জ চতলামাঠেস্থ তার স্বামীর বাড়ী থেকে পুলিশ মৃতদেহ উদ্বার করে এবং নিহত জোসনার স্বামী ইলিয়াস কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত জোসনা ফতুল্লা মডেল থানার বক্তাবলীর মৃত হাজী হাফিজ উদ্দিন হাবিবের মেয়ে।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয় যে, গত ২৪ থেকে ২৫ বছর পূর্বে পারিবারিক সম্মতিক্রমে ধর্মগঞ্জ চতলার মাঠস্থ দর্জি বাড়ীর তাইজুদ্দিন দর্জির পুত্র ইলিয়াস দর্জির সাথে বাদীর বোনের বিয়ে হয়ে। তাদের সংসারে বন্যা (২৩) ও হাফসা (৭) বছর বয়সী দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে বন্যার বিয়ের পর ছোট মেয়ে হাফসা কে নিয়ে নিহত জোসনা চতলার মাঠস্থ স্বামীর বাসায় বসবাস করতো। ২/৩ বছর পূর্বে মামলার দ্বিতীয় আসামী রানি বেগম তার বোনের বাসায় ভাড়ায় আসে। এক পর্যায়ে বোন জামাই ইলিয়াস ও ভাড়াটিয়া রানি পরকিয়ায় জড়িয়ে পরে। বিষয়টি জানাজানি হলে রানি কে ঐ বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়। রানি একই এলাকায় পার্শ্ববর্তী আমিরের ভাড়া বাসায় চলে গেলেও তার বোন জামাই ইলিয়াসের সাথে পরকিয়ার সম্পর্কটা থেকেই যায়। এ নিয়ে প্রায় সময় তার বোনের সাথে স্বামী ইলিয়াসের ঝগড়া হতো। শুধু কথাকাটাকাটির সীমাবদ্ধ থাকতোনা তার বোনের স্বামী প্রায় সময় তার বোন জোসনা কে শারিরীক নির্যাতন করতো। এ নিয়ে পারিবারিক ও স্থানীয় ভাবে একাধিক বার শালিস বৈঠক ও হয়েছিলো। কিন্তু তারপরেও পরকিয়া সম্পর্ক বজায় রেখেছিলো। প্রতিবাদ করলে তার বোনকে প্রতিনিয়ত মারধর করতো। গত ১৮ই জুন শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাতের খাওয়া শেষ করে বাসার সকলে ঘুমাইতে গেলে বোন জামাই ইলিয়াস বাসার বাইরে যেতে চাইলে বাদীর বোন বাধা প্রদান করে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যো কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাদীর বোন জোসনা ঘুমিয়ে পরলে রাত ১২ টা থেকে ২ টার মধ্যের কোন এক সময়ে বোন জামাই ইলিয়াস ও তার প্রেমিকা রানি পরস্পর যোগসাজসে বাদীর বোন জোসনা কে শ্বাসরোধ করিয়া বা অন্য কোন উপায়ে হত্যা করে। হত্যা করার ঘটনাটি গোপন করার জন্য শনিবার সকাল ৯ টার দিকে জোসনা মারা গেছে এ সংবাদটি তার বোন জামাই তাদের ভাড়াটিয়া কে দিয়ে বাদীর পরিবারের সদস্যদের অবগত করে। পরে তারা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তার বোনের মৃতদেহ দেখতে পায়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ইনচার্জ রকিবুজ্জামান জানান, জোসনা বেগমের ভাইয়ের লিখিত অভিযোগটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান আসামী ইলিয়াস কে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান।