নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মুক্তিপণের জন্য এক যুবককে হত্যা করার ঘটনায় পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত ২৪ জানুয়ারি রাতে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করা হয়। পরে, ২৮ জানুয়ারি ভুক্তভোগীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান-এর নেতৃত্বে এসআই মো. রফিকুল ইসলাম, এসআই ওয়াসিম খানসহ একটি বিশেষ দল ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো: পটুয়াখালী জেলার সদর থানার হাজীখালা এলাকার বাসিন্দা মো. ছগির, মো. ছগিরের স্ত্রী রেহেনা, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার দানেহপুর এলাকার বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক, নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার চর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আরিফ ও পটুয়াখালী জেলার সদর থানার হাজীখালা এলাকার বাসিন্দা নুর জামান। হত্যার শিকার যুবক হাবিবুর রহমান (২১) নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বাসিন্দা। গত ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাবিবের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে তার বাবা
মো. আজিজুল হকের (৪৮) কাছে একটি ফোন আসে। ফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায়, হাবিবকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে এবং তাকে মুক্তি দিতে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে, না হলে তাকে মেরে ফেলা হবে।
হাবিবের বাবা জানান, তিনি পেশায় ভ্যানচালক এবং এত টাকা দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি ছেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অপহরণকারীরা ফোন কেটে দেয়। রাত ১২টার দিকে আবারও ফোন করে টাকা দাবি করা হয় এবং এরপর থেকে হাবিবের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চারদিন পর, ২৮ জানুয়ারি ফতুল্লার আমতলা হরিহরপাড়া এলাকার স্বপন সরকার (৪০)-এর বাড়ির নিচতলার দক্ষিণ পাশের ফ্ল্যাট থেকে হাবিবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের তদন্তে জানা যায়, অপহরণকারীরা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য হাবিবকে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে আটকে রাখে। পরে মুক্তিপণের জন্য চাপ দিলে হাবিব চিৎকার করতে থাকলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পর ২৯ জানুয়ারি তারিখে ফতুল্লা থানায় মামলা রুজু করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত রেহেনা জানান, তারা হাবিবকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁদে ফেলে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে আটকে রাখেন এবং পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। যখন হাবিব চিৎকার করতে থাকে, তখন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।