নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার অন্যতম কৌশলী অপহরণকারী দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এছাড়াও ভুক্তভোগী স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৮দিন অপহৃত থাকা মো. রাসেলকে উদ্ধার করেছে তাঁরা। শুক্রবার (১৯ জুন) বিকালে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন হাউজিং এলাকায় এ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
এসময় গ্রেফতার করা হয়, সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ০২ জন সক্রিয় সদস্য ১। মো. আল আমিন (২৪) ও ২। ইরা ইসলাম (২২)। এরা উভয়ই স্বামী-স্ত্রী। শনিবার (২০ জুন) বিকালে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক, লেফট্যানেন্ট কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার, পিবিজিএম, পিবিজিএমএস স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. রাসেলকে অপহরণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদানসহ অন্যান্য আরও অপরাধের লোমহর্ষক বর্ননা দিয়েছে। আসামীরা পরষ্পর স্বামী-স্ত্রী। তাদের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দীপ থানাধীন সাতঘরিয়া এলাকায়। আসামীরা আরো স্বীকার করে যে, তারা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য, দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এই ধরণের অপহরণ কার্যক্রম করে আসছে। অপহরণ করার ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে থাকে, তার মধ্যে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করা তাদের অন্যতম কেশৈল।
র্যাব আরো জানায়, গত ১১ জুন মো. রাসেল(২৮) চিটাগাং রোডে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর ধেকৈ রাসেল বাড়িতে আর না ফেরায় তার মা অনেক খোঁজাখুজি করেন। পরবর্তীতে ১২ জুন অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি ফোন করে বলে যে আপনার ছেলে আমাদের কাছে আটক আছে। তারা রাসেলকে জিম্মি করে হত্যার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে। উল্লেখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পায়।
রাসেল অপহরণ বিষয়ে তারা জানায় যে, আসামীরা গত ১১ জুন নারায়ণগঞ্জে চিটাগাং রোড থেকে রাসেলকে অপহরণের উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে চেতনা নাশক ঔষধ প্রয়োগ করে অচেতন করে তাদের ভাড়া করা একটি ফ্লাট বাসায় নিয়ে যায়। ওই বাসায় একটি গোপন কক্ষের ভিতর হাত-পা ও চোখ বেঁধে রাসেলকে মারধর করাসহ বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে এবং মুক্তিপণের ২ লক্ষ টাকার জন্য রাসেলের পরিবারের কাছে ফোন করে। তাছাড়া এ বিষয়ে রাসেলের পরিবার ও কাউকে কিছু না বলার জন্য রাসেল হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা রাসেলের মুখের ভিতর কাপড় ঢুকিয়ে দেয় এবং গামছা দিয়ে চোখ, মুখ, হাত-পা বেধে লাঠি ও কাঠের তৈরি বাঁশ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সুই দিয়ে খোঁচায়। রাসেলের পরিবার কোনো উপায় না পেয়ে রাসেল জীবন বাঁচাতে ১৫ জুন রাতে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা তাদের কাছে পাঠায় এবং বাকী টাকা নগদে পরিশোধ করবে বলে জানায়। কিন্তু র্যাব-১১ এর অভিযানিক দলএ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অহরণকারী চক্রের ০২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে। আসামীদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।